জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুর উপজেলার ছোট-বড় প্রতিটি হাওরে এবার আমন ধানের বাম্পার ফসল হয়েছে। জমিতে পাকা সোনালী ধান বাতাসের তালে তালে দুলছে। ধানের মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ যেন মনোমুগ্ধকর গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী চিত্র। চারদিকে পড়েছে ধান কাটার ধুম। হাওরে হাওরে প্রতিযোগিতা মূলক ভাবে চলছে ধান কাটা। কোথাও জমির মালিক ও তাদের পরিবারের লোকজন নিজেরাই নিজেদের জমির ধান কাটছেন। আবার অনেকে শ্রমিকদের দিয়ে জমির ধান কাটাচ্ছেন। ধান কেটে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে স্তুপ করে রাখছেন। পরে মাড়াই মেশিন দিয়ে ধান মাড়াই করে বাড়ির আঙিনায় নিয়ে রাখছেন। এখান থেকে বাড়ির নারী-পুরুষ অথবা কৃষাণীরা এসব মাড়াই করা ধান খলায় শুকিয়ে গোলায় তুলছেন।
সব মিলিয়ে ধান কাটা থেকে শুরু করে গোলায় তোলা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। তাদের সকল কষ্ট দূর হয়ে গেছে বাম্পার ফসল পেয়ে। যে কারণে কৃষক-কৃষাণীর মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির হাসি। সেই সাথে হাওরে হাওরে পাকা সোনালী ধান দেখে যারা জমি আবাদ করেননি, তাদের মুখেও আনন্দের হাসি দেখা যায়। কেউ ধান পেয়ে খুশি আবার কেউ ধান দেখে খুশি। এমন দৃশ্য শুধু হাওরে বাম্পার ফসল হলেই দেখা যায়।
১৮ নভেম্বর সোমবার সরজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুর পৌর এলাকার হাসিমাবাদ হাওর ও উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের খাশিলা গ্রামের হাওর সহ বিভিন্ন হাওরে উৎপাদিত আমন ধান মনের আনন্দে কাটছেন শ্রমিকরা। এ সময় ধান কাটা শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে অনেকে স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষায় বলেন “ইবার আমরার জমিনো বালা ধান অইছে। অনে মাতাইওনা। আমরা আগন মাইয়া ধান খাটা লইয়া ব্যস্ত আছি”।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, এবার উপজেলার ৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকারি ভাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ২৪ হাজার ৭০০ মেট্রিকটন ধান। তিনি আরো বলেন, আমন আবাদে আমরা কৃষকদের উৎসাহিত করেছি। প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সরকারি কৃষি উপ-করণ দিয়ে তাদেরকে সহায়তা করা হয়েছে। এবার পরিবেশ ভাল ছিল। যে কারণে বাম্পার ফলন হয়েছে। জমিতে আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় আমরা ও কৃষকদের সমন্ধিত প্রচেষ্টা ও কষ্ট স্বার্থক হয়েছে।