বাজে বোলিং বাজে ব্যাটিংয়ে হারলো বাংলাদেশ

17

স্পোর্টস ডেস্ক :
মাশরাফি-সাকিবকে ছাড়া খেলতে নেমে যেন দিশেহারা বাংলাদেশ। শুরুতে বাজে বোলিংয়ের কারণে বড় স্কোর করে ফেলে শ্রীলঙ্কা। বড় টার্গেট সামনে রেখে ব্যাটিংয়ে নেমে যেভাবে শুরু করার দরকার সেভাবে শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ। দলীয় ৩৯ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। এমন বাজে শুরুর পর যেকোনো দলের জন্যই ৩১৫ রানের টার্গেট তাড়া করে জেতা কঠিন। বাংলাদেশও পারল না। ওয়ানডেতে প্রথমবার তামিমের অধিনায়ত্বে খেলতে নেমে ৯১ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৬-২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে তামিমের অধিনায়কত্বে একটি টেস্ট ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। সিরিজের পরবর্তী ম্যাচ ২৮ জুলাই।
অন্যদিকে, এই ম্যাচের মাধ্যমে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেন লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। ২০১১ সালে তিনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তিনি এখন শুধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন। বিদায়ী ম্যাচে মালিঙ্গা ব্যাট হাতে ৬ রান করেছেন। আর বল হাতে নিয়েছেন ৩টি উইকেট।
শুক্রবার কলম্বোর আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কার দেয়া ৩১৫ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪১.৪ ওভারে ২২৩ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন মুশফিকুর রহিম। ৬০ রান করেন সাব্বির রহমান। অন্যদের মধ্যে কেউ বলার মতো স্কোর করতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে লাসিথ মালিঙ্গা ৩টি, নুয়ান প্রদীপ ৩টি, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২টি ও লাহিরু কুমারা ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায়। মালিঙ্গার করা এই ওভারের পঞ্চম বলে বোল্ড হন তামিম। ৫ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি তিনি। অষ্টম ওভারে নুয়ান প্রদীপের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন মিথুন। ২১ বল খেলে ১০ রান করেন তিনি।
এর পরের ওভারে মালিঙ্গার বলে বোল্ড হন সৌম্য। ২২ বলে ১৫ রান করেন এই ওপেনার। তারপর মাহমুদউল্লাহ নেমে ১০ বলে ৩ রান করে ফিরে যান। দলীয় ৩৯ রানে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ১১১ রানে জুটি গড়েন সাব্বির রহমান। দলকে বিপদে রেখেই ফিরে যান সাব্বির। দলীয় ১৫০ রানে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ফার্নান্দোর হাতে ক্যাচ হন তিনি। ফেরার আগে ৫৬ বলে ৬০ রান করেন এই টাইগার ব্যাটসম্যান।
সাব্বির ফেরার পর মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মোসাদ্দেক হোসেন। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে মোসাদ্দেক রান আউট হয়ে যান। ১৬ বলে ১২ রান করেন তিনি। মোসাদ্দেক ফেরার পর মিরাজ নেমে করেন মাত্র ২ রান। সাত উইকেট পড়ে গেলেও মুশফিক লড়াই করে যাচ্ছিলেন। দলীয় ১৯৯ রানে প্রদীপের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এখানেই সব আশা আশা শেষ হয়ে যায়।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে কুশল পেরেরার সেঞ্চুরি এবং অন্যান্যদের ছোট ছোট অবদানের উপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩১৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের পক্ষে সেঞ্চুরি করেন কুশল পেরেরা। ১১১ রান করে আউট হন তিনি। ওয়ানডেতে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে শফিউল ইসলাম ৩টি, মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি, সৌম্য সরকার ১টি, রুবেল হোসেন ১টি ও মোস্তাফিজুর রহমান ২টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৯১ রানে জয়ী শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কা ইনিংস: ৩১৪/৮ (৫০ ওভার)
(অভিশকা ফার্নান্দো ৭, দিমুথ করুণারতেœ ৩৬, কুশল পেরেরা ১১১, কুশল মেন্ডিস ৪৩, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ৪৮, লাহিরু থিরিমান্নে ২৫, থিসারা পেরেরা ২, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ১৮, লাসিথ মালিঙ্গা ৬*, নুয়ান প্রদীপ ০*; শফিউল ইসলাম ৩/৬২, মেহেদী হাসান মিরাজ ১/৫৬, রুবেল হোসেন ১/৫৪, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/৪৫, মোস্তাফিজুর রহমান ২/৭৫, সৌম্য সরকার ১/১৭, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০/৪)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ২২৩ (৪১.৪ ওভার)
(তামিম ইকবাল ০, সৌম্য সরকার ১৫, মোহাম্মদ মিথুন ১০, মুশফিকুর রহিম ৬৭, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩, সাব্বির রহমান ৬০, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১২, মেহেদী হাসান মিরাজ ২, শফিউল ইসলাম ২, রুবেল হোসেন ৬*, মোস্তাফিজুর রহমান ১৮; লাসিথ মালিঙ্গা ৩/৩৮, নুয়ান প্রদীপ ৩/৫১, থিসারা পেরেরা ০/৩৬, লাহিরু কুমারা ১/৪৫, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২/৪৯)।
ম্যাচ সেরা: কুশল পেরেরা (শ্রীলঙ্কা)।