সেলিম হাসান কাওছার গোলাপগঞ্জ থেকে :
বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গোলাপগঞ্জবাসী। উপজেলার পাড়া-মহল্লাসহ বিভিন্ন অলিগলিতে বেড়েছে কুকুরের উৎপাত। সংঘবদ্ধ কুকুর দলের চিৎকার আর চেঁচামেচিতে অনেকেরই রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। কুকুরের উৎপাতে বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ভুক্তভোগী। স্কুলগামী শিশুরা নির্বিঘ্নে পথ চলতে ভয় পায়। গোলাপগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে কুকুরের উৎপাত দেখা গেছে। সরেজমিনে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে নতুন কুকুরের উৎপাত বাড়ছে। এর মধ্যে অতিমাত্রায় বেওয়ারিশ কুকুরের বংশ বৃদ্ধি পেয়েছে পৌর এলাকার ১,৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডে। এসব ওয়ার্ডে পুরাতনের সঙ্গে নতুন কুকুর যোগ হয়েছে দুই’শতাধিকের উপরে। এদিকে উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ, ভাদেশ^র ও হেতিমগঞ্জ বাজার এলাকায়ও বাড়ছে কুকুরের উৎপাত। সবমিলিয়ে উপজেলায় প্রায় পাঁচ শতাধিক বেওয়ারিশ কুকুর যোগ হয়েছে। এসব কুকুরগুলো দলবেঁধে ঘুরছে উপজেলার অলিগলিতে। অটোরিক্সাচালক তরমুজ আলী বলেন, এভাবে কুকুর বৃদ্ধির ফলে রাস্তা চলাচলে ব্যাপক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে ভোর বেলা ও রাতে কুকুরের অত্যাচার বাড়ে। তারা দল বেঁেধ ঘেউ ঘেউ করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কেউ তাদের তাড়াতে গেলে কুকুরের দল মানুষকে উল্টো তাড়া করে। বিশেষ করে পৌরসভার গোলাপগঞ্জ বাজার আহমদ খান রোর্ড, গডাউন রোড, ইংলিশ রোড, উত্তর বাজার রোড, চৌমুহনীর ঢাকাদক্ষিণ রোড, কদমতলী ও দাঁড়িপাতন এলাকায় রাত ১০টার পর থেকে অতিমাত্রায় কুকুরের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ব্যবসায়ীসহ পথচারীদের মধ্যে।
গোলাপগঞ্জ সরকারি এমসি একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাজিদুর রহমান হাসান বলেন- কুকুরের উপদ্রবে সকালে কোচিংয়ে যাওয়ার সময় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
একই এলাকার গৃহিণী সালমা ইসলাম বলেন, কুকুরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ বাচ্চারা। বাসাবাড়ির ছোট ছোট বাচ্চাদের স্কুল, কোচিংসহ চলাচলে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিনই শোনা যাচ্ছে কুকুরে ধাওয়া দিয়েছে। কবে কার সন্তানকে কুকুর কামড় দেয় এ নিয়ে ভীষণ আতঙ্কে আছি। এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র হেলালুজ্জমানা হেলালের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন-আগামী মিটিংয়ে কুকুরের উৎপাতের বিষয়টি তুলে ধরবো। আশা করছি খুব শীঘ্রই কুকুর নিধনের একটা ব্যবস্থা হবে। উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমানের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন-স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এর ব্যবস্থা নিতে পারেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা তউহীদ আহমদের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, বিগত সময়ে দেশব্যাপী কুকুর নিধন অভিযান শুরু হলে একজন মানবাধিকারকর্মী কুকুর নিধন অভিযান বন্ধ করার জন্য হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে এ অভিযান বন্ধ করা হয়। পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে আর কোন নির্দেশনা আসেনি। একবার এসব কুকুরদের ধরে টিকা দেওয়া হয়েছিলো। কুকুর থেকে কি কি ক্ষতি হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন-পাগল কুকুর কামড় দিলে বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে। তিনি বলেন এ উপজেলায় কুকুরের পাশাপাশি শিয়ালেরও উৎপাত বাড়ছে।
উল্লেখ্য বিগত দিনে এ উপজেলায় বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে ৫/৬ জন লোকের মৃত্যু ঘটে।