২০১৯ সালের বিদায়ী বছরে সিলেটে ৩৪ জন খুন ॥ ওসমানীনগরে স্ত্রীকে টুকরো টুকরো করে হত্যার ঘটনাটি ছিল চাঞ্চল্যকর

18

সিন্টু রঞ্জন চন্দ :
২০১৯ সালের বিদায়ী বছরে সিলেটে ৩৪ জন খুন হয়েছেন। হত্যাকান্ডের ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাওয়ায় সেটা আর জনসম্মুখে আসেনি। তবে ঘটনার শিকারের পরিবার বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারনে সঠিক সময়ে বিচার না পাওয়া, মামলার তারিখের পর তারিখ পড়া এবং মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে হয়রানীর শিকার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে খুনিরা আইনের মারপেঁচে সাজা থেকে বের হয়ে আসেন। ফলে মামলার বাদি বিবাদীরা স্থানীয়ভাবে আপোষের কারণে অনেক সময় খুনের ঘটনায় বিচারে আসামীদের সাজা হয়েছে কিনা সেটার খবরও অনেক সময় পাওয়া যায় না।
ভোক্তভোগিদের দাবী, যদি খুনের ঘটনার ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা যেতো তাহলে কষ্ট থেকে অনেকটা রেহায় পেতো ঘটনার শিকার হওয়া পরিবার।
৩৪টি খুনের মধ্যে সিলেটের ওসমানীনগরের স্ত্রীকে টুকরো টুকরো করে হত্যার ঘটনাটি অতীতের চেয়ে অনেকটা চাঞ্চল্যকর।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওসমানীনগরে গত ২ ডিসেম্বর রাতে অজ্ঞাত তরুণী (২০) এর মাথাকাটা দেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। ওই তরুণীর নাম সন্ধ্যা ওরফে শাহনাজ। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ওই তরুণী ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন বিবাহিত। স্বামী মোজাম্মেল মিয়া ওরফে মুজাম্মিলের হাতে ‘পরকীয়ার কারণে’ খুন হন শাহনাজ। ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করেন মোজাম্মেল। পরে মৃতদেহটি বুতা লোহার পাত দিয়ে গলা, নাক, কান কেটে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয় ঘাতক মোজাম্মেল। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে ওসমানীনগর উপজেলার বুরুঙ্গা এলাকা থেকে মোজাম্মেল মিয়া ওরফে মুজাম্মিলকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই তরুণীকে নিজের স্ত্রী এবং তাকে নির্দয়ভাবে খুন করার বিষয়টি স্বীকার করেন। আটক মোজাম্মেল মিয়া ওসমানীনগর উপজেলার দক্ষিণ কলারাই (গোয়ালাবাজার) গ্রামের মৃত জিলু মিয়ার পুত্র। তিনি এ ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।
গত ১৫ নভেম্বর বিশ্বনাথে পুকুর থেকে এক অজ্ঞাতনামা ২৫/২৬ বছরের নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওইদিন দুপুরে উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের আব্দুল গফুরের বাড়ির পুকুর থেকে এই লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অজ্ঞাতনামা ওই নারীকে খুন করে দুবৃর্ত্তরা পুকুরে ফেলে দেয়।
গত ৩ অক্টোবর জাফলংয়ে সাগর বিশ্বাস নামে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওইদিন বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের গ্রীণপার্কের সম্মুখের একটি নালা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নিহত সাগর বিশ্বাস নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের শান্ত দাশের পুত্র। সে তার বাবা-মায়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জাফলং মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করে আসছিল। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সজিব নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় সাগরের বন্ধু সজিব তাকে কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। বুধবার সকালে স্থানীয়রা মহাসড়কের পাশে নালার মাঝে সাগরের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে থানার এস.আই যীশু দত্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আহাদ মরদেহ উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কাশিম আলী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাসে বেঞ্চে বসা নিয়ে সহপাঠীর ঘুষিতে মাজেদ ইসলাম (১৪) নামে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে উপজেলার এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাজেদ ইসলাম ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের আলতা মিয়ার পুত্র। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একই ক্লাসের ছাত্র সাইফুর রহমান সায়েমকে (১৩) আটক করেছে পুলিশ। ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওসমানীনগরে উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউপির নিজ করনসী এলাকায় মোকামে তাজিয়া (তাবু) নিয়ে যাবার সময় কথা কাটাকাটির জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় একজন আব্দুল খালিক (৪৫) নামের একজন খুন হন। তিনি উপজেলার নিজ করনসী (দক্ষিণপাড়া) গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার পুত্র।
গত ১১ আগষ্ট সকালে গোলাপগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় এমাদ উদ্দিন (২৫) নামের এক যুবক খুন হয়েছেন। নিহত এমাদ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের দড়া পূর্বপাড়া গ্রামের সোনাফর আলীর পুত্র। জানা যায়, গত ১১ আগষ্ট সকালে নিহত এমাদ উদ্দিনের সঙ্গে তার প্রতিবেশী মৃত শওকত আলীর পুত্র রাবেল আহমদ ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে ঢিল ছোঁড়াকে কেন্দ্র করে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়লে এমাদ উদ্দিন (২৫) ও তার প্রতিবেশী রাবেল আহমদ (২৪) গুরুতর আহত হয়। এলাকাবাসী মারাত্মকভাবে আহত অবস্থায় তাদের দুজনকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গত ১৫ আগষ্ট বিকেল বুধবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এমাদ উদ্দিনের মৃত্যু হয়। গত ১৬ আগষ্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর বালুচর হতে এক অটোরিক্সা চালকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার পনের বছর বয়সী চালক নাঈমের লাশ উদ্ধার করে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ দু’জনকে আটক এবং কুমারপাড়া হতে অটোরিক্সা উদ্ধার করেছে। ময়না তদন্তের জন্য নাঈমের মরদেহ এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। একাধিক সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গত ১৫ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রোজগারের উদ্দেশ্যে অটোরিক্সা নিয়ে বের হয় নাঈম (১৫)। কিন্তু মধ্যরাত পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় নিখোঁজ নাঈমের পিতা আব্বাস উদ্দিন বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির সূত্র ধরে পুলিশ নাঈমের দু’বন্ধুকে আটক করে। এরপর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত রুবেল ও পারভেজ শ্বাসরোধ করে নাঈমকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের কথামতো বালুচরের লালটিলা হতে নাঈমের বস্তাবন্দি লাশ এবং শাহী ঈদগাহের কুমারপাড়া হতে পরিত্যক্ত অবস্থায় তার ব্যবহৃত অটোরিক্সা পুলিশ উদ্ধার করেছে। নিহত আব্বাস উদ্দিনের পুত্র নাঈম পরিবারের সদস্যদের সাথে বালুচর এলাকার টুনামিয়ার কলোনিতে বসবাস করতো। তার বাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ার বাজার ইউনিয়নের পালকোণা গ্রামে।
গত ২৩ জুলাই গভীর রাতে গোলাপগঞ্জ উপজেলায় সন্তান চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৬০ বছরের বৃদ্ধ সুন্দর খা তার ৫০ বছরের স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ ঘটনায় তার পুত্র তারেক আহমদ বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় পিতা সুন্দর খাকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ খবর পেয়ে বুধবার নিহত, মিনারা বেগমের লাশ উদ্ধার করে এবং সুন্দর খার কথা বার্তার সন্দেহ হলে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ গত ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার গোলাপগঞ্জ পৌরসভার রনকেলী নুরু পাড়া গ্রামের সুন্দর খাকে আদালতে হাজির করলে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তিনি খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাকে কারাগারে নিয়ে যার। এদিকে একই উপজেলার লক্ষনাবন্দ ইউনিয়নের ফুলসাইন্দ গ্রামের শাহীন মিয়ার স্ত্রী নাছিমা বেগম (২০) ২৩ জুলাই গলায় ফাঁস লাগিয়ে স্বামীর বাড়ীতে আত্মহত্যা করেন। মাত্র ৪ মাস আগে বিয়ে হওয়া নাসিমা বেগমের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ সুরমায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহপাটির হামলায় গত ২৪ জুলাই বুধবার সিলেট কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থী তানভির হোসেন তুহিন (১৯) নামের এক যুবক খুন হয়। সে গোলাপগঞ্জের দক্ষিণ ভাগ পলিকাপন গ্রামের মানিক মিয়ার পুত্র। এ ঘটনায় কদমতলীর আব্দুল আলিমের পুত্র আবু কদরত তারেক (২০) কে আটক করে পুলিশ। জুতা হারানোকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড ঘটছে। নিহতের চাচা বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধ মামলা দায়ের করেন। এক আসামী আদালতে স্বীকারোক্তমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এদিকে ছাতকের সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এলাকায় গত ২৩ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডেকে নিয়ে মেহেদী হাসান রাব্বীকে (২০) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। রাব্বী ছাতক পৌর শহরের নোয়ারাই এলাকার প্রবাসী আলমগীর হোসেনের পুত্র। গোয়াইনঘাটে গত ১৮ জুলাই প্রেমিকার পরকীয়ার বলি হন প্রেমিক নির্মল বিশ্বাস। ঘটনার পরদিন পুলিশ তথ্য উদঘাটনে নেমে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে কনিকা বিশ্বাস খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকার করেন। পুলিশ নির্মল বিশ্বাসের ব্যবহৃত টিভিএস ব্রান্ডের মোটর সাইকেলটি গোলাপগঞ্জ থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
শহরতলীর কুমারগাওয়ে ৫ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে এস.এম.পির জালালাবাদ থানার ফতেহপুর গ্রামের জিয়াউল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী সালমা বেগম (২৮), তার সৎ মেয়ে মাহা (৫) কে সুরমা নদীর ব্রীজের উপর থেকে নদীতে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। পরদিন ৬ জুলাই মাহার লাশ সুরমা নদীতে লামাকাজী এলাকায় ভেসে উঠলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জিয়াউল হক বাদী হয়ে স্ত্রী সালমাকে আসামী করে কন্যা হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের কনের। ঘটনার সময় জনতা সালমা বেগমকে আট করে পুলিশ দেয়। সালমা ও সন্তানের জননী। পরে স্বামীর দায়ের করা মামলার ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে সালমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাকে কারাগারে নিয়ে যায়। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার টিকাবহর গ্রামের পুনয় দে (৪০) এর লাশ গত ২৬ জুলাই দুপুরে উদ্ধার করে পুলিশ। সে সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ইনামপুর গ্রামের বাসিন্দা পরেশ দের পুত্র।
১২ জুন বুধবার মধ্যরাতে নগরীর বনকলা পাড়ায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুদু মিয়া (৩৮) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। নিহত দুদু মিয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী বলে জানা যায়। তিনি বনকলা পাড়া এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্র জানায়, দুদু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বনকলাপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। ঘটনার সময় দেশীয় অস্ত্র হাতে সঙ্গীয় ৪-৫ জনসহ সাদিয়া টেলিকম নামক একটি দোকানে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় জনতা মাইকে ডাকাত এসেছে ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করলে তাদের ঘেরাও করে গণপিটুনি দেয়। এসময় অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ঘটনাস্থলে মারা যান দুদু মিয়া। খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। পুলিশ বলেছে, নিহত দুদু মিয়ার বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও কয়েকটি ডাকাতি মামলার আসামি।
গত ২৬ জুন বুধবার মধ্যরাতে সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়নের আখালিঘাট এলাকায় ফরিদা পারভীন (২৪) নামে গৃবধূকে পিটিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার করা হয়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী রুবেল আহমদকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
৩০ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বিআইডিসি খন্দকার মার্কেটের সামনে কথা কাটাকাটির জের ধরে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে আব্দুল হাফিজ জামাল (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত জামাল আহমদ স্থানীয় বহর কলোনির বাসিন্দা। তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম তারা মিয়া।
১৯ মে সোমবার সন্ধ্যায় গোয়াইনঘাটে উপজেলার তোয়াকুল ইউনিয়নের লাকী গ্রামে জলমহালে মাছ বিক্রির টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে হয়েছে। এতে আব্দুর রহিম (৩১) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। নিহত রহিম ওই গ্রামের মৃত ওয়াহিদ আলীর পুত্র।
ওসমানীনগর থানার কাঁজিরগাও গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে অজ্ঞাত (৩০) এক যুবকের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১ মে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে মরদেহটি উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানান, লামাপাড়া কাজিরগাঁও গ্রামের এক পরিত্যক্ত বাড়িতে ওই যুবকে কে বা কারা খুন করে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। ঘটনার পর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।
২২ এপ্রিল সোমবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে নগরীর শেখঘাট কলাপাড়ায় হাজী ফজলুল হকের বাসায় প্রেম করে বিয়ের এক মাসের মাথায় খুন হলেন রাজনা চৌধুরী (২১) নামে এক গৃহবধূ। মোবাইলে কথা কাটাকাটির জের ধরে স্বামীই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। নিহত রাজনা চৌধুরী ও লক্ষণ দম্পতি কলাপাড়ার হাজি ফজলুল হকের বাসায় ভাড়া থাকতেন। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী পলাতক রয়েছেন। নিহত রাজনা চৌধুরীর বাড়ি নেত্রকোণা জেলার মদন থানার কদমশ্রী গ্রামে। তার স্বামী লক্ষণের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের গাড়ি চালক।
১ এপ্রিল সোমবার ভোরে বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়াবাজারের চাম্পার কান্দি গ্রামের সুরমান আলীর বাড়িতে সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দেয়। ডাকাতদের প্রতিহত করতে গেলে গুলিতে প্রাণ হারান ছাত্রলীগ শাহাব। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ও সুরমান আলীসহ পরিবারের আট সদস্য আহত হন। ডাকাতরা একটি স্বর্ণের চেইন ও দুইটি মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করেছে বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা। ১ এপ্রিল সোমবার রাতে নিহতের বাবা সুরমান আলী বাদী হয়ে ডাকাতি ও হত্যার অভিযোগে অজ্ঞাত সাত থেকে আট জনকে আসামি করে বালাগঞ্জ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। শাহাব বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন।
৩০ মার্চ শনিবার শহরতলীর খিদিরপুর গ্রামের শফিকুর রহমানের বাসায় গৃহ শিক্ষক ছিলেন সিলেট মদন মোহন কলেজের প্রভাষক মো. সাইফুর রহমান। নিহত শিক্ষক রূপার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে চেষ্টা করেন। রূপা তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে কুপ্রস্তাব দেন। তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করার প্রস্তাব দিতেন। বিষয়টি রূপা তার প্রেমিক মোজাম্মেলকে জানায়। এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উভয়েই সাইফুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৩০ মার্চ শনিবার রূপা সাইফুর রহমানের প্রস্তাবে সাড়া দেয়। ওইদিন সকাল ১০টায় রূপাকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী সেজে নগরের সুবহানীঘাট হোটেল মেহেরপুরে একটি কক্ষে ভাড়া নেয় সাইফুর। পরিকল্পনা অনুযায়ী রূপা সাইফুরকে হোটেল কক্ষে দুধের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে পান করান। এতে অচেতন হয়ে পড়েন সাইফুর। পরে মোজাম্মেলকে খবর দেন রূপা। ওই সময় মোটরসাইকেলে করে হোটেলে পৌঁছেন তিনি। ওই কক্ষে তারা তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। দুপুর ১১টার দিকে তারা হোটেল ম্যানেজারকে জানান সাইফুর জ্ঞান হারিয়েছে। এই বলে হাসপাতালে নেয়ার জন্য তারা একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে মরদেহ দক্ষিণ সুরমায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক বাইপাস তেলিরাই এলাকায় নিয়ে ফেলে চলে যান। ৩১ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা তেলিরাই এলাকা থেকে সাইফুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সাইফুর রহমান নিহত সাইফুর গোয়াইনঘাট উপজেলার ফলতইল সগাম গ্রামের মো. ইউসুব আলীর পুত্র।
৩১ মার্চ উপজেলায় রবিবার ভোর ৪টার দিকে বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের সাম্পার কান্দি গ্রামে ডাকাতের গুলিতে সাহাব উদ্দিন (২৬) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দু’জন। তবে পুলিশ বলছে, এটা ডাকাতির ঘটনা নয়, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিহত সাহাব উদ্দিন সাম্পার কান্দি গ্রামের সুরমান আলীর ছেলে। স্থানীয় সূত্র জানায়, রাতে সাম্পার কান্দি গ্রামের সুরমান আলী ও ছোরাব আলী মেম্বারের বাড়িতে একদল ডাকাত হানা দেয়। ডাকাতদের আক্রমণ প্রতিহত করতে সাহাব উদ্দিন এগিয়ে গেলে ডাকাতরা গুলি চালায়। এতে সাহাব উদ্দিন গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে পুলিশ ডাকাতের গুলিতে যুবক নিহতের ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলছে।
২২ মার্চ শুক্রবার বিকেলে গোলাপগঞ্জে উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের নিমাদল গ্রামের সাল্লাহ মিয়ার বাড়ির পুকুর পাড় থেকে আব্দুস শহিদ (৪০) নামে চারদিন পর এক ব্যক্তির গলাকাটা গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শহিদ লক্ষ্মীপাশা গ্রামের বাইদ উল্লাহর ছেলে।
ওসমানীনগর উপজেলায় প্রবাসীর বাড়ি থেকে আনিক মিয়া (৬০) নামের এক তত্ত্বাবধায়কের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। ১৮ মার্চ সোমবার দুপুরে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পূর্বতাজপুর গ্রামের কানাডা প্রবাসী আলাউদ্দিনের বাড়ির পানির ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। আনিক আলী সাদিপুর ইউনিয়নের ধরকা গ্রামের মৃত দুয়াব উল্যার পুত্র। ১৭ মার্চ রাতে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা।
ওসমানীনগরে প্রেমঘটিত বিরোধের জের ধরে মোস্তাফিজুর রহমান (১৫) নামে এক কিশোরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করা হয়েছে। ১৫ মার্চ শুক্রবার সকালে উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের মান্দারুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মোস্তাফিজুর উপজেলার নিজ মান্দারুকা গ্রামের আব্দুল মছব্বিরের পুত্র। খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের বন্ধু জীবন (১৫) নামে আরেক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাটে প্রতিপক্ষের হামলায় আমির উদ্দিন (৫০) নামে এক ব্যক্তি খুন হন। টাকার হিসাব নিকাশের জেরে ১৩ মার্চ বুধবার রাতে উপজেলার গোয়ালজুড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আমির উদ্দিন উপজেলার ৮ নম্বর ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপির বাখাইরপার গ্রামের মৃত মকরব আলীর পুত্র।
১২ মার্চ মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টার দিকে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ছুরিকাঘাতে সাব্বির আহমদ (২০) নামের যুবককে হত্যা করা হয়। সাব্বির ছাত্রলীগের একটি গ্র“পের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৩ মার্চ বুধবার কোতোয়ালি মডেল থানায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৮জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। সাব্বির নগরের কানিশাইল মজুমদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ওলিউর রহমানের পুত্র।
একইদিন ১২ মার্চ মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি বদরুল আমিন (২০)। পরদিন বুধবার সকালে স্কুলের পাশে তার গলাকাটা মরদেহ দেখে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানায়, এলাকায় প্রতিবাদি যুবক ছিলেন বদরুল আমিন। কিছুদিন যাবত এলাকায় দু’টি পক্ষের রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে একটি পক্ষের রোষানলে পড়েন। পুলিশের ধারণ, ওই বিরোধ থেকে তাকে খুন করা হতে পারে। কথাকাটাকাটির জের ধরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে সাব্বির আহমদ (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সাব্বির নগরের মজুমদারপাড়ার অলিউর রহমানের ছেলে। ১২ মার্চ মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টার দিকে মদিনা মার্কেট স্থানীয় কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরানের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র জানা যায়, নিহত সাব্বির থাইয়ের কাজ করতেন। পাশাপাশি তিনি ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
গত ১ ফেব্র“য়ারী বিদেশে পাঠানো নিয়ে মনোমালিন্যতার সূত্র ধরে দূর সম্পর্কের এক মামার সাথে সংঘর্ষে জড়ায় ফজর আলী ও তার পরিবার। এ সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন নাজিরবাজারের বাসিন্দা বাবুল মিয়ার পুত্র কামরুল ইসলাম (১৮)। তাকে সিলেটের এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভোরে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত কামরুলের পিতা বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ সুরমায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কামরুল ইসলাম নামের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় পিতা-পুত্রসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে বিশ্বনাথের নাজিরবাজারস্থ ধর্মদা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন বিশ্বনাথ থানার নাজির বাজারের ধর্মদা গ্রামের মৃত সিকন্দর আলীর পুত্র মো. ফজর আলী (৫৫), তার পুত্র মো. আব্দুস সামাদ আশরাফ (২৫), মো. সুয়েব মিয়া (২১) ও মো. লায়েক আহমদ (১৮)। গত ২৪ ফেব্র“য়ারী রাত পৌনে ৮টার দিকে নগরীর হাউজিং এস্টেট আম্বরখানা গালর্স স্কুলের সামনে স্কুলছাত্র শাহেদকে ছুরিকাঘাত করে খুন করে তার সহপাঠীরা। নগরী রংধনু আবাসিক এলাকার মৃত আবদুল খালিকের পুত্র নিহত শাহেদ ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণিতে পড়তেন। ২০ ফেব্র“য়ারী বুধবার রাতে শহরের খরাদিপাড়া সিদ্দিক কটনমিলে বসে ব্যবসার হিসাব নিকাশ করে টাকা গুণছিলেন মিল ম্যানেজার মিসবাউল। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তাকে টাকা গুণতে দেখেন দুর্বৃত্তরা। এরপর ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে তারা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢোকে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে মিসবাউল বাধা দিলে তাকে গলা কেটে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।
৩১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সিলেটের খান মদিনা মার্কেট এলাকার হাবিব মিয়ার কলোনীর একটি কক্ষ সাহাব উদ্দিন (২৪) নামে এক ফলবিক্রেতা খুন হন। পরদিন ওই ফলবিক্রেতার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত সাহাব শ্রীরামপুর থানা সুলতানপুরের মোগলাবাজার এলাকার মৃত তৈয়ব আলী পুত্র। ব্যবসার সুবাদে তিনি মদিনা মার্কেটের হাবিব মিয়ার কলোনীতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। রাতের শয়ন কক্ষে তাকে বাটখারা (কেজি পাথর) দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করে খুনিরা পালিয়ে যায়। ১৬ জানুয়ারী গোয়াইনঘাটে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়ির পাশ থেকে বাঁশ কেটে নিচ্ছিলো। তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ান বৃদ্ধ আমজাদ আলী। প্রতিপক্ষ আমজাদ আলীকে ঘেরাও করে রাখে। ঘর থেকে বেরিয়ে ঘটনাটি দেখতে পেরে বৃদ্ধ বাবাকে রক্ষায় এগিয়ে যান কুতুব আলী। প্রতিপক্ষের শরিফ নামে একজন কুড়াল দিয়ে কুতুবের মাথায় আঘাত করে। এসে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাকে উদ্ধার করে ১৭ জানুয়ারি সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
১৬ জানুয়ারি বুধবার রাত ৮টার দিকে দক্ষিণ সুরমার পিরিজপুর চকেরবাজার এলাকায় সিলেটে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে সেবুল মিয়া ওরফে রাজা (৩৫) নামে এক রিকশাচালক খুন হন। সেবুল বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের আকিলপুর গ্রামের করম আলীর পুত্র। তিনি দক্ষিণ সুরমার লাউয়াই এলাকায় রিকশার গ্যারেজে থাকতেন। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে এসে চকেরবাজার এলাকার একটি দোকানে বসে সময় কাটাতেন সেবুল। ওই দোকানে বসে থাকাকালীন চিপস কিনতে আসেন চকেরবাজার এলাকার আইনুল্লাহর ছেলে রাজমিস্ত্রী সোহেল মিয়া। দোকানীর কাছে এক প্যাকেট চিপস চাইলে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন সেবুল। চিপসের প্যাকেটটি সোহেলের হাতে ছুঁড়ে দিতে গেলে মাটিতে পড়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন সোহেল। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাত করে সেবুলকে মেরে ফেলার হুমকী দেন সোহেল। কিছুক্ষণ পরে সোহেল বাড়ি থেকে কাঠের রুল নিয়ে সেবুলের মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্ ঘোষণা করেন। ১৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার টিকাডহর গ্রামে মাটি ভরাটে বাধা দেওয়ায় আফতাব মিয়া নামে এক যুবক খুন হন। নিহত আফতাব ওই গ্রামের জব্বার মিয়ার পুত্র।
এ ব্যাপারে এসএমপি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো: জেদান আল মুসা বলেন, সমাজে খুনের মতো ঘটনা থেকে রেহাই পেতে সামাজিক সচেতনতা বেশী প্রয়োজন। পুলিশ খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আদালতে বিচারের জন্য পাঠায়। তবে অপরাধ কমাতে পুলিশের পাশাপাশি জনগনকে আরো সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, খুনের ঘটনার পরপরই পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে থেকে বেশীর ভাগ পুলিশের হাতে খুনিরা ধরা পড়ায় মানুষ মারার ঘটনা সমাজে অনেকটা এখন কমে এসেছে বলে জানান তিনি।