মাদক মামলা ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি হবে

64

কাজিরবাজার ডেস্ক :
জাতীয় সংসদে মাদকের মামলা ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানালেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক। তিনি জানান, সুপ্রীমকোটের্র হাইকোর্ট ডিভিশন একটি রায় দিয়েছে মাদকের মামলা ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। এটা করতে হলে আইনে কিছু সংশোধনী আনতে হবে। তাই এই অধিবেশনেই আইনের সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। যাতে হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে ৭ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে পারি।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, মাদক সমাজের একটা ব্যাধি। এটাকে নির্মূল করতে হবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি। প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণা মনে রেখে আমরা মাদকের মামলাগুলো যে মুহূর্তে তদন্ত শেষ করে কোর্টে আসছে, তখনই মামলা শুরু করে দেয়ার চেষ্টা করছি। শুধু তাই না, মামলা শুরু করে সাক্ষী-সাবুদ দিয়ে ত্বরিত শেষ করার চেষ্টা করছি।
মন্ত্রী জানান, নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলায় সাক্ষী না আসার কারণে অনেক সময় মামলা এগুতে পারে না। এ ব্যাপারে আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সেখানে কিভাবে সাক্ষীকে উপস্থাপন না করে যাতে সে হুমকিতে না পড়ে সেরকম ব্যবস্থা করার জন্য মামলাগুলো তাড়াতাড়ি চালানো যায়, সেরকম ব্যবস্থা নিচ্ছি। এটা এখনই ফলদায়ক হচ্ছে। যদিও এটা সম্ভব কি না তাও দেখতে হবে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শহিদুজ্জামান সরকার ও মো. ইসরাফিল আলমের পৃথক দুটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, পুরনো মামলাগুলো বিশেষ করে যেগুলো ৩০ বছর জমে ছিল সেগুলো আগে যেন শেষ করা হয় সেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মামলা জটের এই সমস্যাটা বিচার বিভাগের বহুদিন আগ থেকে। আজকে পরিবর্তন হচ্ছে, দ্রুত না হলেও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যাতে এইরকম মামলা নিষ্পত্তি ত্বরিত হয় এবং এখন নতুন মামলা হচ্ছে সেগুলো যেন ত্বরিত নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
সরকারী দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের লিখিত জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, মামলা দ্রুত বিচার ও নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অন্যতম একটি প্রতিবন্ধকতা হলো এজলাস সংকট। এজলাস স্বল্পতা দূর করে সর্বোচ্চ কর্মঘণ্টা ব্যবহার করে বিচার কাজে গতিশীলতা আনায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দেশের ৬৪ জেলা সদরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ (১ম পর্যায়) (২য় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৮টি জেলায় ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৪টি জেলায় সম্পূর্ণ ভবন নির্মাণ শেষে বিচারিক কার্যক্রম চলছে। বাকি ১৪টি জেলার নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বর্তমানে মামলা ব্যবস্থাপনার দিকে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। পুরাতন মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে প্রত্যেক আদালতে সাক্ষীর সমন জারি নিশ্চিত করে সাক্ষীগণকে হাজির করে দ্রুত সাক্ষ্য গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চার্জশীটে ডাক্তার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সহজতর হয়। পুরাতন মামলাগুলো অগ্রাধিকার নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সলিসিটরের নেতৃত্বে মনিটারিং সেল কাজ করছে। এছাড়া প্রতিটি জেলায় কেস ম্যানেজমেন্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
সরকারী দলের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ’র প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত নকলনবিসদের চাকরি রাজস্ব খাতে ন্যাস্ত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। নিবন্ধন অধিদফতরের অধীন সাব-রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কর্মরত প্রায় ১৫ হাজার নকলনবিসদের চাকরি স্কেলভুক্ত/স্থায়ীকরণ বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিবের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সুপারিশ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে উক্ত সভায় সুপারিশসমূহ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।