কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বারতা মেলে ধরে শীতের শেষ মাস মাঘ শুরু হলো আজ। মাঘ শুধু শীতে কাহিল করে না। নিয়ে আসে বাঙালির কয়েকটি উৎসব। বহু আগে কবি পি বি শেলী লিখেছেন ‘ইফ উইন্টার কামস ক্যান স্প্রিং বি ফার বিহাইন্ড (শীতের আগমনে বসন্ত কি খুব দূরে)’। ব্রিটিশ কবি এডিথ সিটওয়ে লিখেছেন- শীত হলো স্বাচ্ছন্দ্য ও ভাল খাবারের সময়। বাঙালির জীবনে শীতের যে কত বাহারি পিঠা। দ্রুত ঘরে ফিরে উষ্ণতায় ডুব দিয়ে গল্প করার সময়।
মাঘে ভোরের লাল সূর্য দেখতে অনেকটা বড় মনে হয়। এটা দৃষ্টিভ্রম। বিজ্ঞান বলছে মাঘে কুয়াশা শিশিরের বিদায় পর্ব। পাতাঝরার দিন শুরু হয়ে বৃক্ষরাজি কিশলয়ে সাজতে থাকে। দ্রাঘিমাঙ্কিত মহাকাশে ঘূর্ণনের পালায় পৃথিবী চন্দ্র ও সূর্যের কাছে আসতে পারে। মাঘের সূর্যালোক অনেক ধর্মাবলম্বীর কাছে বিশেষ পবিত্রতা বয়ে আনে। যেমন এই সূর্যালোক হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য নিয়ে আসে সূর্যব্রত। অবিবাহিত নারী মনের মতো বর পেতে সূর্যব্রত পালন করে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অনেকে সূর্যব্রতকে ঘিরে অনুষ্ঠানাদি করে। মাঘ নামটিও এসেছে মঘা নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান ‘মাঘা’ থেকে।
শুক্লা পঞ্চমীর তিথি নিয়ে আসে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী। পালিত হয় সরস্বতী পূজা। এবারের সরস্বতী পূজার দিন ধার্য হয়েছে ১৫ ও ১৬ মাঘ। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উদযাপিত হয় সরস্বতী পূজা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ঘরে মহোৎসব হয়ে আসে মাঘী পূর্ণিমা। ভরা চাঁদের মায়াবি আলোর নিসর্গ কখনও কোজাগরি পূর্ণিমার রূপ এনে দেয়। খনা বচন দিয়েছে যদি বর্ষে মাঘের শেষ ধন্যি রাজার পুণ্যি দেশ।
তবু মাঘ মাসের বড় আক্ষেপ- এই মাসে বানানো পিঠাপুলি পৌষের পরিচিতি বহন করে। কেউ বলে না মাঘের পিঠা। এমনকি ফাল্গুন মাসে বানানো পিঠাও পৌষের মলাট পেয়ে বসে। পৌষের পিঠার এই সুর বয়ে বেড়াতে হয় মাঘ ফাল্গুনকে। এর মধ্যেই মাঘের আনন্দ- ফলের রাজা আমের মুকুল এনে দেয়।