সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট আয়োজিত মহান একুশের চেতনায় নাট্য প্রদর্শনীতে গতকাল মঞ্চস্থ হয় নগরনাটের নাটক ‘বাইচাল’। বাংলার ঐতিহ্যের একটি বড় অংশ জুড়ে আছে নৌকাবাইচ। যার সাথে বাঙালিমাত্রই একটা যোগসূত্র স্থাপিত হয়ে যায়। নৌকাবাইচ নিয়ে ভাটি অঞ্চলে জন্ম নিয়েছে বেশ কিছু মিথ ও লোকগাথা। এরকমই লোকগাথা অনুসারে ভাটি অঞ্চলের নৌকাবাইচের উৎপত্তি এবং মুঘল আমলের ভাটি অঞ্চলের ইতিহাসের সাথে এর যোগসাজশ নিয়েই নাটকের শুরু। বস্তুত এই বাইচ শ্রাবণ সংক্রান্তি ও মনসা পূজাকেন্দ্রিক। বহুবছর ধরে বহু ঝড়ঝাপটা সহ্য করে উদ্দীপনায় মুখর এই উৎসব টিকে আছে কোনরকমে। ১৯৭১ সালে মনসা পূজা ও এর আগের দিন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও রাজাকাররা মাকালকান্দি, নবীগঞ্জ, নিকলী দামপাড়া, তাড়াইলসহ ভাটি অঞ্চলে ব্যাপক গণহত্যা চালায়। তারপরও এই ঐতিহ্য মরে যায় নি। কিন্তু আজ স্বার্থপর ভোগবাদী সমাজে এই নৌকাবাইচ মৃতপ্রায়।
গোলাম শফিকের রচনা ও অর্ধেন্দু দাশের নির্দেশনায় নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অপরূপ দাস অয়ন, মোজাম্মেল হোসাইন (অনিমেষ), অনির্বাণ রায়, পিয়াস খান, জয়া হোসাইন বিতোস্তা, রনি ভুষণ দাশ, সোনিয়া সুভদ্রা/ শ্যামলী দাশ, অপরাজিতা দাশ মুক্তা, রাজন পাল, কাকলি দাস জেনী, সপ্তর্ষি দাস, জ্যোতিপ্রকাশ দাশ তালুকদার (নির্ঝর), দেবপ্রিয়া পাল, রাইহান চৌধুরী সৈকত, উজ্জ্বল চক্রবর্তী, হৃদয় মজুমদার অপু, অরূপ বাউল, সৈয়দ মুর্শেদ আহমদ পরাগ ও সীমান্ত চক্রবর্তী। আগামিকাল একই মঞ্চে উৎসবের ত্রয়োদশ দিন মঞ্চস্থ হবে দিগন্ত থিয়েটারের নাটক ‘পেজগি’।
নাটক শেষে অংশগ্রহণকারী দলের হাতে উৎসব স্মারক তুলে দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম ও পোস্টার তুলে দেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের প্রাক্তণ পরিচালক ব্যারিস্টার আরশ আলী।
বিগত ২৫ ফেব্র“য়ারি থেকে শুরু হওয়া এই নাট্য প্রদর্শনীতে সিলেটের ১৪ টি নাট্য সংগঠন তাদের প্রযোজনা নিয়ে অংশগ্রহণ করবে। আগামি ১০ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে সন্ধ্যা ৭টায় নাটক মঞ্চস্থ হবে। বিজ্ঞপ্তি