ওসমানী বিমাবন্দর সড়কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী নিহত, ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেল অবুঝ দুই সন্তান

276
ওসমানী বিমানবন্দর সড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পিতা ও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া দু’সন্তান। ছবি- রেজা রুবেল

স্টাফ রিপোর্টার :
ওসমানী বিমানবন্দর সড়কে বেড়াতে গিয়ে ট্যাংক লরির সাথে সিএনজি অটোরিক্সার সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী নিহত ও তাদের ২ সন্তান এবং অটোরিক্সা চালক গুরুতর হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে ওই সড়কের মালনীছড়া চা বাগান এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হচ্ছেন- গোলাপগঞ্জের দক্ষিণ ভাদেশ্বর রাজাপুর গ্রামের এস এম ইসলাম মঈনের পুত্র কায়ছান চৌধুরী (৪২) ও তার স্ত্রী রাফিয়া সুলতানা চৌধুরী (৩৫)। নিহতরা নগরীর কাষ্টঘর এলাকার ভাদেশ্বর হাউজের বাসিন্দা। আহতরা হচ্ছে- নিহতদের ২ সন্তান মেহনাজ চৌধুরী (৮) ও শেহজাদ আহমদ চৌধুরী (৫) এবং অটোরিক্সা চালক শেখর।
নিহত ফয়সাল চৌধুরীর চাচাতো ভাই ফাহিম চৌধুরী জানান, সম্প্রতি আমেরিকার ভিসা পেয়েছিলেন কায়ছান। এ মাসেই তার সপরিবারে আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিলো। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর আহত সিএনজি চালককে হাসপাতালে আনা হলেও সে বর্তমানে লাপাত্তা রয়েছে। কায়ছান চৌধুরীর দুই সন্তানকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বিমানবন্দর এলাকায় (সিলেট-থ-১১-৫৭১৬) নং সিএনজি অটোরিক্সা যোগে বেড়াতে গিয়েছিলেন কায়ছান চৌধুরী। সন্ধ্যার দিকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর সিএনজি চালিত অটোরিক্সার সাথে কোম্পানীগঞ্জ থেকে আসা একটি ট্যাংক লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। এতে গুরুতর আহত হন ফয়সাল চৌধুরী, তার স্ত্রী রাফিয়া সুলতানা চৌধুরী, ২ সন্তান মেহনাজ চৌধুরী ও শেহজাদ আহমদ চৌধুরী এবং অটোরিক্সা চালক শেখর। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ফয়সাল ও তার স্ত্রী রাফিয়া সুলতানা মারা যান। তবে ২ সন্তান ও চালক শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পদ্মা অয়েল কোম্পাীর ঘাতক ট্যাংক লরিসহ চালক আলমগীরকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেন। দুর্ঘটনার পর পর এয়ারপোর্ট সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দেয়।
নিহতদের স্বজন সাংবাদিক মাহফুজ আহমদ চৌধুরী জানান, সোমবার বিকেলে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বিমানবন্দর এলাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন ওই দম্পতি। সন্ধ্যায় মালনীছড়া চা বাগানের সামনে তাদের অটোরিকশাকে বিপরীত দিক থেকে আসা পদ্মা ওয়েল কোম্পানীর একটি তেলবাহী লরি তাদের বহনকারী সিএনজি অটোরিক্সাকে ধাক্কা দিলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন জানান, সিএনজি চালিত অটোরিক্সার সাথে কোম্পানীগঞ্জ থেকে আসা একটি ট্যাংক লরির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অটোরিক্সার যাত্রী স্বামী-স্ত্রী ও তাদের ২ সন্তান এবং অটোরিক্সা চালক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ওসমানী হাসপাতালে নেয়ার পর স্বামী-স্ত্রী মারা যান এবং অপর আহতরা ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনার পর পর পদ্মা অয়েল কোম্পাীর ঘাতক ট্যাংক লরিসহ চালক আলমগীরকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছে। বর্তমানে সে থানা হেফাজতে রয়েছে।