কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রথম হাঁটতে শেখার দিনে তাঁর দিকে যে আঙ্গুলটি এগিয়ে দেয়া হয়েছিল সেটি তাঁর বাবার, তবে একই সঙ্গে তা ছিল জাতির পিতার, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। প্রথমে সেই বাড়ানো হাত ধরে, পরে জাতির পিতার দেখিয়ে দেয়া পথ ধরে তিনি হাঁটছেন। আজও বীরদর্পে হেঁটে চলেছেন। হাঁটতে হাঁটতে পার করে দিয়েছেন ৭৩ বছর। আজ শনিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন।
দেশমাতৃকার জন্য তিনি ন্যস্ত করেছেন তেয়াত্তর বছরের সবটুকু। এই তেয়াত্তর বছরের অর্ধেকের বেশি সময় ধরে নৌকা নামে একটি প্রতীকের হাল ধরে আছেন। সঙ্গে প্রিয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। জীবনের প্রায় সিকি ভাগ পার করেছেন সরকারপ্রধান হিসেবে। দেশকে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়ন, অগ্রগতির মহাসোপানে। এখন তাঁর জীবনের একটাই প্রত্যয় : জাতির পিতার ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়ার। সে প্রত্যয় নিয়েই এগিয়ে চলেছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ়চেতা মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলী তাঁকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। তিনিই বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক, ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল। শুভ জন্মদিন, ‘বাংলার বাতিঘর’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের এই দিনে মধুমতিবিধৌত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশবকাল কাটে পিত্রালয়ে। চুয়ান্নর নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বাবা-মার সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকে সম্পৃক্ত হন প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে। শুধু জাতীয় নেতাই নন, তিনি আজ তৃতীয় বিশ্বের বিচক্ষণ বিশ্ব নেতা হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন নতুন ভূমিকায়। সর্বশেষ ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে ‘বিশ্ব মানবতার বাতিঘর’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বিশ্ব নেতাদের কাছ থেকে।
৩৮ বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ পরিক্রমায় শেখ হাসিনা কেবল সেই মহান নেতার কন্যা এবং তাঁর রাজনীতির উত্তরসূরি হিসেবে গণমানুষের প্রধান নেতার আসনে স্থান পাননি, জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, হত্যা চেষ্টাসহ হাজারো হুমকির মুখে অটল থেকে নেতৃত্বের অগ্নি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি নব পর্যায়ের বাংলাদেশের নতুন ইতিহাসের নির্মাতা। হিমাদ্রিশিখর সাফল্যের মূর্ত-স্মারক, উন্নয়নের কা-ারি। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার। সাগর সমান অর্জনে সমৃদ্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতির কর্মময় জীবন। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসী নেতৃত্ব জনগণের কাছে আদর্শ ও অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে আছেন তিনি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রাজনৈতিক পথপরিক্রমায় ছাত্রনেত্রী থেকে জননেত্রীতে পরিণত হওয়া শেখ হাসিনার জন্মদিন পালিত হবে অনাড়ম্বরে।
রাষ্ট্রীয় কাজে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদানের জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী। গত বছরের মতো এবারও যুক্তরাষ্ট্রে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ভাগ্নে-ভাগ্নি, নাতি-নাতনিদের সঙ্গে পারিবারিক পরিবেশে তাঁর জন্মদিন পালন করবেন শেখ হাসিনা। দেশে না থাকলেও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যার জন্মদিন উপলক্ষে গ্রহণ করেছে বিস্তারিত ও বর্ণাঢ্য কর্মসূচী।
’৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর তিন যুগ ধরে দেশের এই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দিয়ে রাজনীতির মূল গ্রোতধারার প্রধান নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ’৯৬ সালে তাঁর নেতৃত্বেই তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিজয় অর্জন করে আওয়ামী লীগ। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে প্রধান বিরোধী দলের নেতা হিসেবে তাঁর নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে প্রথমে ১৪ দলীয় জোট এবং পরে মহাঐক্যজোট গড়ে ওঠে। ১৪ দল ও মহাঐক্যজোটের তীব্র আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২২ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরী অবস্থা জারি করে ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে ওই বছরের ১৬ জুলাই গ্রেফতার হন শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে প্রথমবারের সংসদ ভবন চত্বরের বিশেষ কারাগারে তাঁকে প্রায় ১১ মাস বন্দী থাকতে হয়। গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে এর আগেও কয়েক দফা কারা ও গৃহবন্দী হয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ’৫৪ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর পরিবারকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। তিনি পুরান ঢাকার মোগলটুলির রজনী বোস লেনে বসবাস শুরু করেন। পরে তিনি যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হন। আবাস স্থানান্তরিত হয় ৩ নম্বর মিন্টো রোডের সরকারী বাসভবনে। ’৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। এভাবেই শুরু হয় তাঁর শহর বাসের পালা, নাগরিক জীবন। ’৬১ সালের ১ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের ঐতিহাসিক বাড়িটির দ্বারোদ্ঘাটন হয়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারবর্গ মৃত্যুর আগদিন পর্যন্ত এই বাড়িতেই অবস্থান করেন। ’৬৫ সালে শেখ হাসিনা আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ’৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশী বাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গবর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারী মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। সে বছরই ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্রী সংসদের সহ-সভানেত্রী পদে নির্বাচিত হন।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কিশোর বয়স থেকেই রাজনীতিতে তাঁর পদচারণা। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। সহজ-সারল্যে ভরা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। পোশাকে-আশাকে, জীবনযাত্রায় কোথাও তাঁর বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার কোন ছাপ নেই। তিনি নিষ্ঠাবান, ধার্মিক। নিয়মিত ফজরের নামাজ ও কোরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে তাঁর দিনের সূচনা ঘটে। পবিত্র হজব্রত পালন করেছেন কয়েকবার।
’৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬ দফা দাবিতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে এক অভূতপূর্ব জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি হয়। শাসকগোষ্ঠী ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। শুরু হয় প্রচন্ড দমন-নির্যাতন। আটক অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকি শাসকগোষ্ঠী দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তাঁর জীবন ও পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর বিপদাশঙ্কা ও দুঃসহ দুঃখ-কষ্ট। এই ঝড়ো দিনগুলোয় কারাবন্দী পিতা বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়, ১৯৬৮ সালে। ’৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যাওয়ার পর গোটা পরিবারকে ঢাকায় এক ভিন্ন বাড়িতে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ’৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা গৃহবন্দী অবস্থায় তাঁর প্রথম সন্তান ‘জয়ে’র (সজীব ওয়াজেদ জয়) মা হন। ’৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জন্ম।
বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় ১১ দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে তাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ’৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ডাক আসে দেশমাতৃকার হাল ধরার। সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ’৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। এরপর দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তাঁর একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। হত্যাচেষ্টা, জেল-জুলুম, অত্যাচার কোন কিছুই তাঁকে তাঁর পথ থেকে টলাতে পারেনি।
বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশের ইতিহাসে টানা তৃতীয়বারসহ মোট চারবার ক্ষমতায়। গণতন্ত্র এবং দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে অসামান্য অবদান রাখার পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনায়ও ব্যাপক সাফল্যের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। ১৯৯৬-২০০১ সালে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি ও গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি তাঁর সরকারের অন্যতম সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তৃতীয় মেয়াদেই ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেছেন। বর্তমানে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। স্থায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুত, বাণিজ্য, আইসিটি এবং এসএমই খাতে এসেছে ব্যাপক সাফল্য। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচারসহ জাতীয় জীবনের বহুক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার ’২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ’৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য পূরণে নিয়োজিত আছে।
রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষ বিশ্বের অনেক সম্মানজনক পদকে ভূষিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর এই কন্যা। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। এবারও জাতিসংঘে দুটি আন্তর্জাতিক সম্মাননাসহ মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোট তিনটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমুদ্র জয়ের পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে মহাকাশও জয় করেছেন। মিয়ানমার সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে আশ্রয়হীন ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বকে, বিশ্ববিবেককে।
আজ সারাবিশ্বেই তাঁর নাম আলোচিত হচ্ছে ‘বিশ্ব মানবতার বিবেক’ হিসেবে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তাঁর এই মানবিক দৃষ্টান্তের প্রশংসায় ছিলেন পঞ্চমুখ। নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ়চেতা মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলী তাঁকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। তিনিই বাঙালীর জাতীয় ঐক্যের প্রতীক, ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল। সর্বশেষ শক্ত হাতে অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর কঠোর অবস্থান ও সাঁড়াশি অভিযানের প্রশংসা এখন সারাদেশের মানুষের মুখে মুখে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আজ শনিবার দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন পালন করবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে বিকেল সাড়ে তিনটায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে ছাত্রলীগ আজ ঢাকাসহ সারাদেশে আনন্দ র্যালি, প্রত্যেক শাখা কমিটির উদ্যোগে ৭৩ করে বৃক্ষরোপণসহ নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। আজ সকাল দশটায় মধুর ক্যান্টিন থেকে ছাত্রলীগ শোভাযাত্রা বের করবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিভিন্ন উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে পালন করবে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন।
সারাদেশে দোয়া মাহফিল : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জš§দিন উপলক্ষে তাঁর সুস্বাস্থ্য কামনায় ঢাকাসহ সারাদেশে দোয়া মাহফিল হয়েছে। জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে দোয়া মাহফিল হয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য কামনা এবং বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের জন্য দোয়া করা হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী ও দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।