ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে সিলেটের প্রতিবন্ধীদের চাকুরীর সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিল সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। ১৮ আগষ্ট শনিবার নগরীর আমানউল্লাহ্ কনভেনশন সেন্টারে প্রতিবন্ধীদের চাকুরীমেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিবন্ধীর চাকুরী প্রাপ্তির পাশাপাশি আরো শতাধিক প্রতিবন্ধীর চাকুরীর প্রতিশ্রতি দিয়েছে মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
সামাজিক দায়বদ্ধতা ও অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সাথে এই চাকুরীমেলা যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ বিজনেস এন্ড ডিজেবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন), বাংলাদেশ এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ) ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)।
মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ বলেন, এই চাকুরীমেলা আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানে আমাদের চিন্তা-ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছেন আয়োজকরা। শোকের এই মাসে এরকম একটি মহৎ কাজের সাথে জড়িত হতে পেরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নির্দেশ বাস্তবায়নেই কাজ করছি। তিনি বলেন, দেশের জনসংখ্যার ৯ শতাংশ প্রতিবন্ধী। এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে দেশের উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে কাজ করলে প্রতিবন্ধীদের সমস্যা সমাধান করলে খুব বেশী বেগ পেতে হবে না।
এমপি ইমরান আহমদ বলেন, আইটি সেক্টরে বিশেষ করে কোম্পানীগঞ্জে গড়ে উঠা ইলেক্ট্রনিক সিটিতে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আমাদের অর্থমন্ত্রী ও অর্থ প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতায় উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বাজেটেও প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর দাবী জানান। প্রতিবন্ধীদের চাকুরীমেলার আয়োজকদের তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরণের আয়োজন আমার কাছে ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে। তিনি প্রতিবন্ধীদের চাকুরী প্রদানে যেসব প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে তাদেরকেও ধন্যবাদ জানান।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ এর সভাপতিত্বে সিলেটে প্রথমবারের মতো আয়োজিত প্রতিবন্ধীদের চাকুরী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান, বাংলাদেশ এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি কামরান টি রহমান ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির কো-চেয়ার সালাউদ্দিন কাশেম খান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, শোককে শক্তিতে পরিণত করতে শোকের মাসে এই ধরণের মেলা বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এই মেলা শক্তি ও জাগরণের প্রতীক। প্রতিবন্ধীদের মূল ধারায় নিয়ে আসতে পারাটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় সফলতা।
অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের বি-সেপ প্রজেক্টের ডিজেবিলিটি কনসালটেন্ট অ্যালবার্ট মোল্লা। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিজনেস এন্ড ডিজেবিলিটি নেটওয়ার্কের কো-চেয়ার মোর্তেজা আর খান, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অফিসার মোহাম্মদ নুরজ্জামান, জালালাবাদ প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্র ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান মাহবুব সোবহানী চৌধুরী, সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি এমদাদ হোসেন, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহছান চৌধুরী, ফুলকলি’র উপ-মহাব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন খন্দকার, লুব-রিফ বাংলাদেশ লিঃ এর পরিচালক সালাউদ্দিন ইউসুফ, মেলায় চাকুরীপ্রাপ্ত প্রতিবন্ধীদের পক্ষে পল্লব সাহা ও আব্দুস সালাম বাবুল। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুদ আহমদ চৌধুরী। বিজ্ঞপ্তি