কাজিরবাজার ডেস্ক :
শিশু আদালতে বিচারাধীন কোনও মামলায় শিশুর নাম, ঠিকানা, ছবি বা তার পরিচিতি প্রচারে ভবিষ্যতে একটি ইংরেজি দৈনিকসহ সব গণমাধ্যমকে সতর্ক থাকতে বলেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা এক রুলের শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সাগুফতা তাবাসসুম আহমেদ। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান। আর ওই ইংরেজি দৈনিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম।
পরে ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন বলেন, ‘২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘বয় গেটস টেন ইয়ার্স ফর কিলিং ক্লাসমেটস’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। ওই খবরে শিশু অপরাধীর পরিচিতি প্রকাশ করা হয়েছে, যা স্পষ্টত শিশু আইন, ২০১৩-এর ২৮ ধারার লঙ্ঘন। এ কারণে রিট দায়ের করা হয়।’
পরে ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর শিশু আইন, ২০১৩-এর ২৮ ধারা অনুসারে শিশু অপরাধীর নাম, ঠিকানা, ছবিসহ তার পরিচিতি সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনসহ যেকোনও সংবাদ মাধ্যমে প্রচার-প্রকাশ বন্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে পত্রিকাটির সম্পাদককে নির্দেশ দেন আদালত।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আইনে স্পষ্টভাবে আছে শিশু আসামির নাম ব্যবহার করতে পারবেন না। ওই পত্রিকাটির একটি নিউজে একজন শিশুর নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করেছে। তাকে আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। বিষয়টি হাইকোর্টে আনার পর শুনানি শেষে রায় দেন। রায়ে আদালত বলেছেন নাম, ঠিকানা এবং শব্দ চয়নের কারণে পত্রিকাটি ইলিগ্যাল কাজ করেছে। আদালত উনাদের সতর্ক করে দিয়েছেন যেন পরবর্তীতে আর এ ধরনের ঘটনা না হয়। পাশাপাশি সব গণমাধ্যমকে বলা হয়েছে এটা (নির্দেশ) মেনে চলার জন্য, যেন শিশু-কিশোরের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ না পায়।’
প্রসঙ্গত, শিশু আইন ২০১৩-এ ‘শিশু আদালতের কার্যক্রমের গোপনীয়তা’ শিরোনামে ২৮ ধারায় বলা হয়েছে ১. শিশু আদালতে বিচারাধীন কোনও মামলায় জড়িত বা সাক্ষ্য প্রদানকারী কোনও শিশুর ছবি বা এমন কোনও বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম, অথবা ইন্টারনেটে প্রকাশ বা প্রচার করা যাবে না, যা সংশ্লিষ্ট শিশুকে শনাক্তকরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাহায্য করে। ২. উপধারা-১ এ যা কিছুই থাকুক না কেন, শিশুর ছবি, বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রকাশ করা শিশুর স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে না মর্মে শিশু আদালতের কাছে প্রতীয়মান হলে; উক্ত আদালত সংশ্লিষ্ট শিশুর ছবি, বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রকাশের অনুমতি প্রদান করতে পারবেন।