কাজিরবাজার ডেস্ক :
সকল পাবলিক পরীক্ষায় সাফল্যের যে অব্যাহত ঊর্ধ্বগতি চলছে এভাবে চলতে থাকলে শীঘ্রই শতভাগে পৌঁছে যাবে পাসের হার। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনীতে পাস এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে প্রায় শতভাগে। পাল্লা দিয়ে এগোচ্ছে এসএসসি ও এইচএসসিও। বিশ^বিদ্যালয় থেকেও সাফল্য নিয়ে বের হচ্ছেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী। কিন্তু শিক্ষার মানের চিত্রটা আসলে কী? এ প্রশ্নে উদ্বিগ্ন দেশের শিক্ষাবিদ, আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা এমনকি খোদ শিক্ষামন্ত্রীও। প্রত্যেকেই বলছেন, শিক্ষায় সংখ্যাগত বিস্তৃতি ঘটলেও প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষার মানে বিরাজ করছে অরাজকতা। মান বিচারে এশিয়ায় সবচেয়ে নিচে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক পরিমন্ডলে অবস্থান তলানিতে। আন্তর্জাতিক জরিপগুলোতে এক হাজার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাতেও আসছে না শিক্ষার গুণগত মানের সঙ্কটে চিন্তিত এখন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিও। তিনি বলছেন, মানোন্নয়নে আমরা পিছিয়ে। প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী পাস করে বের হচ্ছে। কিন্তু গুণগত কোন পরিবর্তন চোখে পড়ে না। যে কোন ভাইবার বোর্ডে বসলেই দেখা যায় অনর্গল ইংরেজীতে কথা বলছে, প্রযুক্তিতে নিজের দখল এনেছে কিন্তু মৌলিক শিক্ষা, গুণগত মানে পিছিয়ে তারা। এরাই মূলত আমাদের জন্য বোঝা। তবে মন্ত্রীর আশা, বর্তমান দুরবস্থা থেকে শীঘ্রই বেরিয়ে আসবে বাংলাদেশ। উচ্চ শিক্ষা পর্যাপ্ত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে অবশ্যই মানসম্পন্ন হবে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, গুণগত মানোন্নয়নের বিষয়টি বছরের পর বছর উপেক্ষিত হওয়ায় পুরো শিক্ষাব্যবস্থাই এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। ভর্তি ও পাসের হার বাড়লেও সঙ্কটে আছে শিক্ষার মান। উচ্চ শিক্ষার মান নিশ্চিতের আশায় যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে সেই বাংলাদেশ এ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদও বলছেন, বাজারের কাটতি দেখে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের মনের মতো করে ডিপার্টমেন্ট খুলতে। এগুলোতে তাদের নেই পূর্ব অভিজ্ঞতা, পড়াশোনা। এর লাগাম টেনে ধরার এখনই সময়। দ্রুত এ বিষয়ে সরকারের বিশেষ নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শিক্ষায় আমাদের ফ্যাসিলিটি আর শিক্ষকদের মান বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। উচ্চ শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তা শুধু উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে নয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকেও তা বাড়াতে হবে। শুধুমাত্র উচ্চ শিক্ষায় এসে মান বাড়ালে চলবে না। প্রাথমিক-মাধ্যমিক পর্যায়ে মান বাড়ানো না গেলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং হঠাৎ করে বাড়াতে পারব না। আর উচ্চ শিক্ষায় মান ভাল করতে হলে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষক নিয়োগে বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো দলীয় ও প্রশাসনের প্রিয়পাত্র না দেখে মেধা ও যোগ্যদের স্থান দিতে হবে।
মানের প্রশ্ন প্রাথমিক থেকেই : প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় এখন পাসের হার শতভাগের কাছাকাছি। গত কয়েক বছরের ফলের চিত্র বলে দিচ্ছে আগামী দুটি পরীক্ষার পরই হয়ত ফেল করবে না কোন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ পাসের হার হবে শতভাগ। প্রাথমিক স্কুলে ভর্তির হারও চলে এসেছে প্রায় শতভাগে। তবে সংখ্যাগত সূচকে মেধার বিস্ফোরণ ঘটলেও প্রশ্নের মুখেই পড়ে আছে এ স্তরের শিক্ষার মান। গুণগত মানোন্নয়নের বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে বছরের পর বছর।
তবে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান নিয়ে বহুবার উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিবেদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সম্প্রতি প্রকাশ করা সর্বশেষ প্রতিবেদনেও সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশ তার সব শিশুকে প্রাথমিক স্কুলে নিয়ে আসতে সক্ষম হলেও শিক্ষার গুণগত মান এখনও গভীর উদ্বেগের পর্যায়ে রয়েছে। এই অবস্থায় শিক্ষার সঙ্কট দূরীকরণে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভাল শিক্ষার জন্য বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
‘ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট ২০১৮: লার্নিং টু রিয়ালাইজ এডুকেশন্স প্রমিজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের ১১ বছরের মধ্যে সাড়ে চার বছর পিছিয়ে থাকছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। গুণগত শিক্ষাব্যবস্থা ও মানসম্মত স্কুলের অভাবেই মূলত তারা পিছিয়ে রয়েছে। অথচ দেশে প্রাথমিকে যে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে তা সাড়ে ছয় বছরেই অর্জন করা সম্ভব। প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের যা শেখানো হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয় এবং গুণগত মান ভাল নয়। মানসম্মত স্কুলের অভাবে তা হচ্ছে।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন পাটওয়ারী বলছিলেন, আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্র বিস্তৃত হয়েছে ব্যাপক। বিদ্যালয়ে ভর্তির হার, নারী- পুরুষ সমতা, নারী শিক্ষায় অগ্রগতি, ঝরে পড়ার হার কমে যাওয়াসহ বহু ক্ষেত্রেই এসেছে সফলতা। তবে শিক্ষার মানে কোন উন্নতি নেই। অ আ ক খ শেখানোর মধ্যেই পড়ে আছে এ শিক্ষাটি। শিক্ষা প্রশাসনের ব্যাপক গাফিলতি, মনিটরিংয়ের অভাবকে সঙ্কট অভিহিত করে তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। এই বিষয়টিতে সরকারকে নজর দিতে হবে। অন্যথায় মানের পরিবর্তন হবে না।
জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. শেখ ইকরামুল কবির বলছিলেন, এ শিক্ষার প্রসার হয়েছে সংখ্যায়, মানে নয়। দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষকের অভাব, নামকাওয়াস্তে মনিটরিং, শিক্ষক সঙ্কটসহ বহুমুখী সঙ্কট এখানে। প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে একের পর এক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাদ দেয়ার পক্ষে এ শিক্ষাবিদ। বলেন, এ শিক্ষাকে পরীক্ষা নির্ভর করে ফেলা হয়েছে। শিক্ষানীতি অনুসারে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীত করার বিষয়টিতে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) এ মহাপরিচালক।
মাধ্যমিকেও সঙ্কট : খুব ভাল স্কুলের সংখ্যা বাড়লেও সেই সংখ্যা এখনও দুই অঙ্কের কোটায় পৌঁছায়নি। খোদ সরকারের এক মূল্যায়ন প্রতিবেদন বলছে, খুব ভাল মানের অর্থাৎ ‘এ’ ক্যাটাগরির স্কুলের সংখ্যা ১০ শতাংশের নিচে। ‘বি’ ক্যাটাগরির মোটামুটি ভাল স্কুলের সংখ্যা ৫০ শতাংশ। এছাড়া ‘ডি‘ ক্যাটাগরির দুর্বল ও ‘ই’ ক্যাটাগরির অকার্যকর স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৮ শতাংশ। এছাড়া পাহাড়ী এলাকার প্রায় আট শতাংশ স্কুল চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। হাওড় এলাকার ছয়, উপকূলীয় এলাকার ছয়, নদীমাতৃক এলাকার নয় এবং সমতল এলাকায় চ্যাঞ্জের মুখে রয়েছে অনেক স্কুল।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের স্কুলভিত্তিক এক স্ব-মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। দেশে ভাল মানের স্কুল বাড়ছে না- শিক্ষাবিদদের এমন উদ্বেগকেই সত্য প্রমাণ করে মূল্যায়নে এ তথ্য। রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশে মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণীর ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থী দক্ষতায় এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে রয়েছে ১৯ শতাংশ শিক্ষার্থী। দক্ষতা অর্জনে মধ্যম অব্স্থায় রয়েছে ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। তবে শহরের তুলনায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা তুলনামূলকভাবে আগের চেয়ে বেশি দক্ষতা অর্জন করেছে।
মহাসঙ্কটে বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো উচ্চ শিক্ষার মান : ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রকাশিত দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ‘হাই ইউনিভার্সিটি এনরোলমেন্ট, লো গ্র্যাজুয়েট এমপ্লয়মেন্ট’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে গত এক দশকে উচ্চ শিক্ষার হার বেড়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় সরকারী মনোযোগ এর কারণ। ব্রিটিশ কাউন্সিলের জন্য তৈরি এ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ শিক্ষার প্রবৃদ্ধি বাড়লেও দক্ষ জনবলের তীব্র সঙ্কট রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ইংরেজী ভাষায় দখল কম, মৌলিক জ্ঞানের অভাব, কারিগরি জ্ঞান ও সমস্যা সমাধানে দক্ষতার দুর্বলতা থাকায় তারা জনবল সঙ্কট পূরণে অবদান রাখতে পারছেন না।
এক বছর আগে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল সৌদি আরবের জেদ্দাভিত্তিক সেন্টার ফর ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংস (সিডব্লিউইউআর)। বিশে^ও বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় নিয়ে তাদের এ র্যাঙ্কিং সাড়া ফেলেছিল সর্বত্র।
তবে ওই তালিকায় বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান হয়নি বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের। সার্কভুক্ত দেশের মধ্যে ভারতের ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় এ তালিকায় স্থান পেয়েছিল। সম্প্রতি এ ধরনের একটি র্যাঙ্কিং প্রতিষ্ঠান সৌদি আরবের জেদ্দাভিত্তিক সেন্টার ফর ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংস (সিডব্লিউইউআর) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ে তাদের র্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে। শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বেশিরভাগই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
এ তালিকা তৈরিতে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব বিষয় বিবেচনা করেছে তার মধ্যে ছিল শিক্ষার মান, শিক্ষাজীবন শেষে চাকরি, শিক্ষকদের যোগ্যতা, প্রকাশনা, গবেষণার প্রভাব, গবেষণার মান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাব ও পেটেন্টের সংখ্যা। নতুন এ র্যাঙ্কিং অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
এক বছর পর গেল এক সপ্তাহ আগে লন্ডনভিত্তিক সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ তাদের পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী এশিয়ার ৪১৭টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানেও দেখা গেল, তালিকায় বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠদান, গবেষণা, জ্ঞান আদান-প্রদান এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি-এই চারটি মৌলিক বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত জরিপে নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আছে। নাম আছে শ্রীলঙ্কার ‘ইউনিভার্সিটি অব কলম্বো’র।
উচ্চ শিক্ষার মহাসঙ্কট সমাধানে শিক্ষাবিদদের বিশেষ সুপারিশ ॥ কেন এ অবস্থা দেশের উচ্চ শিক্ষাঙ্গনের? সঙ্কট সমাধানের উপায়ই বা কী? এ বিষয়ে কথা বলেছেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা। তারা এখন উদ্বিগ্ন দেশের উচ্চ শিক্ষার এ সঙ্কট নিয়ে। প্রায় প্রত্যেকেই এক বাক্যে বলে দিয়েছেন যে ধরনের শিক্ষা বিশ^বিদ্যালয়গুলোয় দেয়া হচ্ছে তাতে র্যাঙ্কিংয়ের চিত্রটা অস্বাভাবিক নয়। তবে কেউ কেউ শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেও র্যাঙ্কিংয়ের চিত্রকে সঠিক বলে মনে করেন না। কেউ কেউ বলছেন, র্যাঙ্কিংকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনের তথ্য সংগ্রহ করে অথচ দেশের কোন প্রতিষ্ঠানের তথ্যই অনলাইনে শতভাগ আপডেট থাকে না। ফলে বিশ^বিদ্যালয়ের ভাল অনেক তথ্য জানতেই পারে না আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে মোটাদাগে সকলেই উচ্চ শিক্ষার মানের সঙ্কটের কথাই বলছেন একবাক্যে।
বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বৈঠকে বসেছিল দেশের শিক্ষাবিদদের পরামর্শ নিতে। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের উদ্যোগেই বসেছিল এ বৈঠক। যেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের। বৈঠকে দেশের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশিষ্টজনরা। পাসের হার বাড়ছে, কিন্তু মান পড়ে যাচ্ছেÑ মন্তব্য করে তারা বলেছিলেন, পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার করা উচিত। ভাবার সময় হয়েছে গ্রেডিং পদ্ধতি নিয়ে।
ওই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শেখ ইকরামুল কবীরসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেল মেয়াদের ওই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের তেমন কোন সুপারিশই বাস্তবায়ন হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটেই সম্প্রতি আবার আলোচনায় উচ্চ শিক্ষার মান।
ইমেরিটাস অধ্যাপক শিক্ষাবিদ ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় হতাশা প্রকাশ করে বলছিলেন, বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় ঠাঁই না পাওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এখন ব্যস্ত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়া নিয়ে। সঙ্গত কারণেই উচ্চ শিক্ষার মান কমছে।
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সত্যি বলতে কী, আমরা এখনও আমাদের শিক্ষার উপযুক্ত কাঠামোই দাঁড় করাতে পারিনি। তা সেটা প্রাথমিক স্তরে হোক আর প্রাইমারি স্তরেই হোক। শিক্ষার সর্বনাশ ঘটেছে অতিরিক্ত পাবলিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে। কোন প্রকার সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করেই একের পর এক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। তাতে করে গোটা শিক্ষার আয়োজন পরীক্ষা নির্ভর হয়ে পড়ছে। যেটুকু পড়লে পরীক্ষায় ভাল করা যাবে সেটুকু নিয়েই ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। ক্লাসে মন নেই, গোটা বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। আর শিক্ষক, অভিভাবকরাও তাতেই আটকে আছেন। এই ধারণা কোনভাবেই শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলছিলেন, তারা (টাইমস হায়ার এডুকেশন) যেসব সূচকের ওপর ভিত্তি করে তালিকাটি দিয়েছে তাতে তারা সেগুলো এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পায়নি। কিন্তু, আমাদের বক্তব্য হচ্ছে- আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা ওভারঅল যে মানের, তা বিশ্বমানের চেয়ে খুব বেশি যে পেছনে তা নয়। আমাদের ছেলেমেয়েরাই অন্যান্য নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাচ্ছে। সেখানে তারা প্রতিযোগিতা করে ভর্তি হচ্ছে। সেখান থেকে ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট করে বের হয়ে আসছে। এমন চিত্র প্রতিবছরই আমরা দেখতে পাই। আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের মান যদি র্যাঙ্কিংয়ের ক্যাটাগরিতে নিয়ে আসি তাহলে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যাব বলে আমার বিশ্বাস। কিন্তু, অবকাঠামোর দিক থেকে- বাজেট বরাদ্দ, ল্যাবরেটরি-লাইব্রেরি সুবিধা- এগুলোর দিক থেকে আমরা বিশ্বমানের চেয়ে পিছিয়ে আছি, সেটি অস্বীকার করা যাবে না। এই সীমিত সুযোগ দিয়ে আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের যে পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি সেটি একটি র্যাঙ্কিংয়ের দাবি রাখে।
তিনি আরও বলেছেন, রাতারাতি তো কোন কিছু পরিবর্তন করা যায় না। মোটামুটিভাবে এখন আগের থেকে ভাল অবস্থায় আমরা যেতে চেষ্টা করব। আমাদের ফ্যাসিলিটি আর শিক্ষকদের মান বাড়ানোর জন্যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তা শুধু উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে নয়। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাড়াতে হবে। শুধু উচ্চ শিক্ষায় এসে মান বাড়ালে চলবে না। প্রাথমিক-মাধ্যমিক পর্যায়ে মান বাড়ানো না গেলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং হঠাৎ করে বাড়াতে পারব না। শিক্ষা জাতির মেরুদ- কিন্তু শিক্ষার মেরুদ- হচ্ছে শিক্ষকরা। সেই শিক্ষকতা পেশায় মেধাবী ছেলেমেয়েদের আকর্ষণ করানোর জন্যে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া দরকার তা তো দেয়া যাচ্ছে না বা দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, তহবিলের একটা সঙ্কট থেকে যায়। সমসাময়িককালে তা অনেক বাড়ানো হয়েছে। এখন মান বাড়ানোর জন্যে গুরুত্ব বেশি দেয়া দরকার। আন্তর্জাতিকমানের সুবিধাগুলো দেয়ার জন্যে যে তহবিল দরকার সেটির দিক থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম। আন্তর্জাতিকমানের সুবিধা পেতে হলে আন্তর্জাতিক মান দিতে হবে। সেটির দিক থেকে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মতে, এশিয়ার মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই এর পেছনে বহু কারণ রয়েছে। এক নম্বর কারণ হচ্ছে, উচ্চ শিক্ষায় আমাদের বাজেট দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভবত সবচেয়ে কম।
আর শিক্ষা বাজেট যে ২.১ শতাংশ রয়েছে সেটিও দক্ষিণ এশিয়ার মান থেকে অনেক পিছিয়ে। আমরা যদি গবেষণায় ব্যয় বৃদ্ধি না করি, সেখানে শুধু ক্লাসের পাঠদানই র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান নিশ্চিত করতে পারে না। এটি অনেককিছুর সমষ্টি। পাঠদানের মানের পাশাপাশি শিক্ষকদের যোগ্যতাও দেখতে হয়। শিক্ষকদের মানসম্পন্ন প্রকাশনাও থাকতে হয়। পিএইচডি কোথা থেকে করা হলো, থিসিসের বিষয়টা কী- সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। তারপর পাঠদানের মানও খুব গুরুত্বপূর্ণ। র্যাঙ্কিংয়ের সময় সেগুলোও বিবেচনায় আসে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বরাদ্দ দেয়া হয় সেখানে গবেষণা খাতে কত টাকা থাকে সেটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সুযোগ-সুবিধা কেমন রয়েছে? অর্থাৎ, গ্রন্থাগারে কী কী বই রয়েছে। আমরা প্রতিবছর কি কি বই কিনছি তারও একটি তালিকা অনলাইনে চলে যায়। দেখা যায় যে আমরা পাঁচ-ছয় বছর পর পর বই কিনি। খুব কম বিভাগ রয়েছে যারা তাদের বইয়ের তালিকা হালনাগাদ করতে পারে। কারণ, টাকা বরাদ্দ অনেক কম থাকে।
তিনি বলেছেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের কথা বলতে পারি- বই একবার কিনলে দুই/তিন বছরের মধ্যে আবার বই কেনার টাকা পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। আর যদি ২০টি বইয়ের তালিকা দেই তাহলে পাঁচটি বই পাই। আমাদের গ্রন্থাগারের সুযোগ-সুবিধা কেমন রয়েছে? প্রত্যেক বিভাগের কি পর্যাপ্ত গ্রন্থাগার রয়েছে? আমাদের শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে যায় কিন্তু, তারা সেখানে যায় বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার জন্যে। যারা র্যাঙ্কিংয়ের কাজ করেন এসব তথ্য তাদের কাছে থাকে। আমাদের শিক্ষকদের যে নিয়োগ দেয়া হয় যদি সেখানে রাজনীতি থাকে তাহলে র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সেটিও একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের সংখ্যা বেশি। প্রভাষকের সংখ্যা কম।
অধ্যাপকদের যোগ্যতা যাচাই করলে দেখা যাবে যে তিনভাগের একভাগ অধ্যাপকের কোন পিএইচডি নেই। পিএইচডি গবেষণা কেমন হচ্ছে সেটিও দেখতে হবে। বিজ্ঞান অনুষদের গবেষণাগার হালনাগাদ করা হয়েছে- তা তো না। চার-পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্যগুলোর কোন স্ট্যান্ডার্ড নেই। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ নেই। সেটিও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। কো-কারিকুলাম এ্যাক্টিভিটিস কীভাবে হয়, শিক্ষার্থীদের যেসব কাউন্সিল থাকে সেগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে কিনা, যেমন অক্সফোর্ড ডিবেট ইউনিয়ন রয়েছে এবং সেটির মতো স্ট্রং বডি মনে হয় ব্রিটিশ পার্লামেন্টও না। আমাদের সেগুলো রয়েছে কি না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ শেখাচ্ছে কিনা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত কি রকম। ক্লাস আওয়ার কতটুকু এ রকম অনেককিছু রয়েছে যা বিবেচনায় আনতে হয়।
এ শিক্ষাবিদও মনে করেন, প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় উন্নতি না হলে মাধ্যমিকের উন্নতি হবে না। এইট-নাইনের ইংরেজীজ্ঞান নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে। তাদের মানসিক বিকাশও সে রকম থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও তারা হৈহৈ-চিৎকার করছে, দৌড়াদৌড়ি করছে যা সিক্স-সেভেনে, এইট-নাইনের ছেলেমেয়েরা করে থাকে। এ রকম দৃশ্য নেপালের বিশ্ববিদ্যালয়েও দেখা যায় না। সেজন্য প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে শক্ত করতে হবে। আমাদের ২০১০ সালের শিক্ষানীতিকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনটি ধারায় বিভক্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে যতটা সম্ভব একটি ধারায় নিয়ে আসতে হবে। মাদ্রাসা থাকবে কিন্তু তাদেরকে বিজ্ঞান, কম্পিউটার শেখাতে হবে। এটি সম্ভব হলে আমাদের ফিডার সিস্টেমটা অনেক শক্ত হয়ে যাবে।
তারপর আসতে হবে কলেজের শিক্ষাব্যবস্থায়। এটিকে বিলুপ্ত করে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় রাখতে হবে। সেখানে কারিগরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সিলেক্টেড এডুকেশন দেয়া হবে। সবার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার প্রয়োজন নেই। এটি শুনলে হয়ত খারাপ লাগে। কিন্তু, পৃথিবীর কোথাও এমন ব্যবস্থা নেই। শিক্ষকদের রাজনীতি থেকে বিমুখ হতে হবে। রাজনীতি করলে করবেন আদর্শের রাজনীতি। এরপর যা করতে হবে তা হলো- বাজেট বাড়াতে হবে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে বলেছিলেন আমাদের শিক্ষা বাজেট জিডিপির ৪ শতাংশ হতে হবে। আমরা এখনও তা করতে পারিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন কথা বলেছেন র্যাঙ্কিং ইস্যু নিয়ে। তিনি বলছেন, এশিয়ার সেরা ৪১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামও নেই। যেখানে শ্রীলঙ্কা ও নেপালেরও নাম আছে। আর পাকিস্তানের তো আছে ৯টি। অথচ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যার দিক থেকে নেপাল, শ্রীলঙ্কা তো বটেই এমনকি পাকিস্তানকেও ছাড়িয়ে যাব আমরা। প্রথমেই প্রশ্ন আসতে পারে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই তালিকায় নেই কেন? এই প্রশ্নের উত্তরও হবে প্রশ্ন দিয়ে, থাকবে কেন? যে যে কারণে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ হয়ে ওঠে তার কোন চিহ্ন কি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত?
এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় কেন বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই- এর অনেক কারণ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তো বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চলছে না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বায়নের ব্যাপার থাকে। যেখানে বিদেশী ছাত্র থাকবে। মাল্টিকালচারাল ব্যবস্থা থাকবে। বিদেশী শিক্ষক থাকবে। আমাদের দেশে শিক্ষকদের গবেষণা নেই বললেই চলে। আমাদের অধ্যাপকদের যোগ্যতা নিয়ে বিদেশে একজন ব্যক্তি সহকারী অধ্যাপক হতে পারেন না। এরকম পরিস্থিতি যদি হয় তাহলে আমরা কিভাবে র্যাঙ্কিংয়ে আসব?
বাংলাদেশ এ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ মানের সঙ্কটে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষার মান নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশে প্রশ্ন আছে। দিনকে দিন সার্টিফিকেট মূল্যায়নে পিছিয়ে পড়েছি আমরা। এর মূল কারণ হলো গবেষণাহীন, সেকেলে শিক্ষা, অগভীর ও অগোছালো শিক্ষা পদ্ধতি। শৃঙ্খলা ও মানোন্ননে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের তথ্যমতে, উচ্চশিক্ষা মানের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিচে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। আর বৈশ্বিক পরিম-লে উচ্চ শিক্ষার মানের দিক দিয়ে ১৩৬ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪ তম। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে ভারত। বৈশ্বিক অবস্থানে ভারত ২৯তম। বাকি দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৪০, পাকিস্তান ৭১ ও নেপালের অবস্থান ৭৭তম। এটি সত্যিই উদ্বেগজনক চিত্র। স্বাধীনতার এতদিন পরও উচ্চ শিক্ষার তেমন গুরুত্ব বাড়েনি এদেশে। এ খাতে চোখ দেয়নি কেউই।