একটি গাভীর জন্য দেড় লক্ষাধিক বিদ্যুৎ গ্রাহকের চরম ভোগান্তি

18

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ গ্রীড এলাকার ধানি জমিতে বিদ্যুতায়িত হয়ে একটি গাভী মারা যাওয়ার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে গেলে মৃত গাভীর দাম দাবি করে গ্রামবাসীরা বিদ্যুৎ কর্মীদের কাজে বাধা প্রদান করে। গ্রামবাসীর বাধার কারণে রোববার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টানা ৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ফলে কমলগঞ্জ, কুলাউড়া জুড়ি ও বড়লেখা চার উপজেলার ১ লাখ ৫৯ হাজার গ্রাহকরা চরম বোগান্তির মাঝে পড়েছিলেন।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকাল ৩টায় কুলাউড়া উপজেলার চাতলগাঁও গ্রাম এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) বিদ্যুৎ গ্রীড সংলগ্ন ধানি জমিতে একটি গাভী বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। এ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎকর্মীরা দ্রুত গ্রীড এলাকা গিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে গেলে মৃত গাভীর দাম দাবি করে গ্রামবাসীরা ধাওয়া করে বিদ্যুৎ কর্মীদের তাড়িয়ে দেয়। এর পর থেকে পবিস কমলগঞ্জ কার্যালয়ের অধীন কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার ৮৯ হাজার গ্রাহক, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলার ৭০ হাজার গ্রাহক মিলিয়ে ১ লাখ ৫৯ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
পবিস কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম মোবারক হোসেন সরকার বলেন, সম্ভবত চাতলাগাঁও গ্রামে বৈদ্যূতিক খুটির টানা তারের সাথে গাভীটি বেধে রাখা হয়েছিল। গাভীটি নাড়াছড়া করলে কোনভাবে টানা তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে গাভীটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এর ফলে গ্রীড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ কর্মীরা গ্রীডে গিয়ে মেরামত কাজ করার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ধাওয়া করে বিদ্যুৎকর্মীদের তাড়িয়ে দেয়।
পবিস কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের এজি এম (কম) ওবায়দুল হক বলেন, চার উপজেলার দেড় লক্ষাধিক গ্রাহের ভোগান্তির কথা ভেবে আগে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করে পরে সামাজিক বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত তা তারা মেনে নিবেন বলে অনুরোধ করলেও চাতলগাঁও-এর বিক্ষুব্ধ লোকজন এ অনুরোধ মেনে নেননি।
এ বিষয়টি নিয়ে কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফি আহমদ সলমানের সহযোগিতা কামনা করা হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফি আহমদ সলামানের নির্দেশনায় কুলাউড়া পৌরসভার একজন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় ঘটনাস্থলেই সামাজিক বৈঠক বসে। টানা কয়েক ঘন্টার বৈঠক শেষে মৃত গাভীর মূল্য বাবদ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতি পূরণ প্রদানের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা বিদ্যুৎ কর্মীদের কাজের উপর থেকে বাধা প্রত্যাহার করে। টানা ৬ ঘন্টা পর আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
শমসেরনগরের কৃষক নেতা সিদ্দেক আলী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, চাতলাগাঁও-এর মানুষজনের এ আচরণ মেনে নেওয়ার মত নয়। তারা যা করেছে তা সম্পূর্ণরূপে অন্যায় করেছে।