কাজিরবাজার ডেস্ক :
কোন অবস্থাতেই জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করবে না বিএনপি। কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও লন্ডন প্রবাসী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ২০ দলীয় জোটে জামায়াতকে রেখেই বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্য গঠনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে দলটি। ২০ দলীয় জোটের সর্বশেষ বৈঠকেও বিএনপির পক্ষ থেকে জোটসঙ্গীদের এ অবস্থানের কথা জানানো হয়। এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে অধ্যাপক বি চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট ও ড. কামাল হোসেনের ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৭ দফা দাবি ও দেশ পরিচালনার জন্য ১২ দফা প্রস্তাব পেশ করবে বিএনপি।
সূত্রমতে, বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠন করতে গিয়ে বার বার হোচট খাওয়ার পর এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও লন্ডন প্রবাসী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মতামত নেন দলের ক’জন সিনিয়র নেতা। তারা ২০ দলীয় জোট ঠিক রেখেই জাতীয় ঐক্য গঠন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোকে নিয়ে বৈঠক করেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। এ সময় নির্বাচন সামনে রেখে বৃহত্তর জোট গঠনে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরা হয়।
তবে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী নেতারা জামায়াত সম্পর্কে নেতিবাচব বক্তব্য রাখার পরও বিএনপির পক্ষ থেকে কোন প্রতিবাদ না করায় বৈঠকে উপস্থিত জামায়াতের প্রতিনিধি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে রবিবার রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে রবিবার হোক আর যখনই হোক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ওই সমাবেশে বিপুল সংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে বড় ধরনের শোডাউন করতে চায় বিএনপি। এই সমাবেশে জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের শরিকদেরও উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এই সমাবেশ থেকেই বিএনপি নির্বাচনকে সামনে রেখে অধ্যাপক বি চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট ও ড. কামাল হোসেনের ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৭ দফা দাবি ও দেশ পরিচালনার জন্য ১২ দফা প্রস্তাব পেশ করবে। ৭ দফা দাবির মধ্যে থাকবে, খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতাদের মুক্তি, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সংসদ ভেঙ্গে দেয়া, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার বিধান নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালে সেনা মোতায়েন ইত্যাদি। আর ১২ দফা প্রস্তাবের মধ্যে থাকবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রশাসন দলীয়করণ না করা, রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা, সব প্রতিহিংসার রাজনীতির অবসানে জাতীয় ঐকমত্য গঠন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি প্রতিরোধে দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথভাবে সংস্কার ও কার্যকর করা, সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করা, সবার সাঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় এ মূলনীতি অনুসরণ করে স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করা, ইত্যাদি।