হত্যা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন, একজন খালাস

14

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর মাছুদীঘিরপারে ফরহাদ হোসেন (১৬) হত্যা মামলায় ৩ যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেটের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো: শরীফ উদ্দিন এ রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে, ওসমানীনগর থানার রনাগলপুর গ্রামের নওয়াব আলীর পুত্র ফয়ছল আহমদ (২০), সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার থানার দূর্গাপুর গ্রামের শৈলেন্দ্র দাসের পুত্র অমল কুমার দাস (২৮) ও ঢাকা জেলার কদমতলা থানার শ্যামপুর পালপাড়ার হরিপদ দাসের পুত্র সুমন চন্দ্র দাস (২৮) এবং খালাসপ্রাপ্ত নগরীর খাসদবীরের মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র ফরহাদ আহমদ (১৮)। রায় ঘোষণার সময় শুধু খালাসপ্রাপ্ত আসামী ফরহাদ আহমদ আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও যাবজ্জীবন সকল সাজাপ্রাপ্ত আসামী পলাতক ছিলো।
আদালত ও মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতের যে কোন সময়ে নগরীর মাছুদীঘিরপারস্থ প্রবাহ ৬০ নং বাসার একটি কক্ষে ফরহাদ আহমদকে মোবাইল ছিনতাই ঘটনার জের ধরে উক্ত আসামীরা নির্মম ও নৃশংসভাবে খুন করে। পরে আসামীরা ফরহাদের লাশ একটি কাথাঁ দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানার লামাবাজার ফাঁড়ি পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। নিহত ফরহাদ আহমদের বাড়ি জামালপুর জেলা শরিষাবাড়ী থানার বাইশি দক্ষিণপাড়ার আজিম উদ্দিনের পুত্র। এ ঘটনায় লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খসরুল আলম বাদল অজ্ঞাতনামা আসামী করে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-৯ (০৭-০৯-২০১২)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে কোতোয়ালী থানার এস.এম. রকিবুল হক ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারী ৪ আসামীকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (নং-১৮) দাখিল করেন এবং ২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারী থেকে আদালত এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু করেন।
দীর্ঘ শুনানী ও ১৬ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী ফরহাদ আহমদ, অমল কুমার দাস ও সুমন চন্দ্র দাসকে দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অপর আসামী ফরহাদ আহমদের দোষ আদালতে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ পিপি এডভোকেট মো: মফুর আলী ও আসামীপক্ষে এডভোকেট মোচ্ছা: লাভলী খাতুন, এডভোকেট আব্দুল সোবহান ও এডভোকেট মো: আব্দুল মজিদ খান মামলাটি পরিচালনা করেন।