স্পোর্টস ডেস্ক :
দেখতে দেখতে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের আঠারো বছর হয়ে গেল। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ যেন সেই পুরনো গোলকধাঁধাতেই আটকে থাকল। হঠাৎ হঠাৎ করে জ্বলে উঠছে দল। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের যে মেজাজ তা যেন এখনও রপ্ত করতেই পারছে না দল। উনিশতম বছরে পা দিয়েও জিম্বাবুইয়ের কাছে সিরিজ হারের পরিস্থিতিতে পড়ে আছে বাংলাদেশ। আজ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। টেস্টটি হারলে কিংবা ড্র করলেই যে সিরিজ হার হয়ে যাবে বাংলাদেশের। ম্যাচটি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে এই আঠারোতম বছরটিতে বাংলাদেশ আসলে অনেক বিপদে পড়েছে। গত বছরটিও দারুণ কেটেছে। কিন্তু আঠারোতম বছরে এসে জয়তো নেই-ই, উল্টো জিম্বাবুইয়ের মতো দলের কাছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট হেরে বসেছে। তাও আবার ১৫১ রানে হার হয়েছে। এমনই অবস্থা হয়েছে বছরটিতে শুধু হারই নিয়তি হয়েছে। গত বছর যেখানে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারানো গেছে। শ্রীলঙ্কার মতো দলকে হারানো গেছে। সেখানে এ বছর একটি ম্যাচেও জেতা যায়নি। উল্টো টানা চার টেস্টে হার হয়েছে। সর্বশেষ ৮ ইনিংসেতো বাংলাদেশ ২০০ রানের কোন দলীয় ইনিংসই গড়তে পারেনি। কি কঠিন অবস্থায় এখন পড়েছে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট। সব দলই সামনে এগিয়ে গেছে। সময় কাজে লাগিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এই ১৮ বছরে পিছিয়েই থেকেছে। ১০৯ টেস্ট খেলে ৮৩ হারের বিপরীতে ১০ জয় মিলেছে। ড্র করেছে ১৬ টেস্ট।
প্রথম ১৮ বছরে সব দলের হিসেবে বাংলাদেশেরই সবচেয়ে বাজে ফল হয়েছে। এই বাজে ফল থেকে এখন বের হওয়ার পথ খুঁজতে হবে। নাহলে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে যে বরাবরই সমালোচনা হয়েছে। তা আবার শুরু হবে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট যে করেই হোক বাংলাদেশকে জিততে হবে। নাহলে ১৭ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতে নেবে বাংলাদেশ। ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে জিম্বাবুইয়ের কাছে টেস্ট সিরিজ হারবে বাংলাদেশ। লজ্জা প্রথম টেস্ট হারেই মিলেছে। যদি মিরপুর টেস্টও না জেতা যায়, তাহলে সম্মানই যাবে। যে গৌরব নিয়ে ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করা গেছে, সেই গৌরব টেস্ট সিরিজ হারলে আর পুঁজিতে জমা থাকবে না।
জিম্বাবুইয়ের কাছে দেশের মাটিতে ১৭ বছর পর টেস্ট হেরেছে বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে ১৭ বছর পর টেস্ট জয়ের সঙ্গে এখন সিরিজ জেতার আশাও করছে জিম্বাবুইয়ে। মিরপুর স্টেডিয়ামের উইকেট আনপ্রেডিক্টেবল। এ উইকেট নিয়ে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। তবে এটাও ঠিক, উইকেটে বল লো হয়ে আসে, স্লো। তাতে স্পিনই ভরসা। কিন্তু সিলেট টেস্টের মতো এই টেস্টেও ব্যাটসম্যানদেরই যা করার করতে হবে। জিততে হলে ব্যাটসম্যানদেরই হাল ধরতে হবে। যা বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা দেখাতে পারছেন না।
প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১৪৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৯ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের হাল হকিকত। এখন এ থেকে দল মুক্ত হতে পারলেই হয়। তাহলেই সিরিজ ১-০ থেকে ১-১ হওয়া সম্ভব। না জিতলেই সিরিজ জিম্বাবুইয়ে নিজেদের করে নেবে। অসম চাপ নিয়ে বাংলাদেশ দল খেলতে নামবে। বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা কি এবার পারবেন জিতে টেস্ট সিরিজ ড্র করে নিতে?
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আশাবাদী। তিনি বলেছেন, ‘সবার ব্যক্তিগত বিশ্বাসের জায়গা থাকে। প্লেয়াররা নিজে থেকেও চিন্তা করে, দলও চিন্তা করে। আমার মনে হয় আমাদের দেশের প্লেয়াররা অনেক হৃদয় দিয়ে খেলে। যে তার দেশের জন্য খেলে সবসময় ১০০ ভাগ দিয়েই খেলে। এই (মিরপুর) টেস্টে আমরা ১২০ ভাগ দিয়ে খেলব। সত্যি কথা বলতে কি পরাজয়ের কথা কেউ চিন্তাও করেনি। আর আমরা ইতিবাচকই চিন্তা করছি। কারণ আপনি যদি নেতিবাচক চিন্তা বেশি করেন তাহলে হয়তো আটকে যেতে পারেন। সুতরাং আমরা নিজেদের ইতিবাচক রাখার চেষ্টা করার পাশাপাশি ইতিবাচক চিন্তাও করছি যেন আমরা ভাল ক্রিকেট খেলে ম্যাচটি জিততে পারি।’ সেই জয় এখন মিললেই হয়।