স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীতে ভুল অস্ত্রোপচারে সুফিয়া বেগম (৩৫) নামে এক মহিলার মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন তার স্বামী ও স্বজনরা। দরগাহ গেট এলাকার আনোয়ার জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। সুফিয়া বেগম মহানগর পুলিশে কর্মরত উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আবু সাঈদের স্ত্রী। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার শ্যামচরে।
মৃতের ভাই আব্দুল মছব্বির ভগ্নিপতির বরাত দিয়ে বলেন, জরায়ুতে টিউমার অপসারণের জন্য ডা. কিশোয়ার পারভীনের পরামর্শে সুফিয়াকে গত ২০ জুন বৃহস্পতিবার আনোয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, এটা নরমাল অপারেশন, রোগী একদিন পরই বাড়ি ফিরতে পারবেন। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেও স্বাভাবিক ছিল আমার বোন। কিন্তু অস্ত্রপচারকালে জরায়ুর টিউমার অপসারণ করতে গিয়ে চিকিৎসক পায়খানার থলি কেটে ফেলেন। পরে, দ্বিতীয় দফা অস্ত্রপচার করার পর বুধবার সুফিয়ার অবস্থার অবনতি হলে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। সেখানে গতকাল বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ভোরে মারা যান সুফিয়া।
এ বিষয়ে ডা. কিশোয়ার পারভীন বলেন, ওই রোগীর জরায়ু ও পায়খানার থলি একসঙ্গে লেগে ছিল। অস্ত্রোপচারের পর এক সঙ্গে লেগে যাওয়াটা স্বাভাবিক। ওটা হয়েছে আগে রোগীর অস্ত্রোপচারের কারণে। এর কারণে ওই মহিলা সন্তান জন্ম দিতে পারছিলেন না। এগুলো আলাদা করে সেলাই করে দিয়েছি। পরে, দু’দিন রোগী ভালো ছিল। কিন্তু দু’দিন পর সেলাই দিয়ে পুঁজ আসছিল। যে কারণে ভেতরের সেলাই খুলে যায়। পরে, সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জানে আলম মিলে সেলাই খুলে পুঁজ পরিষ্কার করে দেই। তিনি বলেন, অস্ত্রোপচারের পর পুরো দেড় দিন রোগী ভালো ছিল। আমরা তাকে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেই। পরে, রক্ত দিলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রেশার ওঠানামা শুরু করে। হৃদস্পন্দন বেড়ে গিয়ে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হলে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রাখার পরামর্শ দেই। ওখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে তিনি মারা যান।
আনোয়ার জেনারেল হাসপাতালের মহা-ব্যবস্থাপক সাথি আক্তার বলেন, সুফিয়া বেগম গত ২০ জুন হাসপাতালের তৃতীয় তলার ৩০৯ নাম্বার কেবিনে ভর্তি হন। পরেরদিন ২১ জুন শুক্রবার তার অস্ত্রোপচার হয়। রোগীর স্বামীর অনুমতিতেই অস্ত্রপচার হয়েছে। এরপর রক্ত দিতে গেলে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। হাসপাতালে আইসিইউ সাপোর্ট না থাকায় রোগীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে ওই রোগী মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি।