কাজিরবাজার ডেস্ক :
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রতিকার চাইবেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা। প্রত্যেক আসন থেকে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বা তার নির্বাচনি এজেন্ট হাইকোর্টের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করবেন। এর আগে সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হবে। বিএনপি জোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি মামলা করবো। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছেও অভিযোগ জানাবো। আমি চাইবো যে সব প্রার্থীই তার আসনভিত্তিক অভিযোগ করবেন।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির একজন সদস্য জানান, আসন ধরে নির্বাচনি ট্রাব্যুনালে মামলা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এখন চেষ্টা করা হচ্ছে এই উদ্যোগের সঙ্গে মহাজোটের বাইরে থাকা অন্যান্য দলকেও যুক্ত করার।
৩১ ডিসেম্বর (সোমবার) কামাল হোসেনের চেম্বারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর আসম আবদুর রবকে বলা হয়েছে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে কথা বলার জন্য।
ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘দুয়েক জায়গায় তো নির্বাচনে ত্রুটি হয়নি। দেশে তো কোনও নির্বাচনই হয়নি। ট্রাইব্যুনালে গিয়ে কী হবে।’
নির্বাচন বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী, নির্বাচিত প্রার্থীর নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে সংক্ষুব্ধ পক্ষ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগের দরখাস্ত করতে পারবে। সেক্ষেত্রে বুধবার (২ জানুয়ারি) গেজেট প্রকাশ হওয়ায় এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীরা মামলা করতে পারবেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করার বিধানও রাখা হয়েছে।
ইতোমধ্যে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলীয় প্রার্থীদের বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকায় আসতে নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি। তাদের সঙ্গে মামলা করার বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হবে।
বিএনপির এক নেতা জানান, ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির প্রমাণ, প্রতিটি কেন্দ্রের অস্বাভাবিক ভোটের হিসাব, গ্রেফতার হওয়া এজেন্ট ও নেতাকর্মীদের তালিকা, সহিংসতায় আহত ও নিহতদের তালিকাসহ আটটি বিষয়ের তথ্য সম্বলিত একটি প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার দেওয়া হবে দলের কেন্দ্রের কাছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য জানান, আপাতত আইনি লড়াই চালানো হবে। ইতোমধ্যে ঐক্যফ্রন্টের শুভানুধ্যায়ী মহল থেকেও এ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই সদস্য।