জৈন্তাপুর থেকে সংবাদদাতা :
জৈন্তাপুরে উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের কমলাবাড়ি এলাকার ভূমিহীন শতাদিক পরিবারের একমাত্র আশ্রয় স্থল ভিটেমাটি কৌশলে দখল নিতে আশা কথিত মালিকসহ জনতার হাতে বিদেশী পিস্তল সহ সাত জনকে স্থানীয় জনতা আটক করে জৈন্তাপুর মডেল থানায় সোপর্দ করে। বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কমলাবাড়ি এলাকার শতাদিক পরিবার দীর্ঘ প্রায় ৬০/৭০ বছর পূর্ব থেকে স্থায়ী ভাবে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। বিগত ১/১১ সময় সরকার এমনি এক ভুয়া মালিক দাবী করে কাগজ পত্র নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের ধারস্থ হলে গ্রামবাসীর কথা বিবেচনা করে মালিকানা দাবীদারদের কাগজপত্র বাতিল করে দেওয়া হয়। জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট মৌজার বেশীর ভাগ জায়গায় টিলা শ্রেণীর হওয়াতে প্রভাব শালীদের নজর এসব ভূমির উপর পড়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটের কাজীটুলার বিহঙ্গ-৪৮ এর বাসিন্দা মৃত হাজী কছিম উল্লার ছেলে হাসান আহমদ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে কমলাবাড়ী মৌজার ভূমিহীন পরিবারের একমাত্র মাথাগোজার আশ্রয়স্থল টুকু নিজের নামে বন্দবস্ত নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন এবং কিছু অংশ নিজ নামে ইতিমধ্যে ভুয়া তথ্য দিয়ে নিজের নামে একটি লিখিত ইজারার কাগজ নিয়ে আসেন।
আটককৃতরা হলেন, সিলেট মহানগরের কাজীটুলা এলাকার বশির মঞ্জিল নিলিমা ৩০’র বাসিন্দা মৃত বশির আহমদ চৌধুরীর ছেলে ফারুক চৌধুরী (৬০), একই এলাকার নিলিমা ৩০ বশির মঞ্জিল এর বাসিন্ধা সৈয়দ আফতাব আলীর ছেলে সৈয়দ হাফিজ (৫০),কাজিটুলা বিহঙ্গ ৪৮এর বাসিন্দা মৃত হাজী কছিম উল্লার ছেলে হাসান আহমদ (৬০), একই এলাকার বিহঙ্গ ৪৮’র বাসিন্দা তাজুল ইসলামের ছেলে মোঃ সুজন মিয়া (২৭), মাছু দীঘিরপার প্রবাহ ৬০ বাসিন্দা মৃত সোনা মিয়ার ছেলে মোঃ বেলাল উদ্দিন (৪৩), একই এলাকার তালতলার ৫২/২ এলাকার বাসিন্দা কৃঞ্চ পদ ধরের ছেলে বিজয় ধর (৩০) এবং লামাবাজার নয়াপাড়ার বীথিকা বি ১২/১ এর বাসিন্দা মৃত আরশাদ আলীর ছেলে জামাল উদ্দিন আহমেদ (৫৪) এর মধ্যে সৈয়দ হাফিজ নিজেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক এবং ফারুক চৌধুরী নিজেকে যুক্তরাজ্যের রামাদা হোটেলের এমডি বলে পরিচয় দেন।
স্থানিয় সূত্রে জানা যায়, ২ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় কথিত ইজারাদার হাসান আহমদ সিলেট শহরের ভিবিন্ন এলাকার ৭/৮জনের একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্র“পকে নিয়ে নিজপাট ইউনিয়নের কমলাবাড়ী গ্রামের পাখির টিলায় বসবাসকারী পাখি মিয়ার পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যাবার হুমকি দিলে পরিবারের সদস্যদের আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। অবস্থার ব্যঘাত দেখে সন্ত্রাসী গ্র“পের তিন সদস্য তাদের ব্যবহৃত দুটি গাড়ী (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩-৪২৫৫, ঢাকা মেট্রো চ-১৫-৬১১৬) নিয়ে পালিয়ে যায়। অপর ৪ জনকে স্থানীয় জনতা অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অপর তিনজনকে কৌশলে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয় জনতা ঘটনার সংবাদ পেয়ে দলে দলে থানার দিকে ছুটে আসতে থাকলে উত্তেজিত জনতাকে শান্তনা দিতে জৈন্তাপুর থানার ওসি ও ইউপি চেয়ারম্যান উপযুক্ত বিচারের আশ্বাস দিলে উত্তেজিত জনতা থানা এলাকা ত্যাগ করে নিজ নিজ বাড়ীতে চলে যায়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ইউপি সদস্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গের মধ্যস্থতায় আপোষ নিশ্চপত্তির সিদ্ধান্তে পৌছলে জৈন্তাপুর থানায় বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগের প্রক্রিয়া চলে।
এ ব্যাপারে নিজপাট ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াহিয়া জানান- ঘচনার সংবাদ পেয়ে জৈন্তাপুর থানাকে সংবাদ দিয়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের নিয়ে উপস্থিত হলে বিষয় সর্ম্পকে অবহিত হই। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এলাকার শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার স্বার্থে স্থানীয়দের আলোচনা সাপেক্ষে আপোষ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শ্যামল বণিক প্রতিবেদককে জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে এস আই প্রদিপ’র নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে আটককৃতদের ও তাদের সাথে থাকা পিস্তল ও ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করে আপোষ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়েছে।