কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি আওয়ামী লীগ। এর কারণ, জোটের শরিকদের মধ্যে আসন নিয়ে সমঝোতা করতে না পারা।
তবে কৌশলগত কারণে এই তালিকা প্রকাশ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রবিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিভিন্ন আসনে দলের প্রার্থীদের হাতে মনোনয়নের চিঠি দেয় আওয়ামী লীগ। তবে এটি চূড়ান্ত নয় জানিয়ে কাদের জানান, সোমবার দল ও জোটের চূড়ান্ত প্রার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।
তবে জোটের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে তালিক প্রকাশ না করে সোমবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করেন কাদের। বলেন, কৌশলগত কারণে এই তালিকা আপাতত প্রকাশ করা হচ্ছে না।
‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বলেছিলাম আজ আমরা আমাদের প্রার্থিতা জোটবদ্ধ তালিকাটি প্রকাশ করব। কিন্তু আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছি কৌশলগত বা টেকনিক্যাল কিছু কারণে। আমাদের প্রার্থী যাচাই-বাছাই যেদিন শেষ হবে তার পরের দিন আমরা সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এনে আমাদের জোটের তালিকা প্রকাশ করব।’
আগের দিন ওবায়দুল কাদের দলের মনোনয়নের চিঠি বিতরণের সময় জানিয়েছিলেন, ৭০টি আসন তারা শরিকদের জন্য রেখেছেন। তবে মনোনয়নের চিঠি গুণে দেখা যায় প্রার্থী দেয়া হয়েছে ২৪৬টি আসনে।
২০১৪ সালে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়া হয়েছিল এমন অন্তত আটটি আসনে আওয়ামী লীগ এবার প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের পটুয়াখালী-১ এবং সালমা ইসলামের ঢাকা-১ আসনও রয়েছে।
আবার ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ঘোষণা করেছে, এমন একটি আসনে মনোনয়নপত্র তুলেছেন জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদ।
আসন বণ্টনে সমঝোতা কতদূর- জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘মনোনয়ন এর নামে বানরের পিঠা ভাগ করে তো লাভ নাই। যারা যোগ্য তারাই মনোনয়ন পাবেন। কেননা আমরা যেতার জন্য নির্বাচন করি। নির্বাচনে যেতাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
গণমাধ্যমকে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘দয়া করে শোনা কথায় কান দিয়ে প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।’
কাদের আবার জানান, জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, যুক্তফ্রন্ট মিলিয়ে ৬৫ থেকে ৭০ টি আসন দেয়া হতে পারে।
‘তবে এ সংখ্যা কম বেশি হতে পারে। জাতীয় পার্টি একটি বড় শরীক দল এ কারণে তারা বেশি আসন পাবে এটাই স্বাভাবিক।’
‘মহাজোটের প্রার্থী বোঝাপড়ার মাধ্যমেই ঘোষণা করা হবে। আমরা ভুল প্রার্থিতা প্রকাশ করতে চাই না। একদম সবকিছু যাচাই বাছাই করে তালিকা প্রকাশ করতে চাই। যাতে করে আমাদের শরিক দলের সাথে আমাদের কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয়।’
বদি ও রানাকে মনোনয়ন না দিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের মনোনয়ন দেয়ার কারণ জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘বদি ও রানার ব্যাপারে সাতটি জরিপ হয়েছে। সে সাতটি জরিপেই তাদের জনপ্রিয়তার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু তাদের ব্যাপারে যেহেতু বিতর্ক আছে আমরা সে দিকটি বিবেচনা করে তাদের মনোনয়ন দেইনি।’
‘আমরা তাদের পরিবারের যে দুইজনকে মনোনয়ন দিয়েছি তাদের কারো বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ নেই। তাদের পরিবারের কারো বিরুদ্ধে বিতর্কের কারণে তারা নির্বাচন করতে পারবে না এটা কেমন কথা?’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ঢাকা-১ আসনে মনোনয়ন পাওয়া সালমান এফ রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল ইসলাম নওফেল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।