শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান ॥ মেধাবী আর কম মেধাবী বলে কিছু নেই, সকলের মেধাই সমান

42
মহানগর শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে ‘শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষা জাতীয়করণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান।

বাংলাদেশের সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ না করলে ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরটের ও সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান। শনিবার (৫ অক্টোবর) সিলেটে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সিলেট মহানগর শিক্ষক সমিতির আয়োজনে শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষা জাতীয়করণ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে শতকরা ৯৮ শতাংশ বেসরকরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বৃহৎ অংশের প্রতি বৈষম্য রেখে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহকে জাতীয়করণ করা না হলে দেশের বিরাট ক্ষতি হবে বলেও জানান তিনি।
সাবেক শিক্ষা সচিব আরো বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব। শিক্ষাসহ সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহকে জাতীয়করণ করলে কি হবে না হবে এই বিষয়টা সরকারকে বুঝাতে হবে। শুধু আন্দোলন করে সবকিছু প্রতিষ্ঠা করা যায় না। কোনো কিছু প্রতিষ্ঠা করতে হলে তার যৌক্তিক কারণ দেখাতে হবে। তাহলে সরকার এটাকে গুরুত্ব দেবে।
সাবেক সচিব বলেন, আমাদের দেশে প্রত্যেক বছর প্রাথমিকের পরীক্ষা দেয় ৪০ লাখ। আর এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ে ১০ লাখ শিক্ষার্থী। বাকিরা কোথায় যায়। কেনো ঝড়ে পড়ছে। এসব বুঝতে হবে। শিক্ষা মূল ‘ফোকাস’ চাকুরি থেকে সরিয়ে উদ্যোক্তার দিকে নিতে হবে। দেশে অনেক সম্ভাবনাময় শিল্প আছে। কিন্তু ভালো শিক্ষিত উদ্যোক্তার অভাবে এসব শিল্প থেকে কিছু আসছে না। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য চাকুরী না হয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নও থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, মেধাবী আর কম মেধাবী বলে কিছু নেই। সকল শিক্ষার্থীর মেধা সমান। উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে কারো বিকশিত হয় আর কারো হয় না। তাই আমাদের শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুবই জরুরি।
সিলেট মহানগর শিক্ষক সমিতির সভাপতি আহমদ আলীর সভাপতিত্বে এবং সচিব মো. জিয়াউর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব ফয়সল আহমদের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় সহ সভাপতি ড. ইদ্রিস আলী, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফরিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক এএইচএম ইসরাইল আহমদ, সিলেট জেলা সভাপতি মামুন আহমদ, জেলা সচিব শমসের আলী।
দি এইডেড হাইস্কুলের সহকারি শিক্ষক শেখ আব্দুল মুকিতের কোরআন তেলাওয়াত ও পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ননী গোপাল রায়ের গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর শিক্ষক সমিতির সচিব ও আব্দুল গফুর ইসলামী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জিয়াউর রহমান।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সচিব আব্দুল মুমিত, সহ সভাপতি রফিকুল আলম, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি ইনছান মিয়া, সাংগঠনিক সচিব শেখ নজরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি কাজি কামাল, সাংগঠনিক সচিব নুরুল আমীন রাজু, সফির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রশিদ আহমদ. রাজা জিসি হাইস্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক হাছিনা মমতাজ, ওসমানীনগর উপজেলার সভাপতি আবুল লেইছ, বালাগঞ্জ উপজেলা সহ সভাপতি সুশীল চন্দ্র নাথ, জৈন্তাপুর উপজেলা সচিব আব্দুল জলিল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সচিব জাহের আলী, গোয়াইনঘাট উপজেলার সচিব আব্দুল মুনিম, কানাইঘাট উপজেলার সাংগঠনিক সচিব শামীম আহমদ। এছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি