গুঞ্জন থাকলে নৌকা প্রতীকে ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক দল ইসলামী ঐক্যজোট। আসন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে দরকষাকষিতে সুবিধা করতে না পারার পর এখন এককভাবে দলীয় প্রতীক ‘মিনারে’ ভোট করার পক্ষে তারা।
এই দলটি ১৯৯৯ সাল থেকেই ছিল বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ। ২০১৩ সালে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের অবরোধের সময় এই দলের নেতাকর্মীরা পালন করে মুখ্য ভূমিকা। তবে দশম সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির সঙ্গে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। ২০১৬ সালের শুরুর দিকে জোট ছেড়ে চলে যায় দলটি।
প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর নেতৃত্বাধীন দলটি এবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ অথবা ৩, কুমিল্লা-১, চট্টগ্রাম-৭, নরসিংদী-৩ এবং ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়ার আশায় ছিল দলটি।
এক সপ্তাহ আগেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং কুমিল্লা-১ আসনে ছাড় পাওয়ার কথা জানিয়ে আরও একটি আসনের জন্য দরকষাকষির কথা জানাচ্ছিলেন নেতারা। তবে আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে কুমিল্লা-১ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটের আলোচনা চালিয়ে যাওয়া জাতীয় পার্টিও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ছাড়তে নারাজ। এই অবস্থায় একটি আসনও ঐক্যজোট পাবে কি না, এ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, ‘আমরা তো মহাজোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনাও হয়নি।’
‘ইসলামী ঐক্যজোটের তো নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার কথা ছিল’-এমন প্রশ্নে নেজামী বলেন, ‘না, এটা পত্র-পত্রিকায় চাউর হয়েছে। আর এখন তো সময়ই শেষ। এখন তো আর মহাজোটের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
ঐক্যজোট নেতা জানান, তাদের প্রাথমিক তালিকায় দুই শতাধিক প্রার্থীর নাম ছিল। তবে এখন পর্যন্ত ৬১টি মনোনয়নপত্র দেয়া হয়েছে। আজ মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন সংখ্যাটা বাড়তে পারে।
জোটে ভাঙন
আশা অনুযায়ী আসনে ছাড় না পাওয়া নিয়ে ঐক্যজোটে দেখা দিয়েছে দ্বন্দ্ব। মনোমালিন্যে দলছুটও হয়েছেন কেউ কেউ। ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামে যোগ দিয়েছেন মধুপুরের পীর আব্দুল হামীদ।
মাওলানা হামীদ জানান, তিনি মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী ছিলেন। তার দাবি ছিল, মহাজোট থেকে ইসলামী ঐক্যজোটে যদি একটি আসনও দেয়া হয়, সেটা যেন তাকেই দেয়া হয়। তবে তাকে দেওয়ার সম্ভাবনা নেই-এটা নিশ্চিত হওয়ার পর ঐক্যজোট ছেড়ে যান তিনি।