ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ওসমানীনগরের তাজপুর ইউনিয়নের রাখালগঞ্জ বাজারে রাতের আঁধারে দু’টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এতে দু’টি পরিবারের মধ্যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পুড়ে যাওয়া দু’টি দোকানের ১৩ জন কর্মচারি বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। থানা পুলিশসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও পরিকল্পিত এঘটনার সাথে জড়িতরা এখনও অধরা রয়েছে। এমনকি এঘটনায় থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও পুুলিশ মামলাও রেকর্ড করেনি বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এ বিষয়ে তারা লিখিত অভিযোগ পাননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নাগের কোনা গ্রামের ছাবির মিয়ার ছেলে মখলুছ মিয়ার মালিকানাধীন রাখালগঞ্জ বাজারস্থ মিলি ডেকোরেটার্সে বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব শত্র“তার জের ধরে প্রতিপক্ষরা আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে মোটর সাইকেল, জেনরেটার, কম্পিউটার, চেয়ার-টেবিল থালা-বাসনসহ প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার মালামাল পুড়ে যায়। এ সময় আগুনের লেলিহান শিখায় মিলি ডেকোরেটার্সের পাশ্ববর্তী জাহিদ টি স্টলও পুড়ে যায়। টি স্টলের ক্যাশ বাক্সে থাকা ১৫ হাজার টাকা, ফ্রিজ, টিভিসহ মূল্যবান মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ওই টি স্টলে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফিন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করলেও ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
মিলি ডেকোরেটার্সের মালিক মখলুছ মিয়ার স্ত্রী রবিরুন নেছা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, গত ১৭ মে প্রতিবেশেী কাওসার আমার ছেলে জুবেলকে ঢিল ছুঁড়ে এবং দিলু মিয়ার নির্দেশে কাওছার জুবেলের ওপর হামলা করে। এর প্রতিবাদ করায় দিলু মিয়া, মিজানুর, নুর উদ্দিন, খেলু মিয়া, সাবুল মিয়া, ও আলাউদ্দিন তাদের লোকজন দিয়ে আমার ছেলে রাসেলের ওপর হামলা করে তাকে নদীতে ফলে দেয়া হয়। এরপর মিজানুর ও তার সহযোগীদের ভয়ে আমার স্বামী-সন্তান যখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তখন আমার পরিবারকে নি:স্ব করে দিতে বুধবার দিবাগত রাতে প্রতিপক্ষরা আমার স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে সব শেষ করে দিয়েছে। আগুনের খবর পেয়ে আমরা বাজারে যাই। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর আলাউদ্দিন ও মিজানুরসহ তাদের সহযোগীদের আমি পালিয়ে যেতে দেখেছি।
জাহিদ টি স্টলের প্রেপাইটার জাহিদুর রহমান বলেন, আমি পার্শ্ববর্তী একটি ব্রিক ফিল্ডে শ্রমিকের কাজ করতাম। বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যবসা শুরু করেছি। ঈদ সামনে রখে দোকানে মালামাল তুলেছিলাম। কিন্তু দোকানে মালামাল তোলার ৪ দিনের মাথায় আমার সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গেলে।
ওসমানীনগর ফায়ার সর্ভিসের ইনচার্জ রাজা মিয়া বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। আগুনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা মোটরসাইকেল, জেনারেটরসহ সম্পন্ন মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যেহেতু পরিকল্পিত ভাবে অগ্নিকান্ডের অভিযোগ ওঠেছে তাই পুলিশ প্রশাসনকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম আল মামুন অগ্নিকান্ডের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটা হৃদয়বিদারক। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।