হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কসবা গ্রামে কোনো ধরণের ইজারা না নিয়েই কুশিয়ারা নদীর চর কেটে বালু বিক্রির ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঝটিকা অভিযানে ৫জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে গ্রেফতারকৃতদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়।
রবিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর চরে ঝটিকা অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন হাসান।
জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের বুক চিড়ে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীতে বর্তমান সময়ে পানি না থাকায় কসবা গ্রামে বিশাল চর জেগেছে। কয়েকমাস ধরে বিশাল স্থান নিয়ে জাগা এই চড়ে স্থানীয় ৪-৫টি সঙ্ঘবদ্ধ প্রভাবশালী চক্র কসবা গ্রামের কুশিয়ারা নদীর ঘাট এলাকায় অবস্থান নেয়। প্রতিদিন ওই সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের অর্ধশতাধিক শ্রমিক তারা নদীর চর কেটে ট্রাকে বালু তোলে দেন। বালুগুলো বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়। নদীর চর থেকে প্রতি ট্রাক বালুর দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক বালু বিক্রি করা হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর চরের বালু বিক্রি করে সঙ্ঘবদ্ধ কুচক্রী মহল লাভবান হলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছত্রছায়ায় সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে বন্যা কবলিত এলাকায় নদীর চর কাটার ফলে আগামী দিনে বন্যার কবলে দীঘলবাক এলাকার আরো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে । (৩১মার্চ) এনিয়ে সংবাদ কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের নজরে আসলে তিনি তাৎক্ষণিক নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন-হাসানকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে দুপুরে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন-হাসান, নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আতাউল গনি ওসমানীসহকারে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কুশিয়ারা নদীর বালুর চর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
এ সময় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে উপজেলার কসবা গ্রামের আলতাব মিয়ার পুত্র ফুরমান মিয়া (২৫) কে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার নুর ইসলামের পুত্র মালেক মিয়া (২৬), আলাই মিয়ার পুত্র কনু মিয়া (৩০), লেচু মিয়ার পুত্র রিপন মিয়া (২৪), আব্দুল মালিকের পুত্র কাওছার আহমেদ (২৬)কে ১ সপ্তাহের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন-হাসান বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি আমাদের নজরে আসে, আমরা তাৎক্ষণিক অভিয়ান চালিয়ে ৫জনকে গ্রেফতার করি এবং ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। ফের যদি কেউ চর কেটে বালু বিক্রি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।