মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
আগামী ১৩ অক্টোবরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন। এই সম্মেলনকে ঘিরে সকল প্রস্ততি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে কয়েকবার সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও নানা কারণে আর হয়ে উঠেনি। ফলে শ্রীমঙ্গলের আওয়ামীলীগে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসেনি। দেখা দেয় দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা।
অন্যদিকে দীর্ঘ ১৫ বছর পর উপজেলা আওয়ামীলীগের এই সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের প্রাণচাঞ্চল্য অনেকটা বেড়ে গেছে। শহরে ও তৃণমূলের হাটবাজারে সম্মেলনের আসা সম্ভাব্য অতিথিদের ব্যানার, বিলবোর্ড ও পোষ্টার ব্যাপকভাবে সাঁটানো হচ্ছে। অতিথিদের সম্মানে বেশ কয়েকটি তোরণ ও গেইট নির্মাণ হচ্ছে। সম্মেলন সফল করতে প্রচারনার কাজ চলছে তোড়জোড়ে। সম্মেলনের সফলতা কামনা করে শহরে ব্যানার ফেস্টুন ছেয়ে গেছে।
সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কদর বেড়ে গেছে। আর তাতেই খুশি তৃণমূলের কাউন্সিলররা। এরই মধ্যে সম্ভাব্য সভাপতি-সেক্রেটারী প্রার্থীরা কাউন্সিলরদের কাছে নিজেদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য দোঁড়ঝাঁপ শুরু করছেন। তবে সম্মেলনে কে হবেন দলের নতুন সভাপতি সেক্রেটারী এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূলে ও দুর্দিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরণের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। তাদের মনের শঙ্কা, বিগতদিনের সংসদ নির্বাচনে নৌকা ডুবাতে যারা প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছিলো তারাই যদি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন, সেই ভাবনা থেকে। কারণ সভাপতি সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে সেসব বিতর্কিতরাও কেউ কেউ এই সম্মেলনে প্রার্থী হচ্ছেন।
সম্মেলনকে ঘিরে শহরেও গ্রামে তেমন উত্তাপ লক্ষ্য করা না গেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিগত সংসদ নির্বাচনকে উপলক্ষ্য করে যারা নৌকার মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিল এসব নেতাদের নিয়ে তুমুল বির্তক ও তির্যক মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এবারের সম্মেলনে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিগতদিনে দলের সাথে,নৌকার প্রার্থীর সাথে যারা বেইমানি করেনি, স্বচ্ছ ও দুর্নীতির কলঙ্কমুক্ত নেতৃত্বকেই কাউন্সিলরা বেছে নিবেন।
আর এ ক্ষেত্রে দলের তৃণমূলের মতামত ও কাউন্সিলরদের সমর্থনের মাধ্যমে আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে বলে প্রত্যাশা রয়েছে নেতাকর্মী সবার।
সর্বশেষ বিগত ২০০৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রয়াত সভাপতি ইসমাইল হোসেনকে সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫৭ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর পর দলীয় সভাপতি ইসমাইল হোসেনের মৃত্যুর পর সিনিয়র সভাপতি এম এ মনির সভাপতির দায়িত্ব পান। তিনিও মৃত্যুবরণ করার পর বর্তমানে সহ সভাপতি মো. আছকির মিয়া সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
সাধারণ সম্পাদক রনধীর কুমার দেব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হওয়াতে সেসময়ে দলীয় বিধি নিষেধের অজুহাতে পদত্যাগ করেন। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট আজিজুর রহমান। তার মৃত্যুজনিত কারণে দায়িত্ব পান যুগ্ম সম্পাদক এম এ মান্নান। সেই কমিটি গঠনের পর থেকে আর সম্মেলন না হওয়াতে গুরুত্বপূর্ণ দুই পদে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে দলের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
জেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় সম্মেলনের তারিখ ঘোষনার পরপরই পদ প্রত্যাশীরা শীর্ষনেতাদের আর্শীবাদ পেতে জোর লবিং করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তৃণমূলে ও কাউন্সিলরদের সমর্থন আদায়ের প্রাণপণ চেষ্টা করছেন।