শরণার্থী ও পুনর্বাসন কমিশনার আবুল কালাম ওএসডি, সাত ক্যাম্প ইনচার্জ বদলি

33

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চলের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে আছে। দীর্ঘ দুই বছর সময়ে ওরা হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা ও কিছু এনজিওর ইন্ধনে এ রোহিঙ্গারা এখন সবকিছুতে ফ্রি স্টাইল। পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সরকারী পর্যায়ে কর্মরত বহু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নানা অভিযোগ রয়েছে। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে অনেকে যথাযথ দায়িত্ব যেমন পালন করছিলেন না, তেমনি বিভিন্নভাবে অনেকের অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে অবৈধ উপায়ে অর্থ কামানোর অভিযোগও রয়েছে। সরকার নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের অনৈতিক সুবিধা দেয়ার বিপরীতে যেমন অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন, তেমনি অসাধু এনজিওদের কাছ থেকেও অনুরূপ আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। এ ধরনের এন্তার অভিযোগের পর এখন শুরু হয়েছে প্রশাসনিক এ্যাকশান। সোমবার সরকারী আদেশে ওএসডি হয়েছেন কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন (আরআরসি) কমিশনার আবুল কালাম (সরকারের অতিরিক্ত সচিব)। তাকে ওএসডির পাশাপাশি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। বদলি করা হয়েছে ৭ ক্যাম্প ইনচার্জকে (সিআইসি)। আরআরসি এবং ক্যাম্প ইনচার্জদের ওএসডি ও বদলি আদেশের বিপরীতে কোন ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়নি। তবে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নানা পর্যায়ে নানাভাবে যারা বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এ্যাকশন শুরু হয়েছে।
আকস্মিক ওএসডি ও ৭ ক্যাম্প ইনচার্জ বদলি : এদিকে, সোমবার আকস্মিকভাবে কক্সবাজারে নিযুক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন (আরআরসি) কমিশনার আবুল কালামকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বদলি করা হয়েছে ৭ ক্যাম্প ইনচার্জকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- উখিয়ার কুতুপালং এর ৪ ও ৫ নম্বর ক্যাম্পের ইনচার্জ শামিমুল হক পাভেল (উপসচিব-১৫৮১০), টেকনাফের নয়াপাড়া ১৪ ও ১৫ নম্বর ক্যাম্পের ইনচার্জ আবদুল ওয়াহাব রাশেদ (সিনিয়র সহকারী সচিব-১৬২৩৫)। অন্য ৫ জনের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ অধিশাখার উপসচিব মুহাম্মদ আবদুল লতিফ কর্তৃক গত ১ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত ৭০১ এবং ৭০২ নম্বর স্মারকে এ পৃথক দু’টি বদলি প্রজ্ঞাপন জারির মাধমে এ বদলি করা হয়। শামিমুল হক পাভেলকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি রফতানি প্রকল্পের উপ-পরিচালক এবং আবদুল ওয়াহাব রাশেদকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আওতাধীন মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্পের উপ- পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়ছে। প্রসঙ্গত, বদলিকৃত সিআইসি শামিমুল হক পাভেলের বিরুদ্ধে গত ২৫ আগষ্ট অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা সমাবেশের অনুমতি দেয়ার অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। এ দু’জন সিআইসি’র বদলির মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রশাসনিক এ্যাকশন শুরু হলো। রোহিঙ্গা প্রশাসনের আরও অনেক কর্মকর্তার বদলির আদেশ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।