একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জের হাওরের ধানকাটা শ্রমিকের অভাবে পাকা ধান কাটতে পারেনি কৃষকরা। বিভিন্ন হাওরে ৭০-৭৫ শতাংশ ধান কাটা হলেও তা প্রক্রিয়াজাত করতে পারেনি কৃষকরা হঠাৎ করে একদিনের ঝড়োবৃষ্টিতে পাউবোর দাসারাভাবে নির্মিত বাঁধ উপচে পানির নিচে চলেগেছে কৃষকের স্বপ্ন। সাড়াদেশে ফণীর প্রভাবে ঝড়োবৃষ্টি হওয়ায় শনিবার রাতে বাঁধ উপচে ডুবেগেছে সুনামগঞ্জের পাঁচটি হাওরের কৃষকরে ২৫-৩০ শতাংশ ধান। হাওরডুবির জন্য দায়িদের বিচারের দাবিতে সোমবার সুনামগঞ্জ আলফাত উদ্দিন স্কয়ারে মানববন্ধন ঘোষণা করেছে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি।
জানান যায়, শনিবার রাতে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তাহিরপুর উপজেলার শনি ও মাটিয়ান হাওর, জামালগঞ্জের হালির হাওর, ধর্মপাশার সোনামোড়ল হাওর এবং সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওর। ডুবে ডাওয়া জমির হিসেব নিয়ে কৃষক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বক্তব্যে রয়েছে অনেক ফারাক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক দপ্তরাদেশে বলা হয় গত ১ মে হাওরের ৯০ শতাংশ জমির ধান কর্তন করা হয়। পরবর্তীতে কৃষকগণ অবশিষ্ট পাকা ধান কর্তন অব্যাহত রাখেন এবং অধিকাংশ হাওরের সকল ধান কর্তন করা সম্ভব হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ করে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধ উপচে পানি শনিবার রাতে হাওরে পানি ঢুকে।
কৃষকরা জানান, জামালগঞ্জ হালির হাওরে এখনো কৃষকদের ধানকাটা অনেক বাকী রয়েছে। ধানকাটার শ্রমিক না থাকায় কৃষকরা যে জমির ধান কেটেছেন তাও মাড়াই কাজ শেষ হয়নি। হঠাৎ করে হাওরে পানি প্রবেশ করায় কৃষকরা হতাশ হয়েছেন।
জেলার, দিরাই, শাল্লার হাওরের বাঁধগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পাউবোর কাজ শুরু থেকেই দিরাই-শাল্লায় বাঁধ নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এখনো অনেকবাঁধে দুর্বঘাস লাগানো হয়নি। অধিকাংশ বাঁধেই দুর্মুজ করা হয়নি। ফলে নদীর পানি যেকোন মুহূর্তে হাওরের প্রবেশ করতে পারে।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি। বাঁধ উপচে হাওরের পানি প্রবেশ করার বিষয়টি পাউবো এরিয়ে যেতে পারে না। এ দায় তাদের। আবহাওয়া আমাদের অনুকূলে থাকায় কৃষকরা কিছুধান ঘরে তুলেছেন। বৈশাখের শুরুতে বৃষ্টি হলে হাওরের বাঁধ বৃষ্টিতেই ভেঙ্গেযেতো। হাওর ডুবির জন্য দায়ী পিআইসি ও দুর্নীতিবাজ কর্তৃপক্ষও পাউবোর মিথ্যাচারের প্রতিবাদে আমরা সোমবার মানববন্ধন করবো। এরপর আমরা আন্দোলনের করনীয় ঠিক করবো।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. বশির উদ্দিন সরকার বলেন, সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারা ও ছাতক বাদে অন্য সব উপজেলার ধান কাটা হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভূইয়া বলেন, যে ৫টি হাওর ডুবেছে তা বাধ উপচে পানি ডুকেছে। ডুবে যাওয়া হাওরের ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে।