ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে সংসদ নির্বাচন

62

কাজিরবাজার ডেস্ক :
এ বছর ডিসেম্বরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতেই একাদশ জাতীয় নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলা হয় নির্বাচনী রেফারি। নির্বাচনের খেলায় কে জিতবে, কে হারবে সেই ফলটাই শুধু কমিশন ঘোষণা করবে। নির্বাচন হবে শৃঙ্খলার মধ্যে ও সুশৃঙ্খলভাবে। নির্বাচন সার্থক, গ্রহণযোগ্য করার জন্য নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর বড় দায়িত্ব রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, দীর্ঘদিনের নির্বাচন পরিচালনা ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা রয়েছে কর্মকর্তাদের। সেই অভিজ্ঞতা নির্বাচনী কাজে লাগাতে হবে।
শনিবার আগারগাঁও নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ইভিএম নিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের এক প্রশিক্ষণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি উল্লেখ করেন, আইনী ভিত্তি পেলে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। তবে যতটুকু পারব ততটুকুই ব্যবহার করব। ব্যবহারের আগে সেটি ত্র“টিমুক্ত কি না সেটি নিশ্চিত করতে হবে। ইভিএম চাপিয়ে দেয়া যাবে না উল্লেখ করেন।
এ সময় তিনি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে মানুষের মনের সন্দেহ দূর করতে প্রয়োজনীয় কর্মসূচী নিতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। বলেন, কমিশন প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। যে ইভিএম আছে সেটা যদি ব্যবহার উপযোগী হয়, ত্রুটি না থাকে তবে তখনই ইভিএম ব্যবহার হবে। ইভিএম নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ থাকবে, প্রশ্ন থাকবে। ভোটারদের সেই সন্দেহ প্রশ্ন দূর করার চেষ্টা করতে হবে। এই যন্ত্র ব্যবহার করলে ভোটগ্রহণ সহজ হবে, কষ্ট কমে যাবে, ভোট গণনা সহজ হবে এবং ভোট কারচুপি হবে না উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি ভোট কোথায় দিলেন, কীভাবে দিলেন, সেটা জানার আগ্রহ তার থাকবে না, সেটা হতেই পারে না। ইভিএম কীভাবে ব্যবহার করা হবে, সেটা জানা না থাকলে তো মানুষের মনে প্রশ্ন থেকেই যাবে। আমরা ইভিএম নিয়ে গেলাম। কিন্তু ভোটার সেটা ব্যবহার করলেন না। এর দোষ কিন্তু ভোটারের ওপর চাপানো যাবে না। ইভিএমের কারিগরি দিক সম্পর্কে ধারণা না থাকলে যন্ত্রটি সম্পর্কে তাদের প্রশ্ন থেকেই যাবে। সুতরাং ইভিএম কী, এটার উপকারিতা কী, সে বিষয়ে দেশব্যাপী প্রচার চালাতে হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতাদের আগে ইভিএম সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে। জানার পর মন্তব্য করলে ভাল হয়। আমাদের অবশ্যই আধুনিক প্রযুক্তির দিকে ধাবিত হতে হবে। নির্বাচনের ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। ম্যানুয়াল ভোটিংয়ে কত রকমের অসুবিধা আপনারা জানেন। ২৫-৩০ রকমের ফরম এনভেলপ ছাপাতে হয়। ইভিএম হলে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে রেজাল্ট পাওয়া যায়। একজনের ভোট, আরেকজন দিতে পারে না। রাতে ব্যালট বক্স পাহারা দিতে হয় না। ইভিএম হলে কী কী উপকার হবে, কী কী হবে, কী কী হবে না। এগুলো মানুষকে জানাতে হবে। যখন ভোটার জানবে তখনই শুধু তারা এর ওপর আস্থা রাখবে।
ইভিএমের কারিগরি বিষয়ে জনসাধারণকে পরিপূর্ণভাবে ধারণা দেয়ার বিষয়ে জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমরা ইভিএম নিয়ে গেলাম, কিন্তু মানুষ ব্যবহার করল না। তখন তাদের ওপর দোষ চাপালে হবে না। এটা ব্যক্তিগত বিষয় নয়, জনসাধারণকে নিয়ে এ বিষয় উল্লেখ করেন। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ইভিএম ব্যবহারে আপনারা যদি সফল হন, আপনারা যদি ইভিএম ব্যবহারের যোগ্যতা অর্জন করেন এবং ইভিএম যদি আইনগত ভিত্তি পায়, তবেই ইভিএম ব্যবহার করা হবে।