কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী ১ নভেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা। এই পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবং প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে মোট ১৩টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে আগেই একাধিক প্রশ্ন সেট পাঠানো হবে, তবে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্তভাবে আয়োজন করতে জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলাসংক্রান্ত কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে। এতে আন্তঃমন্ত্রণালয়সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস রোধে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে সব প্রশ্ন সেট পাঠানো হবে। তবে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে প্রতি জেলায় কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন নির্বাচন করা হবে। এতে করে আর প্রশ্নফাঁস হওয়ায় আশঙ্কা থাকবে না।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, পরীক্ষা চলাকালে কেবল কেন্দ্র সচিব ক্যামেরা ছাড়া মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন। তবে পরীক্ষাকক্ষে মোবাইল ফোনসহ প্রবেশ করতে পারবেন না। তার বাইরে আর কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।
ট্রেজারি বা থানা হতে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা/শিক্ষক/কর্মচারীরা ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাচযুক্ত গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না। ট্রেজারিতে রক্ষিত প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর তিনদিন পূর্বে দিনভিত্তিক ও সেটভিত্তিক সটিং করে সিকিউরিটি খামে সংরক্ষণ করতে হবে। জেলার ক্ষেত্রে ট্রেজারি এবং উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলাস্থ থানা লকারে প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক সংরক্ষণ করত হবে। পরীক্ষার দিন সিকিউরিটি খামে সংরক্ষিত প্রশ্নপত্র প্যাকেটের সব সেট ট্রেজারি/থানা হতে ট্যাগ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে কেন্দ্রে পৌঁছাতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে সংশ্লিষ্ট বোর্ড হতে সেট ব্যবহারের নির্দেশনা মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাওয়ার পর নির্ধারিত সেটের সিকিউরিটি খাম খুলতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র নেয়ার সব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসসংক্রান্ত গুজব কিংবা একাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর নজরদারি জোরদার করা হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষাদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা ডিজিটাল কোনো ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে না। প্রতিষ্ঠান প্রধান/শিক্ষকরা কোনোভাবে এ পরীক্ষায় বেআইনি কোনো কাজ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং প্রয়োজনে পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করা হতে পারে বলে ১৩টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজন করতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এবার জেএসসি-জেডিসি এবং প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় মোট ২৬ লাখ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। নকল, প্রশ্নফাঁস রোধে যা যা করা দরকার আমরা তাই করছি। এবার প্রশ্নফাঁস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
মন্ত্রী বলেন, এবার গুজব করে কেউ পার পাবে না, অভিভাবদেরও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সকলকে সহযোগিতার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।