বিশ্বনাথে খাল ও নদী উদ্ধারের চলমান আন্দোলন ॥ সিলেটের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন যুগপৎ ভাবে কাজ করবে

44

বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ও অলংকারী ইউনিয়নের ১০টি হাওর ও খাল উদ্ধার এবং পুন:খননের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে দখলকৃত খাল, নদী ও ক্ষতিগ্রস্ত হাওর পরিদর্শন করেছেন সিলেটের রাজনৈতিক ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। ২৬ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার হরিপুর বড়খাল, রহিমপুর রামপুর খাল ও খাজাঞ্চী নদীর উৎসমুখ পরিদর্শন করেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার আহ্বায়ক কমরেড উজ্জল রায়, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম, বাসদ(মার্কসবাদী) বিশ্বনাথ উপজেলা সংগঠক রুবেল মিয়া সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। গত ১০ বছরের অধিক সময় ধরে খাল দখলের কারনে এলাকার কয়েক হাজার একর কৃষি জমি অনাবাদী থাকছে ফলে কৃষকরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। উপজেলার রহিমপুর মৌজা, কর্মকলাপাতি মৌজা, এনায়েতপুর মৌজা, খুরমা মৌজা ও ইসলামপুর মৌজার কৃষকরা এই ঘটনায় বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। উল্লিখিত খাল দুটি পাছলা নদী হয়ে খাজাঞ্চী নদীতে মিশেছে। বর্ষায় খালের পানি প্রবাহ বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন বারবার ধর্ণা দিয়ে ও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
হরিপুর বড়খালের প্রায় ১ কিলোমিটার জায়গা দখলদার কর্তৃক ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণের প্রমাণ পেয়ে পরিদর্শনকারী দলের নেতা বাসদ (মার্ক্সবাদী) সিলেট জেলা সমন্বয়ক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এমন একটি অপকর্ম বন্ধে কৃষকদের আন্দোলনে যেতে হচ্ছে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে ? বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম বলেন, চোখের সামনে খাল দখল, নদী দখল চলছে। শুরুতেই দখলদারদের উচ্ছেদ না করা প্রশাসনের গাফিলতি। দেশের নদী ও জলাধার আইনে প্রাকৃতিক পানির প্রবাহ বন্ধ করার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু এখানে খাল ও নদী দখল যেন স্বাভাবিক বিষয়।
গত ১০ বছর ধরে চলে আসা খাল ও নদী দখলের প্রভাব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রকট আকার ধারন করলে উপজেলার রহিমপুর মৌজা, কর্মকলাপাতি মৌজা, এনায়েতপুর মৌজা, খুরমা মৌজা ও ইসলামপুর মৌজার ১৪টি গ্রামের কৃষকরা গড়ে তুলেছেন ‘বাঁচাও হাওর আন্দোলন’ নামের সংগঠন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারী সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবর ‘বাঁচাও হাওর আন্দোলন, বিশ্বনাথ’-এর পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। শতাধিক কৃষক অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সেদিন সমবেত হয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের স্মারকলিপি প্রদানপূর্ব সমাবেশে সিলেটের পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সিলেট থেকে নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, দখলদারদের উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত খাল ও নদী উদ্ধারের চলমান আন্দোলনে সিলেটের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন যুগপৎ ভাবে কাজ করবে।
পরিদর্শনকালে আন্দোলনকারীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ‘বাঁচাও হাওর আন্দোলন’ এর আহ্বায়ক সাজিদুর রহমান সোহেল, সাবেক ইউ.পি সদস্য খায়রুল ইসলাম কবির, কবি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, ইউপি সদস্য গৌছ আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন ধলা, আফতাব আলী প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি