একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে :
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সুনামগঞ্জ জেলার নদ-নদীগুলোতে পানির বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হচ্ছে। পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক মৎস্য খামার। বাসা বাড়ীতে পানি প্রবেশ করায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে এই পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা চেয়েছেন মানুষ।
শুক্রবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা, কংস, জাদুকাটা, সুমেশ্বরীসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৪১৫ মিলিমিটার। সকালে সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার নবীনগর, ষোলঘর, কাজির পয়েন্ট, তেঘরিয়াঘাটসহ কয়েকটি নিচু এলাকাও বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জেলার সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের আনোয়ারপুর ও শক্তিয়ারখলা এলাকায় সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী জনসাধারণ।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বন্যার কারণে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সদর, দিরাই, শাল্লা, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। পাহাড়ি ঢলের পানিতে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বাদাঘাট ও উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বসতবাড়ি ও বিদ্যালয়ের উঠানে পানি উঠতে শুরু করেছে দুটি ইউনিয়নে। কোথাও কোথাও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢলে সীমান্ত সড়কের অনেকগুলো স্থান ভেঙে গেছে। দিরাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য খামারে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছেন মৎস্য খামারীরা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌলী (পওর-১) আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, সীমান্তের ওপারে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় সেই বৃষ্টির পানি সুনামগঞ্জের নদ-নদী দিয়ে নেমে আসছে। এতে জেলার সুরমা, কংস, জাদুকাটা, সুমেশ্বরীসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার পরিপ্রক্ষিতে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বন্যা মোকাবেলায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এবং উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে দুর্গত মানুষকে সহযোগিতার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে অবস্থানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগজনিত জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কন্ট্রোলরুমের ০৮৭১-৬১৩৭৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।