পর্যটক বরণে নতুন রূপে মুখিয়ে আছে সাদা পাথর

17

সোহেল আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ

পাহাড়ি ঢলের পর নতুন রূপ পেয়েছে সিলেটের সাদাপাথর। প্রকৃতি যেন তার আপন রূপে সাজিয়েছে এই পর্যটনকেন্দ্রটিকে। এবার পাহাড়ি ঢলে নদীর আকার বেড়ে গিয়ে বিশাল জায়গাজুড়ে জমেছে সাদা সাদা পাথরের স্ত‚প। এতে অনেক কিছুই বদলেছে। যার কারণে স্বচ্ছ পানির সঙ্গে বড় বড় সাদা পাথরের সৌন্দর্য উপভোগ করে মুগ্ধ হবেন দর্শনার্থীরাও।
ভারত সীমান্ত ঘেঁষা ধলাই নদীটি অপরুপ সৌন্দর্যে ভরপুর। দেশের অন্য শত-সহস্র নদী থেকে এ নদীর সৌন্দর্য অনেকটাই আলাদা। এই নদীর উৎসমুখে যতদূর চোখ যায় দুইদিকে কেবল সাদা সাদা পাথর, মাঝখানে স্বচ্ছ নীল জল আর পাহাড়ে মেঘের আলিঙ্গন। সেখান থেকে নেমে আসা ঝরনার অশান্ত শীতল পানির অস্থির বেগে বয়ে চলা। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়েছে তার অপরূপ এক স্বর্গরাজ্য। স্বচ্ছ নীল জল আর পাহাড়ের সবুজ মিলেমিশে একাকার। নদীর বুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাথরের বিছানা নদীটির শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে হাজারগুণ। এই সব সৌন্দর্য মিলিয়েই সাদা পাথর।
পাহাড়ি ঢলের কারণে সম্পূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রটি পানিতে তলিয়ে যায় এবং নদীতে পানি বেশি হওয়ায় বিপদ আশঙ্কা করে পর্যটনকেন্দ্রটি বন্ধ করে উপজেলা প্রশাসন। এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পরে গত শুক্রবারে খুলে প্রকৃতির নিজ হাতে সাজানো এই সাদা পাথর। সাদা পাথরের প্রধান সৌন্দর্য বর্ষা মৌসুমে থাকে। যার প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগ করার সময়ই এখন।
সাদা পাথরের অবস্থান সিলেট শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে। ভোলাগঞ্জে গাড়ি থেকে নেমে নৌকা করে সেখানে যেতে হয়। সিলেটের আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে সাদা পাথর বাস ও বিআরটিসি বাসে সাশ্রয়ী দামে যাওয়া যায় সাদা পাথর খেয়াঘাটে। সেখান থেকে ৮ জন করে মূল জায়গায় যেতে-আসতে নৌকা ভাড়া পড়ে ৮০০ টাকা।
কোম্পানীগঞ্জ ট্যুরিজম ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আব্দুল জলিল বলেন, দেশের অন্যতম সুন্দর একটি জায়গা সাদা পাথর। চারিদিকে শুধু সাদা সাদা পাথর আর পাশ দিয়ে যাচ্ছে সরাসরি ভারত থেকে আসা শীতল পানি। যেখানে সময় কাটালে যে কারোরই মন ভালো হয়ে যাবে। সর্বশেষ পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা সাদা সাদা পাথরে নতুন রূপ পেয়েছে সাদা পাথর। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও কম খরচে সহজে আসা যাওয়ায় বরাবরই পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে সাদা পাথর। আশা করি এই ঈদেও সবার ভালো লাগবে সাদা পাথরে ঘুরতে এসে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, প্রতি ঈদে বা ছুটির দিনে অসংখ্য পর্যটক দেখতে আসেন সাদাপাথরের সৌন্দর্য। আমরাও সবসময় পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত থাকি। বরাবরের মতো এই ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ প্রস্তুত আছে বলেও জানান তিনি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, পাহাড়ি ঢলে প্রকৃতি সাদাপাথরকে নতুন রূপ দিয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পর নদীর আকার বেড়েছে। প্রচুর পাথর এসে জমা হয়েছে। এই ঈদেও সাদাপাথরের নতুন রূপে আকৃষ্ট হয়ে প্রচুর পর্যটক আসার সম্ভাবনা আছে।