বিশ্ব নারী দিবস আজ সভ্যতার সকল পর্যায়ে এগিয়ে যাক নারী

56

আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর অধিকার আদায়ের দিন। সভ্যতার প্রতিটি পর্যায়ে রয়েছে নারীর অবদান। কখনো প্রত্যক্ষভাবে, কখনো পরোক্ষভাবে নারীর মেধা, শ্রম, অভিজ্ঞতা, দায়িত্বশীলতা ও মমতা জড়িয়ে আছে মানব জাতির বিকাশ ও উৎকর্ষসাধনে। ‘বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত নারীর এ বীরত্বগাথায় উল্লেখ হয়- নারীর ভূমিকা সমাজ-সভ্যতার অগ্রযাত্রার ইতিহাসে সমান্তরাল।  প্রাচীনকালেও সংসার পরিচালনা এবং সন্তান প্রতিপালন ছাড়াও নারীর অংশগ্রহণ ছিল কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য এমনকি যুদ্ধেও। এ যুগে তো তারা একই সাথে পরিচালনা করছেন পরিবার, কর্মক্ষেত্র, সমাজ এবং রাষ্ট্র। তবে খুব অল্পসংখ্যক নারী পান তাদের কাজের স্বীকৃতি ও সম্মান।

অজ্ঞতা, কুসংস্কার, ধর্মীয় গোড়ামি এদেশের নারীকে পিছিয়ে রেখেছে। এখনও কন্যা শিশু ভ্রুণ হত্যার ঘটনা এদেশে ঘটছে। পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে লিঙ্গগত পরিচয়ের কারণে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে নারী। এখনও এদেশে প্রতিদিন নারী ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা, যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে।

এই অবস্থায় নারীর জীবন সুন্দর ও শান্তিময় করার প্রত্যয় নিয়ে বিশ্বের সব নারীর সঙ্গে বাংলাদেশেও রাষ্ট্রীয়ভাবে আজ যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

প্রতিবছর নারী দিবস উদযাপনের একটি মূল প্রতিপাদ্য বিষয় থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে
“সবাই মিলে ভাবো নতুন কিছু করো,
নারী-পুরুষ সমতার নতুন বিশ্ব গড়ো।”

১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং কর্মক্ষেত্রে বৈরী পরিবেশের প্রতিবাদ করেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সুতা কারখানার একদল শ্রমজীবী নারী।

তাদের ওপরে দমন-পীড়ন চালায় মালিকপক্ষ। নানা ঘটনার পরে ১৯০৮ সালে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ও রাজনীতিবিদ ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম নারী সম্মেলন করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘ দিনটি নারী দিবস হিসেবে পালন করছে। তখন থেকেই বিভিন্ন দেশে নারীর সংগ্রামের ইতিহাসকে স্মরণ করে দিবসটি পালন শুরু হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ তার বানীতে বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত।

বর্তমান সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার ও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কর্মক্ষেত্রে অবাধ প্রবেশ ও নীতি নির্ধারণে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বানীতে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ৯ বছরে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর উন্নয়ন, অংশগ্রহণ ও অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে। নারী দিবস উপলক্ষে সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।