কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির পাওনা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন (জিপি) আপাতত কত টাকা দিতে পারবে- তা জানাতে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরটিকে দুই সপ্তাহের সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ১৪ নভেম্বর এ মামলার আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আদালত।
গ্রামীণফোনের আইনজীবীদের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
এর আগে দাবিকৃত সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা প্রদানের জন্য ২ এপ্রিল গ্রামীণফোনকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। ওই চিঠির বিরুদ্ধে ঢাকার নিম্ন আদালতে মামলা করে ফোন কোম্পানিটি। এতে টাকা প্রদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। গত ২৮ আগস্ট আদালত মামলা খারিজ করে দেয়। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে গ্রামীণফোন। ওই আবেদন গ্রহণ করে বিটিআরসির চিঠি স্থগিত করে দেয় হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় বিটিআরসি। গত ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগ এক আদেশে বলেন, জিপি এই মুহূর্তে কত টাকা বিটিআরসিকে দিতে পারবে- তা জানাতে হবে।
শুনানিকালে গ্রামীণফোনের আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ দেশে ব্যবসা করাটা সহজ। যখন টাকা-পয়সার ব্যাপার আসে তখন আদালতে এসে একটা আবেদন করে স্থগিতাদেশ নিয়ে টাকা দেয়া হয় না। গড়িমসি করা হয়। মামলাগুলো করাই হয় যাতে টাকা দিতে না হয়। এ সব মামলার কারণে অর্থঋণ আদালতগুলোতে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা আটকে আছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ব্যবসা করবেন টাকা দেবেন না- তা হয় না।
সেই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এ মামলার শুনানিতে গ্রামীণফোনের কৌঁসুলি এএম আমিনউদ্দিন বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে একশ’ কোটি টাকা দেয়া নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই প্রেক্ষিতে ওই টাকা দিব।
আদালত বলেন, সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা পাবে, আর আপনি বলছেন একশ’ কোটি। ওইখানে কমপ্রোমাইজ করবেন আর আদালতে এসে মামলা করবেন সেটা হতে পারে না।
আমিনউদ্দিন বলেন, তারা সিদ্ধান্ত না মানায় আদালতে এসেছি। টাকা দেব না এ কথা তো কখনও বলিনি।
আরেক আইনজীবী শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বিটিআরসির দাবিকৃত টাকার ভিত্তি আছে কিনা- সেটা আদালতের দেখা দরকার। একটা বহুজাতিক কোম্পানি এ দেশে ব্যবসা করতে এসেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। এর আগে জিপি ২১শ’ কোটি টাকা দিয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আদালতের নির্দেশে গ্রামীণফোন ওই টাকা দিয়েছে। আর অডিটের মাধ্যমে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার হিসাব এসেছে। গ্রামীণফোন তখন তো কোনো আপত্তি করেনি।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, কত টাকা দিতে পারবেন- তা জানান। নইলে আদেশ দেয়া হবে। এর পরই আদালত এ মামলার আদেশের জন্য দিন ধার্য রাখেন।