সিলেট-৫ আসনে দুই জোটের চূড়ান্ত প্রার্থী নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ধূম্রজাল

140

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট) আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফন্টের শরীক দল বিএনপি জোট থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসাবে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন এ নিয়ে জোটগত দলের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের ভোটারদের মধ্যে নানা আলোচনা সর্বত্র চলছে। সিলেট-৫ আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য জেলা রিটার্নিং অফিসারের বরাবরে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন মোট ১২ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ বর্তমান সাংসদ আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন (জাতীয় পার্টি), আওয়ামীলীগ থেকে সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব হাফিজ আহমদ মজুমদার উভয়ই মহাজোটের মনোনীত প্রার্থী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তারা মহাজোটের প্রার্থী হিসাবে নিজেদের দাবী করছেন দলের কর্মী সমর্থকদের কাছে। অপর দিকে বিএনপি থেকে দলীয় ভাবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন মামুনুর রশিদ মামুন, বিএনপি সমর্থিত ২৩ দলীয় জোটের শরীক দল জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। মামুন ও ফরিদ উভয়ই ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনী মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন। মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত চূড়ান্ত প্রার্থী কে এ নিয়ে উভয় জোটের নেতাকর্মী ও ভোটারদের মধ্যে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এ আসন থেকে অন্যান্য দলের মধ্যে মনোনয়ন পত্র দলীয় ভাবে দাখিল করেছেন ২৩ দলীয় জোটের শরীক দল (জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের) মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, (আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র) ঢাকা উত্তর সিটি কপোর্রেশনের ৩৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফয়জুল মুনির চৌধুরী, (বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র) যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শরীফ আহমদ লস্কর, (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের) নুরুল আমিন, (ইসলামী ঐক্যজোটের) এমএ মতিন চৌধুরী, আহমদ আল ওয়ালী (স্বতন্ত্র) ও মো. শহীদ আহমদ চৌধুরী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। এছাড়া সিলেট-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। জোটগত ভাবে ৫ আসন থেকে চূড়ান্ত ভাবে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য মহাজোট থেকে সেলিম ও আওয়ামীলীগ সমর্থিত হাফিজ আহমদ মজুমদার কেন্দ্রীয় ভাবে নানা লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে সিলেট ৫ থেকে অপেন আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচনে লড়বেন এমন সিদ্ধান্ত হলে এ আসন মহাজোটের হাতছাড়া হতে পারে বলে নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। বর্তমান সংসদ জাপা সমর্থিত সেলিম উদ্দিন নির্বাচনীয় এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড সাধিত করায় এবং সব সময় নির্বাচনী এলাকায় সময় দেওয়ায় দলের বাহিরে সাধারন ভোটারদের কাছে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে কয়েক’শ নানা শ্রেনীর ভোটরদের উপর জরীপ চালিয়ে পাওয়া গেছে। অপর দিকে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী এলাকায় তৎপর থাকার পরও আওয়ামীলীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় মাসুক আহমদ, ড. আহমদ আল কবির, এড. মস্তাক আহমদ, ফয়জুল মুনির চৌধুরী ও আলহাজ্ব মুমিন চৌধুরী সমর্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। হঠাৎ করে আওয়ামীলীগ থেকে এ আসনের সাবেক সাংসদ হাফিজ আহমদ মজুমদার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের মধ্যে কৌতুহল বিরাজ করছে। মজুমদার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাওয়ায় তার সমর্থক নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসব বিরাজ করছে। অপর দিকে ঐক্য ফ্রন্ট থেকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসাবে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন এ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মী সমর্থকরা জানিয়েছেন, তাদের প্রার্থী মামুনুর রশিদ মামুন ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্ত প্রার্থী। আবার জামায়াতের নেতকর্মীরা জানান ফরিদ চৌধুরী ঐক্যফ্রন্টের চূড়ান্ত প্রার্থী যা ইতিম্যধ্যে জোটগত ভাবে তার নাম ৫ আসন থেকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে নির্বাচনী এলাকার বিএনপি ও সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে পুলিশ প্রতিদিন যে ভাবে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে তারা কি করে নির্বাচনী মাঠে সুবিধা করতে পারবে। বিএনপি প্রার্থী মামুন রশিদ কে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী করা হলে নির্বাচনী মাঠে তিনি সুবিধা করতে পারবেন বলে ভোটাররা মনে করেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক জোটগত ভাবে বিএনপির দলীয় মনোনয়নপত্র না পাওয়ায় তার দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করার পর কে মহাজোট ও ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থী তা চূড়ান্ত ভাবে মনোনীত হবে। তবে উভয় জোট তাদের সমর্থিত প্রার্থী নির্ধারনে ভুল করলে এ আসন থেকে যে কোন দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিবার্চনী মূল লড়াইয়ে চলে আসতে পারেন বলে সচতেন মহল মনে করেন।