মোস্তাফিজ ম্যাজিকে রাজশাহীর জয়

27

ক্রীড়াঙ্গন রিপোর্ট :
শেষ ওভারে মোস্তাফিজ ম্যাজিকে জয় পেল রাজশাহী কিংস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) শনিবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক চিটাগং ভাইকিংসকে ৭ রানে হারিয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। এই জয়ের ফলে প্লে-অফে খেলার দৌঁড়ে ভালোভাবেই টিকে থাকল রাজশাহী। দশ ম্যাচ খেলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে এখন তারা পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, এই ম্যাচে হারলেও পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে রয়েছে চট্টগ্রাম। ৯ ম্যাচ খেলে তাদের পয়েন্ট ১২।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে রাজশাহী কিংসের দেয়া ১৯৯ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৯১ রান সংগ্রহ করে চিটাগং ভাইকিংস। দলের পক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন ইয়াসির আলী। ৩৮ বলে সাতটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৫৮ রান করেন তিনি। ২২ বলে তিনটি চার ও পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে ৪৯ রান করেন মোহাম্মদ শাহজাদ। ২০ বলে ২২ রান করেন মুশফিকুর রহিম। ১৫ বলে দুইটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ২৯ রান করেন সিকান্দার রাজা। রাজশাহী কিংসের পক্ষে মোস্তাফিজুর রহমান ৩টি, কামরুল ইসলাম রাব্বী ২টি, মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি ও আরাফাত সানি ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
ইনিংসের শেষ ওভারে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। তাদের হাতে ছিল ৪ উইকেট। এই ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান ৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। চট্টগ্রাম ব্যাটিংয়ে নেমে শুরতে দেলপোর্টকে হারায়। তৃতীয় ওভারে মোস্তাফিজের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হন তিনি। অষ্টম ওভারে হতাশ হয়ে ফিরে যান শাহজাদ। এক রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ হয়নি তার। মিরাজের বলে তুলে মারেন শাহজাদ। বলটি একটু বেশি উপরে উঠে যায়। সহজেই ক্যাচটি ধরে ফেলেন সৌম্য।
এরপর ইয়াসির আলী ও মুশফিকুর রহিমের জুটিতে ভালোভাবেই এগোচ্ছিল চট্টগ্রাম। দুজনে মিলে ৫৭ রানের জুটি গড়েন। ১৪তম ওভারে আরাফাত সানির বলে বোল্ড হন ইয়াসির। ১৫তম ওভারে রাব্বীর বলে মুমিনুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুশফিক। ১৬তম ওভারে মিরাজের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ডেসকাটের হাতে ক্যাচ হন মোসাদ্দেক। ১৯তম ওভারের শেষ বলে সীমানার কাছে ইভান্সের হাতে ধরা পড়েন নাজিবউল্লাহ। শেষ ওভারে আউট হন সিকান্দার রাজা ও রবিউল হক।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে রাজশাহী কিংস। দলের পক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন জনসন চার্লস। ওপেনিংয়ে নেমে ৪৩ বলে পাঁচটি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৫৫ রান করেন তিনি। ২০ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ২৬ রান করেন সৌম্য সরকার। ২৯ বলে চারটি চারের সাহায্যে ২৬ রান করেন লরি ইভান্স। ১২ বলে চার ছক্কার সাহায্যে ২৭ রান করেন ডেসকাট। ১৭ বলে একটি চার ও তিনটি ছক্কার সাহায্যে ৩৭ রান করেন ক্রিশ্চিয়ান জঙ্কার। চিটাগং ভাইকিংসের পক্ষে আবু জায়েদ রাহি ১টি, খালেদ আহমেদ ২টি ও ক্যামেরন দেলপোর্ট ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহী শুরুটা করে দারুণ। পাওয়ারপ্লেতে এক উইকেটে ৫০ রান সংগ্রহ করে তারা। খালেদের করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সৌম্য সরকার। এরপর ৭০ রানের জুটি গড়েন চার্লস ও ইভান্স। দলীয় ১২০ রানে খালেদের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন ইভান্স।
ইভান্স ফিরে গেলেও রানের গতি থেকে থাকেনি। নাঈমের হাসানের করা ১৬তম ওভারে পরপর তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকান ডেসকাট। ১৭তম ওভারে বোলিংয়ে এসে ‘ভয়ঙ্কর’ চার্লসকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন রাহি। ১৯তম ওভারে রান আউট হন ডেসকাট। ইনিংসের শেষ বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ হন জঙ্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৭ রানে জয়ী রাজশাহী কিংস।
রাজশাহী কিংস ইনিংস: ১৯৮/৫ (২০ ওভার)
(চার্লস ৫৫, সৌম্য ২৬, ইভান্স ৩৬, ডেসকাট ২৭, জঙ্কার ৩৭, ফজলে মাহমুদ ১*; রাহি ১/২৪, খালেদ ২/৩২, নাঈম ০/৪৪, রবিউল ০/৪৭, দেলপোর্ট ১/৩৫, সিকান্দার ০/১০)।
চিটাগং ভাইকিংস ইনিংস: ১৯১/৮ (২০ ওভার)
(শাহজাদ ৪৯, দেলপোর্ট ৭, ইয়াসির ৫৮, মুশফিকুর ২২, মোসাদ্দেক ১, সিকান্দার ২৯, নাজিবউল্লাহ ১১, নাঈম হাসান ০*, রবিউল ৩, রাহি ১*; কামরুল ২/৪৪, মিরাজ ২/২৫, মোস্তাফিজুর ৩/২৮, আরাফাত ১/৩৭, ডেসকাট ০/৩২, সৌম্য ০/২৩)।
ম্যাচ সেরা: মোস্তাফিজুর রহমান (রাজশাহী কিংস)।