কামরানের ৩৩ দফা ইশতেহার ঘোষণা ॥ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে সিলেট

70

স্টাফ রিপোর্টার :
‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে সিলেট’ এই শ্লোগানে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ৩৩ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
বুধবার দুপুরে নগরীর একটি হোটেলের হলরুমে জনকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি ইশতেহার ঘোষণা করেন। ইশতেহারে নগরীর বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি ইশতেহারে সিলেটকে প্রথম ডিজিটাল নগরী হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা করেন।
এছাড়াও যুব সমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষায় মাদকমুক্ত সিলেট নগরী গড়ে তুলতে ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বারোপ করেন।
কামরানের ইশতিহারে গুরুত্বের সাথে স্থান পায় নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ছড়া-খাল উদ্ধার ও খনন, সুরমা নদী খনন। নাগরিক সুযোগ সুবিধার মধ্যে রয়েছে যানজটমুক্ত সিলেট নগরী গড়ে তোলা, লিংক রোড স্থাপন, ফুটপাত ও হকারমুক্ত করা ও উচ্ছেদকৃত হকারদের পুনর্বাসন, গ্যাস সংযোগ, শতভাগ বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, নারী-পুরুষের আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থা, আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রতিটি ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ, নতুন কর আরোপ না করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত করা, প্রবাসীদের জন্য নগরভবনে হেল্প ডেস্ক।
এছাড়া বিশ্বমানের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, বর্তমান কারাগারের জায়গায় আধুনিক নগরপার্ক নির্মাণ, টেমসের আদলে সুরমার দুইপার আধুনিকায়ন, খেলার মাঠ, দীঘি, টিলা সুরক্ষা, অত্যাধুনিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ, কারিগরি শিক্ষা ও উন্নত প্রশিক্ষণ, শিশুদের সুরক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও স্বাবলম্বী করে তোলার উদ্যোগ, সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন, সিলেট নগরকে গ্রীণ সিটি হিসাবে গড়ে তোলা, মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা, প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা স্থাপনের বিষয় তুলে ধরেন তার ঘোষিত ইশতেহারে।
বদর উদ্দিন কামরান ইশতেহার ঘোষণার শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্ট নিহত শহীদ, জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার বক্তব্যে বলেন, কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে বিশে^র দরবারে মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের যে ভিশন ২০২১ ঘোষণা করেছেন তা আজ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা।
বদর উদ্দিন কামরান বলেন, উন্নয়নের গণজোয়ার সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধু কন্যা, আমার নেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন। আমি সেই স্বপ্ন লালন করে আসন্ন সিলেট সিটি নির্বাচনে দলের পক্ষে মেয়র প্রার্থী হয়েছি। তিনি নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অতীতেও আপনাদের সেবায় নিয়োজিত ছিলাম। আপনাদের সেবক হিসেবে দলমত নির্বিশেষ সবসময় সকলের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। জীবনের শেষ সময়েও নগরবাসীর সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই। আপনারা আমাকে একজন সেবক হিসেবে কাজ করার সুযোগ করে দেবেন।
তিনি বলেন, এটা হয়তো আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। আগামী নির্বাচনে হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ হবে না। আমি বিশ^াস করি এই নগরের মানুষ আমাকে এ নির্বাচনে যথাযথ মূল্যায়ন করবেন।
ইশতিহার ঘোষণার আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বদর উদ্দিন কামরানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আহমদ হোসেন, এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুদীপ রায় নন্দী, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক শফিকুর রহমান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান ফারুক, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, এডভোকেট শাহ ফরিদ আহমদ, মহানগর সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন, যুুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুল আনোয়ার আলাওর, বিজিত চৌধুরী, অধ্যাপক জাকির হোসেন, জেলার যুগ্ম সম্পাদক সুজাত আলী রফিক, এডভোকেট নাসির হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল, এডভোকেট মোশাহিদ আলী, মোহাম্মদ আলী দুলাল, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, এটিএম হাসান জেবুল, সাইফুল আলম রুহেল, এডভোকেট শামসুল ইসলাম, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, এডভোকেট রনজিত সরকার, জুবের খান, শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক এজাজ, জেলার সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, মহানগর সভাপতি শাহরিয়ার কবির সেলিম, সাধারণ সম্পাদক রুমেন, যুবলীগের মহানগর আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি, মুশফিক জায়গীরদার প্রমুখ। পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই এর পরিচালক সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিটের কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এডভোকেট রুহুল আনাম মিন্টু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম সেলিম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত প্রমুখসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।