সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের আয়োজনে ৫ম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বন্ধের জন্য জনস্বার্থে সিনিয়র সহকারী জজ সদর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বত্ব মামলা নম্বর-১৯/২০১৯।
পাশাপাশি এই স্টেডিয়ামে মেলা বন্ধের নিষেদাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বুধবার (৬ ফেব্র“য়ারী) নগরীর খাসদবীর এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক সৈয়দ ইয়ারব আলী বাপ্পী জনস্বার্থে এই মামলা দায়ের করেন।
মামলায় মূল বিবাদী করা হয়েছে- সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হাসিন আহমদ, মেলার সমন্বয়কারী ও সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য এম. এ মঈন খান বাবলু।
একই মামলায় মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে- সিলেট জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়- নামেই শুধু খেলার মাঠ। কিন্তু এই স্টেডিয়ামে কোনো খেলার আয়োজন করা হয়না। মেলার জন্য এই স্টেডিয়ামে সবসময়ই চলে খোড়াখুড়ি আর ইট বিছানোর কাজ। বাদ যায় না গরুর হাটও। এ বছর ছাড়িয়ে গেছে অতিতের রেকর্ডও। এবার মাস পেরোতে না পেরোতেই আবারো বাণিজ্য মেলার আয়োজন চলছে এই স্টেডিয়ামে। এই শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের মাঠের ¬খোলা জায়গায় বিভিন্ন এলাকার এবং স্থানীয় শিশু-কিশোর খেলাধূলা করতো।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এ মাঠে শেষ হয়েছে সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের আয়োজনে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। কিন্তু এ বাণিজ্যমেলা শেষ হতে না হতেই আরেকটি বাণিজ্যমেলার আয়োজন করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। এদিকে সিলেটে ঘন ঘন মেলার কারণে বিপাকে পরছেন ব্যবসায়ীরা।
বিগত ৫ বছর থেকে এ মাঠে তথাকথিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা এবং পশুর হাট হিসেবে ভাড়া দিয়ে আসছেন। অথচ জেলা প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নিয়ে একটি বেআইনী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করছেন।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক সৈয়দ ইয়ারব আলী বাপ্পী জানান, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের মাঠের ¬খোলা জায়গায় বিভিন্ন এলাকার এবং স্থানীয় শিশু-কিশোর খেলাধূলা করতো। স্থানীয় এলাকার অনেক ডায়বেটিক রোগীরা ভোরে ও বিকেলে হাঁটাহাঁটি করতেন। এখন আর তা দেখা যাচ্ছে না। কারণ তারা এখানে এসে আগের পরিবেশ পাচ্ছেন না। এই মাঠের পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতার রয়েছে। ক‘দিন পর পর এই জায়গায় মেলার আয়োজন, কখনো বা পশুর হাটের আয়োজন করা হয়। এই মাঠে কোনো খেলার আয়োজন করা হয়না। এমনকি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই শেখ রাসেলের নামে আজো কোনো খেলার আয়োজন করা হয়নি। এই মাঠটি নামেই শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। খেলার মাঠে খেলা হবে, তাই আমি জনগণের পক্ষে জনস্বার্থে আমাদের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে কোনো ধরণের মেলা বা পশুর হাটসহ কোনো ধরণের বাণিজ্যিক কার্যক্রম না করার জন্য এই মামলা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ তুজাম্মুল আলী জানান, মেলা বন্ধের জন্য জনস্বার্থে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে (সদর) স্বত্ব মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি এই স্টেডিয়ামে মেলা বন্ধের নিষেধাজ্ঞারও আবেদন করা হয়েছে। এ সময় শুনানীতে আদালতে সিনিয়র এডভোকেট এ.এইচ.ইরশাদুল হক এবং সহযোগিতায় ছিলেন এডভোকেট মো. আজমল হুসাইন ও এডভোকেট মো. ওহিদুর রহমান চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এ মাঠে শেষ হয়েছে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। সিলেট চেম্বারের এ বাণিজ্যমেলা শেষ হতে না হতেই আরেকটি বাণিজ্যমেলার আয়োজন করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধনী সময়ের অনুষ্ঠানে সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমদ চৌধুরী গণমাধ্যম কর্মীদের বলে ছিলেন এই মাঠে আর কোনো বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলতে দেয়া হবে না। প্রায় দুই যেতে মাস না যেতেই আবারো একই স্থানে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সদস্য এবং মেলার সমন্বয়কারী এম এ মঈন খান বাবলু মেলার আয়োজন করছেন। (খবর সংবাদদাতার)