কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জনবল সংকটের কারণে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাহ হচ্ছে। এ উপজেলায় ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে পাঁচজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র একজন। ফলে বিদ্যালয় মনিটরিং, সময়মতো শিক্ষকদের উপস্থিতি, পাঠদান ও শিক্ষার মান উন্নয়নসহ সার্বিক বিষয়ে খবরা-খবর নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলিয়ে ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয় দেখভালের দায়িত্বে উপজেলা শিক্ষা অফিসে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার পাঁচটি পদ থাকলেও বর্তমানে আছেন মাত্র একজন। একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দিয়ে নিয়মিত পরিদর্শন, খোঁজ-খবর নেওয়া কোনোমতেই সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষকদের সময়মতো উপস্থিতি, শিক্ষার্থীদের পাঠদান, মনিটরিং ও দেখভালের দায়িত্ব উপজেলা শিক্ষা অফিসের থাকলেও চারটি পদ শূন্য থাকায় সার্বিক কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ছে। অফিসিয়াল নানা কার্যক্রম ও সরকারি বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের পর বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় থাকছে না।
সরেজমিনে কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয়সমূহে চাহিদামতো শিক্ষক না থাকা একটি বড় সমস্যা। সাত জনের স্থলে আছেন চার থেকে পাঁচজন শিক্ষক। তা ছাড়া কয়েকটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য হওয়ায় ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। যদিও সম্প্রতি চলতি দায়িত্ব দিয়ে ২০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদায়ন করা হয়েছে। অনেক বিদ্যালয়ে যথাসময়ে শিক্ষকদের উপস্থিতি নেই। শিক্ষক সংগঠনসমূহের মধ্যে রয়েছে নানা গ্র“পিং। সব মিলিয়ে উপজেলার সার্বিক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, উপজেলার ১৫২টি বিদ্যালয়ের জন্য যেখানে পাঁচজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা প্রয়োজন সেখানে একজন মাত্র সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দিয়েই দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। তারপরও দাপ্তরিক নানা কার্যক্রমের পাশাপাশি বিদ্যালয়সমূহ দেখভাল করা হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, আসলে একজন শিক্ষা কর্মকর্তা ও একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার পক্ষে সকল দায়দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার। তারপরও পাঠদানসহ শিক্ষার উন্নয়নে যথাসাধ্য কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি কমলগঞ্জে কয়েকটি বিদ্যালয়ে বন্ধু শিক্ষক দিয়ে পাঠদানে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। তাই নিজেও কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিক্ষার মানোন্নয়নে বন্ধু শিক্ষকের প্রচলন শুরু করতে শিক্ষকদের পরামর্শ প্রদান করেছি।