আতিকুর রহমান মাহমুদ ছাতক থেকে :
ছাতক উপজেলায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬৬ বছর পরও এখানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহল। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনই করা হয় না।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৬টি মাদরাসাসহ ১০-১৫টি বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। ১৬৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে হাতে গণা দু’একটিতে শহীদ মিনার থাকলেও প্রায় দেড় শতাধিক বিদ্যালয়ে নেই। এছাড়া ১৬টি মাদরাসার মধ্যে কোনটিতেই নেই শহীদ মিনার। মুনিরজ্ঞাতি উচ্চ বিদ্যালয়, শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, একতা উচ্চ বিদ্যালয়, জালালাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়, ছাতক ইউনিয়ন এসইএসডিপি মডেল হাই স্কুল, হাফিজ আবদুল গণি তালুকদার নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বড়কাপন আটগ্রাম নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাজী রইছ আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও সি বি পি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা জানান এসব বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনোটিতে অস্থায়ীভাবে বাঁশ, কাঠ ও কলাগাছ দিয়ে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার তৈরী করে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে আসছে। আবার কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিলের মধ্যে দিয়ে এসব দিবস পালন করা হয়। একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হেনা জানান, ভাষার মাস ফেব্র“য়ারি এলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছরের ২০ ফেব্র“য়ারি বাঁশ দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনার তৈরি করে। পরদিন ২১ ফেব্র“য়ারি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে বাঁশ দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। হাফিজ আবদুল গণি তালুকদার নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র দত্ত বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার না থাকায় মাতৃভাষা দিবস এলে তারা গোবিন্দগঞ্জ আবদুল হক সৃতি ডিগ্রি কলেজে গিয়ে দিবসটি উদযাপন করেন। জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদির জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার বর্তমানে ভাঙ্গা অবস্থায় আছে। ভাষা দিবসে তারা অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরী করে দিবস পালন করে থাকেন।
ছাতক জালালিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল আহাদ জানান, ভূমি সল্পতা জন্য তাদের প্রতিষ্টানে শহিদ মিনার তৈরি এখন সম্ভব হয়নি, তবে কিছু দিনের মধ্যেই শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র দাস জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পুলিন চন্দ্র রায় ভারতে সফররত থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহের উল্লাহ জনান, সারা দেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। সরকারিভাবে কোন অনুদান না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।