নতুন কাশ্মীর, নতুন ভূস্বর্গ গড়ার ডাক মোদির

21

কাজিরবাজার ডেস্ক :
যে হাত এক সময় পাথর ছুড়েছে এতদিন, সে হাতই এগিয়ে দিচ্ছে চা-বিস্কুট! ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কোনো গ্রামে জঙ্গি-দমন অভিযানে যাওয়া নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে এটা অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতা তো বটেই, বিস্মিত রাজ্য সিআইডিও। বৃহস্পতিবার জমা দেয়া এক প্রতিবেদনে রাজ্যের গোয়েন্দারা বলেছেন, টানা ৪৫ দিন ধরে চলা নিষেধাজ্ঞার আবহে ‘অবাক-করা’ কিছু ঘটনা ঘটেছে উপত্যকায়। কেন ঘটছে এমন ঘটনা, তা নিয়েই চিন্তিত তারা।
সাম্প্রতিক দুটি ঘটনার কথা উলেস্নখ করা হয়েছে সিআইডির প্রতিবেদনে। একটি ঘটনা বারামুলার সোপোরের। যে সোপোরে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির বাড়ি। যেখানে জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের প্রভাব রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি সেই সোপোরেরই ডাঙ্গেরপোরা গ্রামে জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে বলে খবর পেয়ে অভিযানে নামে পুলিশ, আধাসেনা ও সেনার যৌথবাহিনী। প্রতিবেদনের বক্তব্য, ‘তিন ঘণ্টা চিরুনি তলস্নাশির পরেও কোনো জঙ্গির খোঁজ মেলেনি। অভিযান শেষ হওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনীকে চা-বিস্কুট ও খাবার খাওয়ায় স্থানীয়রা। অথচ এরাই আগে পাথর ছুড়েছে গ্রামে অভিযান চালাতে আসা সিআরপি জওয়ানদের ওপরে। কাছের একটি সিআরপি ছাউনির জওয়ানরা গত দুই বছর ধরে বারবার পাথরের মুখে পড়েছে।’ সেখানে এই অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ বিপরীত।
কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ ও কড়াকড়ি শুরুর আগে দক্ষিণ কাশ্মীরে, বিশেষ করে পুলওয়ামায় বিক্ষিপ্তভাবে জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে বাহিনীর। প্রতিবেদনের দ্বিতীয় ঘটনাটি পুলওয়ামারই তহব এলাকার। গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে, সেখানে স্থানীয়দের পাথর ছুড়তে বারণ করেছে জঙ্গিরাই। গত মঙ্গলবার তহবে রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের ছাউনিতে পাথর পড়ে। বুধবার মোটরবাইকে চড়ে হাজির হয় কিছু জঙ্গি। গ্রামের মুরুব্বিদের সঙ্গে তারা দেখা করে বলে, যুব সম্প্রদায়কে সেনা ছাউনিতে পাথর ছুড়তে বারণ করা হোক। কেউ যেন রাস্তা অবরোধও না করে।
গত এক মাসে পুলওয়ামার অন্তত ১৩ যুবক নিখোঁজ হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা জঙ্গি দলে নাম লিখিয়েছে। এক দিকে কারফিউ, নিরাপত্তার কড়াকড়ি, তরুণদের ‘নিখোঁজ’ হওয়া। অন্যদিকে, গ্রামবাসী ও জঙ্গিদের এই মনোভাব। সিআইডি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দুটি ব্যাপার একই সঙ্গে চলেছে, যা চিন্তার বিষয়। যেখানে বিক্ষোভের আশঙ্কা ছিল, সেখানে সবাই এখন নিশ্চুপ।’ তাই পরিস্থিতি নজরে রাখা ও অস্বাভাবিক কিছু দেখলেই তা জানানোর জন্য প্রতিবেদনে পরামর্শ দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীকে।
নতুন কাশ্মীর, নতুন ভূস্বর্গ গড়ার ডাক মোদির
এদিকে, নতুন কাশ্মীর, নতুন ভূস্বর্গ গড়ার ডাক দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন. এখন প্রতিটি কাশ্মীরিকে আলিঙ্গন করার কথা। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পর, উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী দলগুলো যখন সমালোচনায় মুখর, সেখানকার প্রায় সব নেতা আটক, সেই সময়েই বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটের বিউগল বাজাতে গিয়ে মোদির কণ্ঠে ছিল কাশ্মীরই।
সেখানে এক জনসভায় মোদির মন্তব্য, ‘মানুষকে জম্মু-কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলাম। আমি সন্তুষ্ট, দেশ সে দিকেই এগোচ্ছে।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘সব সময়েই জানতাম, কাশ্মীর আমাদেরই। এখন প্রতিটি ভারতীয়কে নতুন স্স্নোগান তুলতে হবে- ‘অব মিলকর এক নয়া কাশ্মীর বানানা হ্যায়। … ফির একবার, কাশ্মীর কো স্বর্গ বানানা হ্যায়।’