স্পোর্টস ডেস্ক :
মাত্র দুইবার মাঠের লড়াইয়ে দলকে নেতৃত্ব দিতে স্টিভেন স্মিথের মুখোমুখি হয়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। সর্বশেষ ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দ্বিতীয়বার তাদের মাঠে নামা লন্ডনের কেনিংটন ওভালে। সেই ম্যাচে মাশরাফি টস জিতলেও বৃষ্টির বাগড়ায় কোন ফলাফল আসেনি। আর প্রথমবার মোকাবেলা ২০১৬ সালে টি২০ বিশ্বকাপের গ্রুপ ম্যাচে ব্যাঙ্গালুরুতে। স্মিথ টস জেতার পাশাপাশি ম্যাচেও হারিয়ে দিয়েছিলেন মাশরাফিকে। দুই বছর পর এবার দেশের মাটিতে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্মিথের বিরুদ্ধে নামবেন মাশরাফি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে আজ মাশরাফির রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে স্মিথের কুমিল্লার লড়াই। সন্ধ্যা ৫টা ২০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি। জয় দিয়ে শুরু করা কুমিল্লা এবার রংপুরকে হারিয়ে ধারাবাহিকতা রাখতে চায়।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ৫ দিন পরেই মাঠে নেমেছিলেন মাশরাফি। দলের সঙ্গে অনুশীলন করতে পেরেছিলেন মাত্র ২ দিন। দলের অনুশীলন ঘাটতিটাই হয়তো এবার বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে রংপুরের হারের কারণ হয়ে উঠেছিল। তবে পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ায় গত আসরের চ্যাম্পিয়ন রংপুর। এখন পর্যন্ত মাশরাফিই চলতি আসরে একমাত্র অধিনায়ক যার দুই রকমের অভিজ্ঞতাই হয়ে গেছে। প্রথম ম্যাচ তাদের খেলতে হয়েছে দিনের আলোয়, আর দ্বিতীয় ম্যাচ ফ্লাডলাইটের নিচে। এক ম্যাচ হার এবং অন্য ম্যাচে জয়। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার মাশরাফি মুখোমুখি হবেন স্মিথের কৌশলের সঙ্গে। দুই বছর আগে জাতীয় দলের টি২০ লড়াইয়ে দু’জন মুখোমুখি হয়েছিলেন। মাত্র একবারই তাদের সেই মাঠের লড়াইয়ে স্মিথ জিতেছিলেন। কিন্তু এবার মাশরাফি সেই শোধটা তুলে নিতে চাইবেন। ফরমেটও এক, টি২০। পার্থক্য হচ্ছে সেটি ছিল জাতীয় দলের জার্সিতে বিশ্বকাপের মতো বড় আসর। এবার বিপিএল টি২০ আসর। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক হিসেবে স্মিথের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন মাশরাফিই। তাছাড়া দুই রকমের অভিজ্ঞতা চলতি আসরেই হওয়াতে উইকেটের পরিস্থিতি এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থাটা স্মিথের চেয়ে বেশি জানা নড়াইল এক্সপ্রেসের। এই ম্যাচে রংপুরের ব্যাটিং শক্তিটাও বাড়ছে। এনওসি জটিলতায় গত ম্যাচ খেলতে না পারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল আজ মাঠে নামবেন। তার বারুদ ব্যাটিং অনেক বড় সহায়ক হবে গত ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে ৫২ বলে ৭৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার বিগ-হিটার রাইলি রুশোর জন্য। তাছাড়া রবি বোপারাও দারুণ ইনিংস খেলেছিলেন। সেক্ষেত্রে আজ দুই ম্যাচেই ব্যর্থ ইংল্যান্ডের টপঅর্ডার এ্যালেক্স হেলসকে বসেই থাকতে হবে এ ম্যাচে। কারণ ৪ বিদেশীর কোটা পূরণ হবে বল হাতে ভাল করা ইংলিশ পেসার বেনি হাওয়েলকে দিয়ে। ওপেনিং থেকে একধাপ পিছিয়ে নামতে হতে পারে মেহেদী মারুফকে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম ম্যাচ থেকে গুছিয়ে উঠার সময় লাগে। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে আমরা দ্বিতীয় ম্যাচে গুছিয়ে উঠতে পেরেছি। আমাদের নির্দিষ্টভাবে কুমিল্লাকে নিয়েই পরিকল্পনা এখন। ওদের শক্তি, দুর্বলতা। আমরা গত ম্যাচ জেতাতে সবাই ফুরফুরে মেজাজে আছি। আমাদের সবার আত্মবিশ্বাসও ভাল। ব্যাটিং বোলিং দুইটাতেই ভাল হয়েছে।’ স্মিথকে বাংলাদেশে একেবারেই নতুন বলা যেতে পারে। দুই বছর আগে টেস্ট দলকে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। মাত্র দুই টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা ছাড়া এদেশের উইকেটে আনকোরাই বলা যেতে পারে তাকে। তবে এরপরও ইতিবাচক মানসিকতা আর দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে মাঠের তৎপরতায় তিনি দলের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে সন্তুষ্ট করেছেন।
কোচ হিসেবে কুমিল্লাকে এবারই প্রথম নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিততে দেখেছেন বিপিএলে। কিন্তু স্মিথের সবকিছু মানিয়ে নিতে এবং ক্রিকেটারদের সঙ্গে বোঝাপড়া হতে সময় লাগবে বলেই মনে করছেন তিনি। অবশ্য দলের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান বললেন, ‘স্মিথ অধিনায়ক হিসেবে, মানুষ হিসেবে সবদিক থেকেই ভাল। সবকিছুই ভাল লেগেছে। ম্যাচে নিজেকে এবং সবাইকে ব্যস্ত রাখে সে, যেটা টি২০ ক্রিকেটের জন্য অনেক জরুরী। সবাইকে সে খেলায় মনোযোগী রাখে। আসলে তারজন্য একদিনেই সবার সঙ্গে মানিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। সময় লাগবে।’ সেটা যাই হোক সিলেট সিক্সার্সকে হারিয়ে দেয়ার ম্যাচে ‘বুম বুম’ শহীদ আফ্রিদি দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তার ব্যাটেই জিতেছে কুমিল্লা। এবারও তার ওপরে ভরসা কুমিল্লার। আইকন তামিম ইকবালও দুর্দান্ত খেলেছেন। এদের সঙ্গে শোয়েব মালিক, এভিন লুইস, ইমরুল কায়েসরা জ্বলে উঠতে পারলে আরেকটি জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারবে কুমিল্লা।