কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচলকারি অভিজাত পরিবহন লন্ডন এক্সপ্রেসের একটি বাসের সঙ্গে শনিবার ভোর ৪টা ১০ মিনিটে পাথর বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার শশই এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাসচালক মো: আনোয়ার হোসেন ওরফে আনা ড্রাইভার (৫৫) এর বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাদাইরদেউল গ্রামে। তিনি শমসেরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাদাইরদেউল গ্রামের মরহুম হাজী মো: আব্দুল আজিজের বড় ছেলে ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল বাছিত মাস্টার এর ভাতিজা। সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচলকারি লন্ডন এক্সপ্রেসের চালক ছিলেন তিনি।
নিহত বাসচালকের লাশ শনিবার ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ভাদাইর দেউল গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে এক হৃদয় বিদারক ঘটনার সৃষ্টি হয়। পরিবারের লোকজনের সাথে দেখতে আসা আগতরাও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় শমসেরনগর এ.এ.টি. এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হাজারো শোকার্ত মানুষের উপস্থিতিতে মরহুমের জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে স্থানীয় কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সিলেট-ঢাকা রুটে চলাচলকারি অভিজাত পরিবহন লন্ডন এক্সপ্রেসের একটি বাসের সঙ্গে পাথর বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাস চালকসহ ১ জন নিহত হন। শনিবার ভোর ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার শশই এলাকায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহতদের মধ্যে লন্ডন এক্সপ্রেসের চালক কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাদাইরদেউল গ্রামের মরহুম হাজী মো: আব্দুল আজিজের বড় ছেলে ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল বাছিত মাস্টার এর ভাতিজা মো: আনোয়ার হোসেন ওরফে আনা ড্রাইভার (৫৫)। অপরজন ট্রাক চালকের সহকারী বলে সূত্রে জানা যায়। এ দুর্ঘটনায় আরও অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। তাদের একজনকে ঢাকায় এবং দুজনকে সিলেটের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ হোসেন জানান, লন্ডন এক্সপ্রেসের বাসটি সিলেট যাচ্ছিল। শশই ইসলামপুরে এলাকায় বিপরীতমুখী পাথরবোঝাই ট্রাকটির সঙ্গে এর সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রাকের হেলপার ও বাসের ড্রাইভার মারা যান।
নিহত বাসচালক আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার চাচাতো ভাই শমসেরনগর এ,এ,টি,এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এবিএম আরিফুজ্জামান অপু জানান, নিহত আনা ব্যক্তিগত জীবনে তিনি খুবই অমায়িক লোক ছিলেন। তিনি ১ ছেলে ও ৪ মেয়ের জনক। ছেলে জেল পুলিশে চাকুরী করে। তিন মেয়ে বিবাহিত ও এক মেয়ে লেখাপড়ায় আছে। তিনি শমসেরনগর এ,এ,টি,এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, শমসেরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লামাবাজার জামে মসজিদের ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য ছিলেন।
নিহত আনা ড্রাইভারের মেয়ের জামাই ও ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর সহকারী এরিয়া ইনচার্জ মোঃ মোস্তফা খাঁন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তার শ্বশুর কক্সবাজার থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে আসার সময় উক্ত স্থানে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। এর আগে রাত দেড়টায় আমার শ্বশুড়ির সাথে তিনি (আনা ড্রাইভার) মোবাইল ফোনে কথা বলেন। বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসের সামনের দিকে ও চালকের আসন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়।