স্টাফ রিপোর্টার :
বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে আগামী ২০৪০ সালের পুর্বেই বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এমপি। বৃহস্পতিবার জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেম লিঃ এর সিবিএ এর অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হবার পর আমরা যখন ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছি তখনই আমাদের উপর আঘাত এসেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি বয়ে এনেছিল। এরপর প্রায় ১৬ বছর সামারিক শাসনে আমাদেরকে আরো পশ্চাৎমুখী করে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে’ আমরা পিছিয়ে থাকবো না। এ কথাই সত্যি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ। আরো পাঁচটি বছর যদি এই নেতৃত্ব বজায় থাকে, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকে, তাহলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে উন্নত ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দক্ষ শ্রমিক আর কৃষকের কারণে আজ আমরা অর্থনীতির সবকটি সূচকে এগিয়ে। তিনি বাংলাদেশের তৈরি পোষাক খাতের শ্রমিকদের দৃষ্টান্ত টেনে এনে বলেন, আমাদের এই খাতে শ্রমিকরা অত্যন্ত দক্ষ। আমাদের শুধু তুলা আমদানি করতে হয়, এর থেকে কাপড়-সূতা তারাই তৈরি করে নেয়। আজ আমরা তৈরি পোষাকে বিশ্বে দ্বিতীয়। তিনি বলেন, এখন আমরা সঠিক পথেই আছি। আমাদের অর্থনীতি এখন আগের চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ। আমাদের যে ভিশন ছিলো ২০২১, ইতিমধ্যেই আমরা তা অর্জনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। অর্থমন্ত্রী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগকে পুননির্বাচিত করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত একে মোমেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, জ্বালানিখাতে বর্তমান সরকারের দূরদর্শী পরিকল্পনার কারণে দেশের অর্থনীতি আজ সমৃদ্ধ। আমাদের আর পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। আবারো এই সরকারকে নির্বাচিত করে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
জালালাবাদ গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌ. এহসানুল হক পাটোয়ারী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে জ্বালানি নিরাপত্তার উপর। আমাদের উৎপাদিত গ্যাস আমাদের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়, এজন্য জ্বালানি সংকট নিরসনে এলএনজি আমদানি করা হয়েছে। যা ইতিমধ্যে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানিতে বিতরণ করা হচ্ছে। এতে চট্টগ্রামে শিল্প ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। ধীরে ধীরে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে সারাদেশে বিতরণ করা হবে। এতে সিলেটসহ অন্যান্য জায়গায় শিল্প বিকশিত হবে। তবে এই উচ্চ মূল্যের গ্যাস যাথে অপচয় নাহয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
জালালাবাদ গ্যাস সিবিএ সভাপতি মুরুলী সিংহ এর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আশফাক আহমদ, জাতীয় শ্রমিকলীগের সহসভাপতি প্রকৌ. এজাজুল হক এজাজ জালালবাদ গ্যাস সিবিএর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, যুগ্ম সম্পাদক ফজলুল বারী প্রমুখ।
সিভিল সার্জন ভবনসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা উদ্বোধন করলেন অর্থমন্ত্রী : সিলেট বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ও সিলেটের সিভিল সার্জন কার্যালয় উদ্বোধন করলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত সিলেট বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ও সিভিল সার্জন কার্যালয় ভবনের ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সিভিল সার্জন অফিস প্রাঙ্গণে পৌঁছলে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা। অর্থমন্ত্রী বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে এবং ফিতা কেটে সিভিল সার্জন অফিস সহ ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়া কানাইঘাট উপজেলা কমপ্লেক্স, জকিগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স এবং বিশ্বনাথ উপজেলা কমপ্লেক্সের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এর মধ্যে সিলেট সিভিল সার্জন অফিস ৭তলা ভিত্তির ওপর ৬তলা ভবন, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ এবং বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্যকে কমপ্লেক্সের ৫ তলা ভিত্তির ওপর ৩ তলা ভবনের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী। উল্লেখ্য, কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে ১৬ কোটি ৩২ লক্ষ ৮৩ হাজার, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে ৬ কোটি ৪৯ লক্ষ ২৪ হাজার, বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণে ১১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার নির্মিত ভবনগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী, সিলেট বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. সোহরাওয়ার্দী, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা, হিমাংশু লাল রায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার আলী, নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম হাসান উজ জামান, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় অফিস সহকারী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান এম. গৌছ আহমদ চৌধুরী, সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম পাঠান, উপসহকারী প্রকৌশলী মনিরুল হক, কানাইঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান, ২নং লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউপির চেয়ারম্যান জেমস লিও ফারগুসন নানকা, সাতবাঁক ইউপির চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সিভিল সার্জন কার্যালয়, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ এবং বিশ্বনাথ উপজেলা কমপ্লেক্সের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।