কাজিরবাজার ডেস্ক :
দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ও একুশ আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত লন্ডনে পলাতক আসামি তারেক রহমান ভিডিওবার্তার মাধ্যমে নাশকতার নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের দাবি, তারেক রহমানের বক্তৃতায় দেশের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্টের চক্রান্ত ও সন্ত্রাস সৃষ্টির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা গেরিলা কায়দায় ভোট কেন্দ্র দখলের হুমকি দিয়েছে। এ বিষয়ে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভাপতি রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকম-লীর এক যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী দু’দিন সারাদেশে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থায় রেখে জনগণকে নিয়ে যে কোন ষড়যন্ত্র বা নাশকতা প্রতিহত করার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সতর্কাবস্থায় থেকে কেউ যাতে আওয়ামী লীগের ব্যাজ, নৌকা প্রতীক পরে অনুপ্রবেশ করে কোন ধরনের স্যাবোটাজ ঘটাতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, জামায়াত-বিএনপি শুধু ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করছে না, তারা আওয়ামী লীগের ব্যাজ, নৌকার ব্যাজ, নৌকার মনোগ্রাম সম্বলিত শীতকালীন মাফলার ও গেঞ্জি পরে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে সে দায় আওযামী লীগের ওপর চাপিয়ে দিয়ে একটি অপপ্রচারের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। আমরা সবাইকে সজাগ ও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে নানক বলেন, পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ব্যাপক সহিংসতা, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব রটিয়েছে, মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের চক্রান্ত চালাচ্ছে। ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপিয়ে ও নকল বুথ বানিয়ে সিল মারা, নকল ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার নীলনক্সা করছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট উৎসব বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে তারা লিপ্ত হয়েছে।
পর্যবেক্ষক হিসেবে জামায়াত-বিএনপির ক্যাডার বাহিনীর হাজার হাজার সদস্য নামানো হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত মদদপুষ্ট একাধিক সংগঠনকে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে ভোটের মাঠে নামানো হচ্ছে বলে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের সংস্থা খান ফাউন্ডেশন, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রহমানের ডেমোক্রেসি ওয়াচ, তারেক রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত বগুড়াভিত্তিক লাইটহাউস, বিতর্কিত আইনজীবী আদিলুর রহমানের বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদ ও বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশী লবিস্ট ফার্ম ‘এনফ্রেল’ নামে একটি সংস্থাকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
নানক অভিযোগ করেন, এসব সংস্থার নামে জামায়াত-বিএনপির হাজার হাজার ক্যাডারকে পর্যবেক্ষক হিসেবে মাঠে নামানো হচ্ছে। এ ধরনের দলীয় প্রতিষ্ঠানের নামে সাড়ে ৬ হাজার পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে শুধু নির্বাচনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে। অথচ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন বিতর্কিতদের পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এবং ইউরোপের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের জন্য প্রণীত কোড অব কন্ডাক্ট বিরোধী। আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পক্ষপাতদুষ্ট এসব প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ না দিতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কারণ তারা নির্বাচনী পর্যবেক্ষণের কাজ করলে নির্বাচন বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাবে। তাই তাদের বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর ও উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।