কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে আরও এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে বলেছেন, এখন আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের ঐক্যের যোগসূত্র হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সাম্য ও ন্যায়বিচার এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতি। বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে দলমত নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিক সমান। আমরা সবার জন্য কাজ করব। দেশবাসী আমার ওপর যে আস্থা রেখে যে রায় দিয়েছেন, কথা দিচ্ছি প্রাণপণ চেষ্টা করব সে আস্থার প্রতিদান দিতে। এজন্য দলমত নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের সমর্থন ও সহযোগিতা চাই। দেশবাসীর সহযোগিতায় আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করব, ইনশাআল্লাহ।
বিরোধী দলের (বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নিয়ে সংসদে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একাদশ সংসদে বিরোধীদলের সদস্য সংখ্যা নিতান্তই কম। তবে সংখ্যা দিয়ে আমরা তাদের বিবেচনা করব না। সংখ্যা যত কমই হোক, সংসদে যেকোন সদস্যের ন্যায্য ও যৌক্তিক প্রস্তাব, আলোচনা-সমালোচনার যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে হিংসা-বিদ্বেষ হানাহানি থাকবে না। সব ধর্ম-বর্ণ এবং সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন। সকলে নিজ নিজ ধর্ম যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করতে পারবেন। তিনি বলেন, সরকারী সেবা খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় জীবনের সর্বত্র আইনের শাসন সমুন্নত রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করব। জাতীয় সংসদ হবে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রবিন্দু।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দুর্নীতি নিয়ে সমাজের সর্বস্তরে অস্বস্তি রয়েছে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের নিজেদের শোধরানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি উচ্ছেদ করা হবে। দুর্নীতি বন্ধে জনগণের অংশগ্রহণ জরুরী। তাই, গণমাধ্যমের সহায়তায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেনতা তৈরির কাজ অব্যাহত থাকবে। আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে ইতোমধ্যেই মাদক, জঙ্গী তৎপরতা এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে সফলতা অর্জন করেছি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হয়ে প্রায় ২৬ মিনিটের জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে টানা তৃতীয়বার ভোট দিয়ে নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করে আওয়ামী লীগকে দেশসেবার সুযোগ প্রদানের জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ী হওয়ার কারণ তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবির কারণগুলোও দেশের জনগণের সামনে তুলে ধরেন দেশের ইতিহাসে রেকর্ড সংখ্যক চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি-সন্ত্রাস-মাদকের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি আগামীতে সমৃদ্ধির পথে দেশকে আরও এগিয়ে নিতে তার ভবিষ্যতের কথাও দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেন। তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর এটিই ছিল প্রধানমন্ত্রীর দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রথম ভাষণ। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতারসহ সবগুলো বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
সমাজের সবাইকে মাদকাশক্তি ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক প্রভাবে কিংবা স্থানীয় প্ররোচনায় আমরা কিছু কিছু তরুণকে বিভ্রান্তির শিকার হয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদে সম্পৃক্ত হতে দেখেছি। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই। ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে উৎপাদনমুখী করা হচ্ছে। কওমি মাদ্রাসার দাওয়ারে হাদিস ডিগ্রীকে মাস্টার্স ডিগ্রীর সমমানের করা হয়েছে। সারাদেশে ৫৬০টি মসজিদ-কাম-ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
তরুণাই দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার : দেশের তরুণ সমাজের প্রতি আস্থা রেখে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, তরুণেরাই দেশের ভবিষ্যত কর্ণধার। তারুণ্যের সৃষ্টিশীলতা, উদ্যম এবং শক্তির উপর আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা ও আস্থা রয়েছে। তারুণ্য মানেই বাংলা ভাষার জন্য আত্মদান, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, আসাদ-মতিউর, নূর হোসেনদের রক্তদান। তারুণ্য মানেই লাল-সবুজের পতাকা- আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি, তারুণ্য মানেই বাঙালী এবং বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালী জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিল। আর ২০১৮ সালে আরেক বিজয়ের মাসে এ দেশের ভোটাররা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে, আমাদের দেশ সেবার সুযোগ করে দিয়েছে।
দেশবাসীকে উদ্দেশে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি- আমার ব্যক্তিগত কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। বাবা-মা-ভাই, আত্মীয়-পরিজনকে হারিয়ে আমি রাজনীতি করছি শুধু জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তাবায়নের জন্য; এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। এ দেশের সাধারণ মানুষেরা যাতে ভালভাবে বাঁচতে পারেন, উন্নত-সমৃদ্ধ জীবনের অধিকারী হতে পারেন- তা বাস্তবায়ন করাই আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।
আওয়ামী লীগের বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার কারণ : প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণের শুরুতেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার জন্য দেশবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে শোকরিয়া আদায় করে বলেন, যারা নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের বিজয়ী করেছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। যারা আমাদের ভোট দেননি, আমি তাদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। দলের সব নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সকলের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সহযোগিতায় আমরা এ বিশাল বিজয় করতে সক্ষম হয়েছি। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য তিনি দেশবাসী, নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্যের প্রতিও গভীর কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের পর থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। প্রতিটি সম্ভাব্য প্রার্থী নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ বাড়িয়েছেন এবং এলাকার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। এবারের নির্বাচনে দলের প্রতিটি নেতাকর্মী মনোনীত প্রার্থীর জন্য কাজ করেছেন। আর আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি ছিল ব্যাপক। সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি আমরা ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছি। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারকালে সমাজের সব শ্রেণী-পেশার মানুষ আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, শিক্ষাবিদ, সাবেক আমলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা সকলেই আওয়ামী লীগের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। একটি সমাজের প্রায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষ যখন কোন দলের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন, তখন তাকে কোনভাবেই আটকে রাখা যায় না।
বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পরাজয়ের কারণ : ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবির কারণ দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক আসনে ৩-৪ জন বা তারও বেশি প্রার্থী মনোনয়ন, মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক বাণিজ্যের অভিযোগ এবং দুর্বল প্রার্থী মনোনয়ন, নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠাতা পেলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা, নিজেরা জনগণের জন্য কী করবে, সে কথা নির্বাচনে তুলে ধরতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে ক্ষমতায় গেলে আমাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা নিবে তাদের প্রচারণায় তা প্রাধান্য পেয়েছে।
তিনি বলেন, সোস্যাল মিডিয়ায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা ছাড়া নিজেদের (বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) সাফল্যগাথা তুলে ধরতে পারেনি। তাছাড়া ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী অগ্নিসন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড সাধারণ মানুষের মন থেকে মুছে যায়নি। সর্বোপরি, বিএনপির ধানের শীষ মার্কায় যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের মনোনয়ন তরুণ ভোটাররা মেনে নিতে পারেনি। তরুণেরা আর যাই হোক স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির পক্ষ নিতে পারে না। এ রকম আরও বহু উদাহরণ দেয়া সম্ভব, যার মাধ্যমে প্রমাণ করা যাবে যে সাধারণ ভোটারগণ বিএনপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন এবং নৌকার অনুকূলে এবার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল।
আ.লীগ কথামালার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় : দেশবাসীকে দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কথামালার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা যে প্রতিশ্রুতি দেই, তা বাস্তবায়ন করি। ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছিলাম তার অধিকাংশই ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছি। তিনি বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’ স্লোগান সংবলিত নির্বাচন ইশতেহার ঘোষণা করেছি। ইশতেহার ঘোষণাকালে আমি এর সারাংশ আপনাদের সামনে তুলে ধরেছিলাম। আপনারা অনেকেই এই দলিলটি ইতোমধ্যে পড়েছেন। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমাদের যেকোন নীতিমালা প্রণয়নে এবং উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে এই ইশতেহারটি পথ নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।
আগামী ৫ বছরে দেড় কোটি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা : আগামী পাঁচ বছরে বর্তমান সরকারের ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব শিক্ষিত তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য আমরা বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আগামী পাঁচ বছরে আমরা দেড় কোটি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে চলেছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ বিনিয়োগের জন্য আসছেন। সারাদেশে ২ ডজনের বেশি হাইটেক পার্ক এবং আইটি ভিলেজ নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। কৃষি, মৎস্য, পশুপালন, পর্যটন, সেবাখাতসহ অন্যান্য খাতে প্রাতিষ্ঠানিক এবং আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই : প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আরও বলেন, ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা ২০২০-২০২১ সালে মুজিব বর্ষ এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপন করব। বাঙালি জাতির এই দুই মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা দেশকে আর্থ-সামাজিক খাতে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। আর এর কৌশল হিসেবে আমরা ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন করছি। পাশাপাশি, জলবায়ুর ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন অর্জনের জন্য আমরা ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নামে শতবর্ষের একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো সম্পৃক্ত করে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজও শুরু হয়েছে। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- আমাদের এই পররাষ্ট্র নীতিই বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের মূল হাতিয়ার। এই নীতির সফল বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক যে কোন সময়ের চাইতে সুদৃঢ় এবং গভীর।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের শেষ প্রান্তে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাষায় বলেন, ‘যতক্ষণ দেশে আছে প্রাণ/প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল/ এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি-/ নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’ দেশবাসীর সুস্থ কামনা করে তিনি বলেন, আপনারা সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সহায় হোন।