দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সিলেট সিক্সার্স

74

স্পোর্টস ডেস্ক :
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সিলেট সিক্সার্স। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বুধবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল রংপুর রাইডার্সকে ২৭ রানে হারিয়েছে সিলেট। পাঁচ ম্যাচ খেলে সিলেটের এটি দ্বিতীয় জয়। চার পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন পয়েন্ট টেবিলে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে, ছয় ম্যাচ খেলে রংপুরের এটি চতুর্থ হার। চার পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে তারা পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে সিলেট সিক্সার্সের দেয়া ১৮৮ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬০ রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। দলের পক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন রাইলি রুশো। ৩২ বলে ৫৮ রান করে আউট হন তিনি। ২৯ বলে ৩৫ রান করেন মোহাম্মদ মিথুন। ২৭ বলে ৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মাশরাফি। সিলেটের বোলারদের মধ্যে তাসকিন আহমেদ ২টি, মেহেদী হাসান রানা ২টি, সোহেল তানভীর ১টি ও সন্দ্বীপ লামিচানে ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
রংপুর ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে। মেহেদী হাসান রানার করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে নিকোলাস পুরানের হাতে ধরা পড়েন মেহেদী মারুফ। পাঁচ বলে তিন রান করেন তিনি। ওভারের শেষ বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ হন আলেক্স হেলস। তিন বলে শূন্য রান করেন এই ব্যাটসম্যান। তৃতীয় ওভারে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ক্রিস গেইলকে বিদায় করেন সোহেল তানভীর। সাত বল খেলে সাত রান করেন গেইল।
এরপর রাইলি রুশো ও মোহাম্মদ মিথুনের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকে রংপুর। ২৭ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশত পূরণ করেন রুশো। কিন্তু এরপর বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। ৩২ বলে ৫৮ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। ১২তম ওভারে রুশোকে বোল্ড করেন তাসকিন। ১৪তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মিথুনকে ফেরান তাসকিন। ১৭তম ওভারে লামিচানের বলে বোল্ড হন হাওয়েল।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮৭ রান সংগ্রহ করে সিলেট সিক্সার্স। দলের পক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করেন লিটন দাস ও ডেভিড ওয়ার্নার। ওপেনিংয়ে নেমে ৪৩ বলে ৯টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৭০ রান করেন লিটন। টি-টোয়েন্টিতে লিটনের এটি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। ৩৬ বলে ছয়টি চার ও দুইটি ছক্কার সাহায্যে ৬১ রান করেন ওয়ার্নার। ১৬ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ২৬ রান করেন নিকোলাস পুরান। রংপুর রাইডার্সের বোলারদের মধ্যে শফিউল ইসলাম ৩টি ও বেনি হাওয়েল ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
ব্যাটিংয়ে সিলেট কৌঁশল পরিবর্তন করে। ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গে নামেন সাব্বির রহমান। ওপেনিংয়ে নতুন জুটিতে সিলেটের শুরুটা হয় দারুণ। ওপেনিংয়ে ৭৩ রানের জুটি গড়েন লিটন-সাব্বির। ইনিংসের নবম ওভারে বেনি হাওয়েলের বলে এলবিডব্লিউ হন সাব্বির। ২০ বলে ২০ রান করেন তিনি।
এরপর লিটনের জুটি জুটি বাঁধেন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। দুজনে মিলে ৫৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ১৫তম ওভারে পার্টটাইম বোলার ক্রিস গেইল এসে একটি ব্রেক থ্রু এনে দেন। রান আউট হয়ে ফেরেন লিটন। ৪৩ বলে ৭০ রান করেন তিনি।
লিটন আউট হওয়ার পর ওয়ার্নারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন নিকোলাস পুরান। ১৬ বলে তিন চার ও এক ছক্কার সাহায্যে ২৬ রান করে পুরান আউট হয়ে যান। ১৮তম ওভারে শফিউল ইসলামের বলে বোল্ড হন তিনি। ২০তম ওভারে দুই উইকেট নেন শফিউল। ওভারের তৃতীয় বলে আফিফকে বোল্ড করেন তিনি। চতুর্থ বলে ফরহাদ রেজার হাতে ক্যাচ হন জাকির আলী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ২৭ রানে জয়ী সিলেট সিক্সার্স।
সিলেট সিক্সার্স ইনিংস: ১৮৭/৫ (২০ ওভার)
(লিটন দাস ৭০, সাব্বির রহমান ২০, ডেভিড ওয়ার্নার ৬১, নিকোলাস পুরান ২৬, আফিফ হোসেন ৬, জাকির আলী ০, অলক কাপালি ০; মাশরাফি বিন মর্তুজা ০/৪৩, শফিউল ইসলাম, সোহাগ গাজী ০/৩৮, বেনি হাওয়েল ১/২২, ফরহাদ রেজা ০/৯, ক্রিস গেইল ০/৩৫, নাহিদুল ইসলাম ০/৭)।
রংপুর রাইডার্স ইনিংস: ১৬০/৬ (২০ ওভার)
(ক্রিস গেইল ৭, মেহেদী মারুফ ৩, আলেক্স হেলস ০, রাইলি রুশো ৫৮, মোহাম্মদ মিথুন ৩৫, মাশরাফি বিন মর্তুজা ৩৩*, বেনি হাওয়েল ১৩, নাহিদুল ইসলাম ৫*; সোহেল তানভীর ১/২২, মেহেদী হাসান রানা ২/৪০, তাসকিন আহমেদ ২/৩৪, আফিফ হোসেন ০/২২, সন্দ্বীপ লামিচানে ১/১৮, অলক কাপালি ০/২৩)।
ম্যাচ সেরা: লিটন দাস (সিলেট সিক্সার্স)।