কাজিরবাজার ডেস্ক :
রাজনীতিবিদ ও ব্যক্তি হিসাবে আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অসাধারণত্বের কথা তুলে ধরেছেন তার সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা।
শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক আয়োজনে আশরাফকে স্মরণ করে করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত ৩ জানুয়ারি থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে মারা যান। তিনি ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য প্রশংসিত হয়ে আসছিলেন। তার মৃত্যুর পর তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শোক প্রকাশেও এটা স্পষ্ট যে তিনি সব পক্ষের কাছেই ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য ছিলেন।
গত সরকারের মন্ত্রিসভায় আশরাফের সহকর্মী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘তার (আশরাফের) অন্তিমযাত্রায় লাখো মানুষের ঢল প্রমাণ করে, এ দেশের মানুষ সৈয়দ আশরাফের মতো লোককেই নেতা হিসেবে চায়। লাখো মানুষের অশ্রুসিক্ত চোখ এ-কথাই বলে, এ দেশের মানুষ সৈয়দ আশরাফের আদর্শকে লালন করতে চায়।’
‘তাঁর সংস্পর্শে আসতে পারা আমার জীবনের অন্যতম ঘটনা। রাজনীতিবিদ হয়, সংসদ সদস্য হয়, মন্ত্রী হয় কিন্তু একজন সৈয়দ আশরাফ সহজে সৃষ্টি হয় না। ক্ষমতায় থেকেও ক্ষমতার মোহ থেকে সব সময় নিজেকে মুক্ত রেখেছেন।’
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘একই সঙ্গে ঈর্ষণীয় ও অনুকরণীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সমকালীন সময়ে আমি খুব একটা দেখি না। সব বিষয়ে তাঁর বিচরণ ছিল। অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল তাঁর। মৃদুভাষী ওই মানুষটিকে কখনো পা-িত্য জাহির করতে দেখা যায়নি। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, কিন্তু এই পদ তাঁকে কখনো আচ্ছন্ন করেনি।’
সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমরা দোষে-গুণে মানুষ। কিন্তু যারা দোষ না করে গুণে এগিয়ে থাকেন, তারা মহা মানুষ, ভালো গুণের মানুষ। সৈয়দ আশরাফ তেমনি একজন ছিলেন।’
‘এক-এগারোর সময় যখন অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিন্দুমাত্র বিভ্রান্ত হননি।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সৈয়দ আশরাফ ছিলেন একজন নির্লোভ মানুষ। তিনি বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন। যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করেছিলেন।’
অনুষ্ঠানের শুরুতেই রবীন্দ্রনাথের গান ‘তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ পরিবেশন করা হয়। এরপর আশরাফের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, নেতৃত্বের প্রতি গভীর আস্থা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সততা ও নির্ভীক সাহসে সৈয়দ আশরাফকে আলাদা একজন মানুষ ছিলেন। তিনি সংকটে শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সহকর্মী ছিলেন।