শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
ওসমানীনগরের শেখ ফলিজাতুন নেছা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শায়খুল ইসলামকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনায় একই প্রতিষ্ঠানের বাংলা বিভাগের প্রভাষক লুৎফুর রহমান আদালতে হত্যাকান্ডের দ্বায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। লুৎফুর রহমান ওরফে আজাদ (৪৪) দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের তাহির আলীর পুত্র। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার এস আই মো: মমিনুল ইসলাম পিপিএম বলেন, মঙ্গলবার সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সুলেখা দের আদালতে লুৎফুর রহমানকে হাজির করা হলে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় তিনি স্বেচ্ছায় নিজ আপরাধ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারী সকালে অধ্যক্ষ শায়খুল ইসলাম মোটরসাইকেল যোগে মাদরাসায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের বুরুঙ্গা সড়কের মুখ এলাকায় পৌঁছলে একটি দ্রতগতির প্রাইভেট কার অধ্যক্ষকে পেছন থেকে চাপা দেয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঘটনার পর অভিযোগ ওঠে একই মাদরাসার প্রভাষক লুৎফুর রহমান পরিকল্পিতভাবে গাড়ি চাপা দিয়ে অধ্যক্ষকে হত্যা করে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় নিহত অধ্যক্ষের স্ত্রী দিলবাহার তালুকদার লিপি বাদি হয়ে একই মাদরাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক লুৎফুর রহমানকে প্রধান আসামী করে ১৮ ফেব্রুয়ারী ওসমানীনগর থানায় ৩০২/৩৪ ধারায় একটি মামলাটি দায়ের করেন, মামলা নং-১৩। মামলায় অজ্ঞাত আরো ৫-৬জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ঘটনার পর অভিযুক্ত লুৎফুর রহমান পলাতক ছিলেন। ২৪ ফেব্রুয়ারী রাতে সিলেটের গোটাটিকর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, প্রভাষক লুৎফুর রহমানের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে নিহত অধ্যক্ষ শায়খুল ইসলাম মাদরাসা পরিচালনা কমিটির কাছে নালিশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ লুৎফুর রহমানকে চাকরি থেকে বহিস্কার করে। বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে লুৎফুর রহমান একটি মামলা করেন। কিন্তু মামলায় কোনো সফলতা না পেয়ে মোছলেকা দিয়ে পুনরায় তিনি অত্র মাদরাসায় যোগদান করেন। যোগদানের কিছুদিন পর তিনি বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি দেন। সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করে অধ্যক্ষকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করেন। একটি মহল হত্যাকারীর পক্ষ নিয়ে ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলে প্রচার করেন।