তাবলীগ জামাতে হামলার প্রতিবাদে নগরীতে বিক্ষোভ ॥ টঙ্গীতে ওলামাদের রক্তের বিনিময়ে এদেশে সাদ পন্থীদের কবর রচিত হবে

87
টঙ্গীতে আলেম ওলামা ও তাবলীগ সাথীদের উপর হামলার প্রতিবাদে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন দরগাহ মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী।

স্টাফ রিপোর্টার :
গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ময়দানে তাবলীগ জামাতে হামলার প্রতিবাদে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার নগরীতে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাদ যোহর বিভিন্ন মাদ্রাসা ছাত্র শিক্ষকও তাবলীগের সাথীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে কোর্ট পয়েন্টে জড়ো হন। তখন কোর্ট পয়েন্টসহ নগরীর বেশ কিছু রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অনেককেই গন্তব্যস্থানে পৌঁছতে হিমশিম পোহাতে হয়েছে।
কোর্ট পয়েন্টে দরগাহ মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস মুফতি মাওলানা মহিবুল হক গাছবাড়ী, কাজির বাজার মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ ও মাওলানা আব্দুল কাদির খানের যৌথ পরিচালনায় আয়োজিত সমাবেশে আলেম ওলামা ও তাবলীগের সাথীরা বলেন, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইকরায় ওয়াসিফ, নাসিম গংদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে, ব্রিফিং করে এবং সারারাত প্রশিক্ষণ প্রদান শেষে সকালে ছাত্রদের উপর হামলা করার জন্য তাদের প্রেরণ করা হয় ইজতেমা ময়দানে।
বক্তারা বলেন, টঙ্গীতে ওলামাদের রক্তের বিনিময়ে এদেশে সাদ পন্থিদের কবর রচনা করা হবে। শুক্রবারের হামলায় অনেক গুরুতর আহত হয়েছেন, অনেকের প্রাণ গিয়েছে। এই হত্যাকান্ডের দায়দায়িত্ব প্রশাসনের বহন করতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আজ বিক্ষুব্ধ হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হয়েছি। সুতরাং পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ইজতেমা যদি ওয়াসিফ, নাসিম গংদের ষড়যন্ত্রে মাওলানা মাসউদের নেতৃত্বে অব্যাহতভাবে চলতে থাকে তাহলে আমরা আর প্রশাসনকে মানবো না। তাদের ষড়যন্ত্র যেটা ছিলো, আগামী ইজতেমা বানচাল করা। আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রশাসন তাদের এ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে ধীরে ধীরে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। যদি এভাবেই ষড়যন্ত্র এগিয়ে যেতে থাকে এবং খুনিদের যদি গ্রেফতার না করা হয়, ওয়াসিফ, নাসিম এবং ফরিদ উদ্দিন মাসউদের উপযুক্ত বিচারের সম্মুখীন না করা হয় তাহলে আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে টঙ্গী ময়দানের দিকে আমরা রোডমার্চ করতে বাধ্য হবো।
বক্তারা সভা থেকে ৮ দফা দাবি পেশ করেন জামেয়া ক্বাসিমূল উলূম দরগাহ হযরত শাহজালাল (রহ.) মাদ্রাসা সিলেটের শায়খুল হাদীস মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী। ৮ দফা দাবি হলো- এ হামলার নির্দেশদাতা ওয়াসিফুল ইসলাম ও শাহাবুদ্দিন নাসিম গং সহ হামলার সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান করতে হবে। আহত নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। টঙ্গী ময়দান এতোদিন যেভাবে শুরা ভিত্তিক পরিচালিত তাবলীগের সাথী ও ওলামায়ে কেরামের অধীনে ছিল তাদের কাছেই হস্তান্তর করতে হবে। অতিসত্বর কাকরাইলের সকল কার্যকলাপ হতে ওয়াসিফ ও নাসিম গংকে বহিষ্কার করতে হবে। সারাদেশে ওলামায়ে কেয়াম ও সূরা ভিত্তিক পরিচালিত তাবলীগের সাথীদের উপর হামলা মামলা বন্ধ করে পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে। টঙ্গীর আগামীর ইজতেমা পূর্বঘোষিত (১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি) অনুষ্ঠানের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ওয়াসিফুল ইসলাম ও শাহাব উদ্দিন গংদের সাথে সিলেট থেকে দলবদ্ধ হয়ে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে হামলার নেতৃত্বদানকারী সিলেটের মাস্টার সুয়েজ আফজল খান, মৌলভী আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আব্দুল করিম, তাজ উদ্দিন, এমাদ উদ্দিন গংদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অবলম্বে সিলেটে তাদের সকল কার্যক্রম (বদিকোণা মার্কাজ ও বাইপাস সংলগ্ন মার্কাজ) বন্ধ করতে হবে। এসব দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব, মাওলানা সামিউর রহমান মুসা, মাওলানা ক্বারী সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল কাদির খান, মাওলানা সৈয়দ শামীম আহমদ, আলহাজ্ব এমরান আলম, মাওলানা রুহুল আমিন নগরী, মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, সামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ, আলহাজ্ব একরামূল আজিজ, মুফতি মতিউর রহমান, সৈয়দ শুয়াইব আহমদ, মাওলানা আখতারুজ্জামান তালুকদার, হাফিজ মাওলানা আব্দুল করিম দিলদার, জামাল তারেক বুলবুল, মাওলানা মকবুল আহমদ, আবুল ফাত্তাহ, মাওলানা এমদাদুল হক নোমানী প্রমুখ।